v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-07-11 20:05:44    
ভারত -যুক্তরাষ্ট্রপরমাণু চুক্তি নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে উত্তেজনা

cri
    ১৯ জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে স্বাক্ষরের জন্য ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু নিশ্চয়তা চুক্তিরএকটি খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করা হয়েছে । ভারত সরকার ঘোষণা করেছে , ভারত ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার কাছে চুক্তির খসড়া দাখিল করেছে এবং যত দ্রুত সম্ভব সংস্থাটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চয়তা চুক্তি স্বাক্ষর করবে । ভারত সরকারের এই উদ্যোগ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপই শুধু নয় , বরং ভারতের অভ্যন্তরীন রাজনীতির জন্যও উত্তেজনাকর।

    ভারত সরকার প্রকাশিত খসড়া চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি ভারতকে পরমাণু বাণিজ্য চালানোর অনুমোদন দেয় তাহলে ভারত স্বদেশের বেসামরিক পরমাণু ব্যবস্থাকেআন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানের আওতায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেবে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা পরমাণু জ্বালানী সম্পদ বেসামরিক পরমাণু জ্বালানী সম্পদ উত্পাদনে ব্যবহার করার প্রতিশ্রুতি দেবে । পক্ষান্তরে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থা ভারতের বেসামরিক পরমাণু ব্যবস্থাকে অবিরাম জ্বালানী সম্পদ সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেবে এবং ভারতকে জ্বালানী সম্পদের কৌশলগত মজুদ ব্যবস্থা নির্মাণ করার অনুমোদন করবে ।

    খসড়া চুক্তি দাখিল এবং তার বিষয়বস্তুর প্রকাশেরসঙ্গেসঙ্গেভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ৮ জুলাই ভারত সরকার খসড়া চুক্তির বিষয়বস্তু ফাঁস করতে চায় না এই অভিযোগ এনে ৪ বছর ধরে ভারত সরকারকে সমর্থনদানকারী বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো অবশেষে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে । এর ফলে ক্ষমতাসীন ইউপএ জোট ভেঙ্গে গেছে । ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন , খসড়া চুক্তির বিষয়বস্তু ভারত সরকার ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার মধ্যে একটি গোপন দলিল । আনুষ্ঠানিক স্বাক্ষরের আগে তা প্রকাশ করা যায় না । বামপন্থী দলগুলো তাদের সমর্থন তুলে নেওয়ার পর প্রনব বলেন , পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে উতরে যাওয়ার পর সরকার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সঙ্গে নিশ্চয়তা চুক্তি স্বাক্ষর করবে । কিন্তু এ কথা বলার মাত্র এক দিন পর ভারত সরকার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার কাছে খসড়া চুক্তি দাখিল করেছে এবং এর বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছে ।

    এ কারণে ভারত সরকার বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি ও অতীতের মিত্র বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে । জনতা পার্টির নেতা আদভানি বলেন , ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে জনগণের কাছে মিথ্যা কথা বলার কারণে সরকার এখন বিশ্বাসযোগ্য নয় । তিনি বলেন , বামপন্থী দলগুলো তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করার পর বর্তমান সরকারের একদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৈধ প্রতিনিধিত্ব নেই এবং অন্য দিকে অব্যাহতভাবে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তির প্রক্রিয়াকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অধিকার তার নেই । সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব সরকারের ওপর আস্থা ভোট নেওয়া দরকার ।

    ৯ জুলাই জাপানে জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রী মনমোহনসিং খসড়া চুক্তি দাখিল করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ভারতের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েইবসাইট খসড়া চুক্তি প্রকাশ করায় বামপন্থীরা মনে করেন , পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে ভারত সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চাপে নতিস্বীকার করেছে ।

এই সব সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের একজন মুখপাত্র বলেন , ভারত সরকারের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার কাছে খসড়া দাখিল করার অর্থ এই নয় যে , দুপক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়ে গেছে । তিনি এই মতে অটল রয়েছেন যে , পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগে যে কথা দিয়েছেন সরকার সে অনুসারে আস্থা ভোটের পরই আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করবে ।

    পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা সঞ্জয় বালু এদিন বলেছেন , সরকার পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মুখোমুখী হতে চায় এ কথা জানিয়ে সিং এ দিন প্রেসিডেন্ট প্রতিভা পাতিলকে ১১ জুলাই রাতের আগেই আস্থা ভোট অনুষ্ঠানের সময়সূচী নির্ধারণের কথা বলেছেন ।

    কোনো কোনো বিশ্লেষক উল্লেখ করেন , ভারত সরকারের এই আচরণের অর্থ এই নয় যে, বহুকাল ধরে অচলাবস্থায় পড়া ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি পুনজ্জীবিত হবে । আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থার সমর্থন পাওয়ার পর চুক্তিটি বাস্তবায়ন করতে চাইলে ৪৫টি দেশকে নিয়ে গঠিত পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠির এবং মার্কিন কংগ্রসের অনুমোদন পেতে হবে । যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তির ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে যাবে । --চুং শাওলি