v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-14 17:33:36    
ভারত সরকারের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

cri

    ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত ১৩ জুলাই নয়াদিল্লীতে গণ মাধ্যমকে বলেছেন, বামপন্থী রাজনৈতিক দল ২২ জুলাই অনুষ্ঠেয় সরকারের প্রতি আস্থা ভোটে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করবে। তবে বাম দলগুলো বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবে কিনা, এ সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

    বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির বিজেপি অনুরোধ অনুযায়ী, ২১ ও ২২ জুলাই ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার বিশেষ অধিবেশন আয়োজিত হবে। অধিবেশনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন যুক্ত প্রগতিশীল জোট বা ইউপিএ সরকার প্রশাসনের বৈধ মর্যাদা প্রশ্নে ভোটাভুটি হবে।

    গত বছর স্বাক্ষরিত ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক পারমাণবিক চুক্তি নিয়েই বর্তমানে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। গত বছর ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তির কথা প্রকাশ হওয়ার পর ভারত সরকার তুমুল অভ্যন্তরীণ বিরোধিতার মুখে পড়ে। বাম দল ও বিরোধী দলগুলো মনে করে, চুক্তিটি ভারতের স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতিতে হস্তক্ষেপের শামিল। এ চুক্তি ভারতের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। ফলে তারা চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে। ক্ষমতাসীন জোট সরকার ও বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে এই বিষয় নিয়ে বহু বার আলোচনা হয়। তবে তাতে মতভেদ দূর হয় নি। চারটি বাম দল ৯ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ইউপিএ সরকারের ওপর থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর বিজেপি বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে আলোচনা করার উদ্দেশ্যে লোকসভার বিশেষ অধিবেশন আয়োজনের অনুরোধ জানায়।

    বাম দলগুলো সমর্থন প্রত্যাহার করার পর কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ভারতের পার্লামেন্টে হঠাত্ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনুযায়ী, যে কোন রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক জোট সরকারের বৈধ মর্যাদার জন্য পালার্মেন্টের নিম্ন কক্ষের অর্ধেকের চেয়ে একটি বেশি আসন থাকতে হবে। ভারতের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় মোট আসন সংখ্যা ৫৪৫টি। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট দুটি আসন নির্ধারণ করেন। ফলে ক্ষমতাসীন পার্টি ন্যূনতম ২৭২টি আসন পেলেই যেমন প্রেসিডেন্ট তাদেরকে সরকার গঠনের আহবান জানান।

    বর্তমানে লোকসভায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস পার্টি আর প্রধান বিরোধী দল বিজেপি'র শক্তি প্রায় সমান সমান। কিন্তু তাদের কারোরই পালার্মেন্টে অর্ধেকের বেশি আসন নেই। ফলে এই দুটি বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে কোন একটি ক্ষমতাসীন থাকতে বা হতে চাইলে অন্যান্য ছোট পার্টির সঙ্গে জোট সরকার গঠনের বিকল্প নেই। যেমন বর্তমান কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার ২০০৪ সালে গঠিত হয়। তখন বামপন্থী দলগুলো সরকারে যোগদান করে নি। তারা মন্ত্রিসভার বাইরে থেকে জোট সরকারকে সমর্থন দেয়। অর্থাত্ কংগ্রেস পার্টি সরকার গঠনের ভিত্তি হচ্ছে বামপন্থী দলগুলোর সমর্থন। এ থেকে বোঝা যায়, ক্ষমতাসীন দলের দেশ শাসনের সময় মিত্র দলগুলোর সঙ্গে বোঝাপড়া করে এগোতে হয়, অন্যথায় সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। ভারতের বর্তমানে যেটা ঘটছে।

    বিগত চার বছর কংগ্রেস আর মিত্র দলগুলোর সহযোগিতা মোটামুটি সুষ্ঠু ছিল। বিভিন্ন মহল মনে করতো, বর্তমান সরকার সুষ্ঠুভাবে তার পাঁচ বছর কার্যমেয়াদ সম্পন্ন করবে। কিন্তু ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তির কারণে ক্ষমতাসীন জোটের ভেতরে আকস্মিক সংকট তৈরি হয়েছে। এমন কি এই সরকারের পতনের আশংকাও রয়েছে। সমর্থন প্রত্যাহার নিয়ে বামপন্থী দলগুলোর মধ্যে এখনো কিছুটা মত বিরোধ রয়ে গেছে। কেউ কেউ মনে করেন, পারমাণবিক চুক্তি প্রশ্নে ৪ বাম দল আর কংগ্রেস পার্টির মধ্যে গুরুতর মতভেদ থাকলেও বাম দলগুলো বিরোধী দলকে সমর্থন করবে না। কারণ বহু বছর ধরে বিজেপি বাম দলগুলোর শত্রু ছিলো। সুতরাং ২২ জুলাই অনুষ্ঠেয় আস্থা ভোটে বাম দলগুলো কী অবস্থান নেবে, তা বর্তমানে কংগ্রেস পার্টির মনোভাবের ওপর নির্ভর করছে। অন্য দিকে, কিছু উগ্র বাম নেতা যেমন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এ বি বর্ধন মনে করেন, বাম দলগুলোর উচিত খুব দ্রুত সরকারের প্রতি তাদের সমর্থন পুরোপুরি প্রত্যাহার করা। তাহলে সরকার পারমাণবিক চুক্তি আর এগিয়ে নিতে পারবে না। তিনি মনে করেন, মনমোহন সিং সরকার ও যুক্তরাষ্ট্র স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ লঙ্ঘন করেছে।

    গত কয়েক দিন ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রকাশ্যে ও গোপনে দর কষাকষি চলছে। এ দিকে লোকসভায় ভোটাভুটির আয়োজনের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি আছে। ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দৌড় ঝাপ পুরোদমে চলছে। অবশেষে সিং সরকার কঠিন অবস্থা পার করতে পারবে কিনা? জনগণ এখন সেই অপেক্ষায় আছে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)