গোপালগন্জ জেলার শ্রোতা মো: গোলাম রসুল তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে কি কৈ ও ইলিস মাছ পাওয়া যায়?
হ্যাঁ, চীনে প্রচুর কৈ মাছ আছে। কিন্তু বতর্মানে ইলিস মাছ খুব কম দেখা যায়। ইলিস মাছ শুধু ইয়াংসি নদীতে পাওয়া যায়। আজকাল চীনের বাজারে ইলিস মাছ প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। তবে, জানা গেছে, সম্প্রতি পেইচিংয়ের কোন একটি বাজারে ইলিস মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ সব ইলিস মাছ কোথা থেকে আনা হয়েছে তা ঠিক জানা যায় নি। যাই হোক, সাম্প্রতিককাল চীনে ইলিস মাছ পাওয়া খুব কঠিন।।
বগুড়া জেলার শ্রোতা মো: আনওয়ার ইকবাল তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনে বছরে কতগুলো সিনেমা মুক্তি পায়? চীনে সিনেমা হলের সংখ্যা কত?
উত্তরে বলছি, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছর চীনে কয়েক শো চলচ্ছিত্র তৈরী করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের বেশ কয়েকটি ছায়াছবি বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গণে প্রদর্শিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে চীনের ছায়াছবি দেখানো হয়। চীনের বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে পুরস্কার পেয়েছে। তা ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে কয়েকজন নাম-করা চলচ্চিত্র পরিচালক উঠে এসেছেন। দু এক জন নায়ক নায়িকা বিশ্ব চলচ্চিত্র তারকায় পরিণত হয়েছেন। আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেয়া একটু কঠিন। কারণ এ সম্পর্কে এখন পযর্ন্ত কোন সরকারী তথ্য প্রকাশিত হয়নি। সারা চীনদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা হিসাব করা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। কিন্তু আমাদের জানা মত, কেবল রাজধানী পেইচিংয়ে প্রায় পঞ্চশটি সিনেমা হল আছে।আপনার এই প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে না পারার জন্য দু:খিত।
এখন একটি বাংলা গান শুনবেন।
বাংলাদেশের নাটোব জেলার শ্রোতা শামীম আহম্মেদ তাঁর চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে নাগরিকত্ব পেতে হলে কি করতে হয়?
বন্ধু শামীম আহম্মেদ, চীন একটি জনবহুল দেশ। বতর্মানে চীনের লোকসংখ্যা ১৩০ কোটি । লোকসংখ্যার দিক থেকে বোঝা যায় চীন কখনো একটি অভিবাসন দেশ হবে না। সুতরাং একজন বিদেশীর চীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে।
বাংলাদেশের ঢাকা জেলার শ্রোতা আনিসুজ্জামান তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীন আন্তর্জাতিক বেতার রাজধানী পেইচিংএর কোন দিকে অবস্থিত?
উত্তরে বলছি ,চীন আন্তর্জাতিক বেতার পেইচিং শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের সিচিংসান জেলায় অবস্থিত। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে যে, ১৯৯৭ সালে যখন চীন আন্তর্জাতিক বেতার ফুসিমেন থেকে এখানে সরিয়ে নেয়া হয় তখন জায়গাটি একেবারে শহরের উপকন্ঠে ছিল। তখন চার দিকে কৃষি জমি ছিল। কিন্তু দশ বছর পর এখানে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। এখন বেতারের চার দিকে অনেক সুরম্য অট্টালিকা নির্মিত হয়েছে। অতীতের কৃষি জমি এখন আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার শ্রোতা মো: জুয়েল আহম্মেদ মল্লিক তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনের সবচেয়ে বড় জেলখানাটির নাম কি? চীনের বৃহত্তম মিডিয়া কোম্পানীর নাম কি?
প্রিয় বন্ধু এখন আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। আসলে এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সত্যিই কঠিন। কেননা, এ সম্পর্কে কোন সরকারী তথ্য পাওয়া যায় না। আমার জানা মতে , চীনের অনেক জায়গায় জেলখানা আছে। সারা দেশে কতগুলো জেলখানা আছে তার সংখ্যা সঠিকভাবে বলা মুশকিল । তবে আপনার এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আমরা ইন্টারনেটে জেলখানা সম্পর্কে তথ্য খুঁজেছি । ইন্টারনেটের তথ্য অনুযায়ী, চীনের ছিনহাই প্রদেশের সিনিন জেলখানা এবং সেনছেন জেলাখানাকে চীন দেশের সবচেয়ে বড় দু'টোজেলখানা বলে মনে করা হয়। এখন দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, সিনহুয়া বার্তাসংস্থা হল চীনের জাতীয় বার্তাসংস্থা। চীনের সঙ্গে যে সব দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে সে সব দেশে সিনহুয়া বার্তাসংস্থার সংবাদ কেন্দ্র রয়েছে।
বাংলাদেশের রাংগামাটি জেলার শ্রোতা শাহিনারা খানম তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, বৌদ্ধাধর্ম ও লামাধর্মের মধ্যে পাথর্ক্য কি?
উত্তরে বলছি, লামাধর্ম বৌদ্ধধর্মের একটি শাখা। লামাধর্ম প্রধানত চীনের তিব্বতী ও মঙ্গোলীয় জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে প্রচলিত । খৃষ্ট্রীয় সপ্তম শতাব্দীতে তিব্বতের রাজা সোংত্সান পাম্পো তাঁর দুই স্ত্রী ---থাং রাজবংশের রাজকুমারী ওয়েন ছেং ও নেপালের রাজকুমারী ভৃকুটীর প্রভাবে বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হন। খৃষ্ট্রীয় অষ্টম শতাব্দীতে ভারতের বৌদ্ধ-সন্ন্যাসী শান্তরক্ষিত ও পদমসম্ভব ধর্ম প্রচার করতে তিব্বতে আসেন।বৌদ্ধধর্ম ও তিব্বতের স্থানীয় ধর্মের দীর্ঘকালীন মিশ্রণে সৃষ্ট হয় লামাধর্ম। খৃষ্ট্রীয় এয়োদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ইউয়ান রাজবংশের সম্রাটদের পৃষ্ঠপোষকতায় লামাধর্ম একটি রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়, তিব্বত অঞ্চলে লামাধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং মঙ্গেলীয় জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলেও লামাধর্মের বিস্তার ঘটে।
এখন একটি বাংলা গান শুনবেন।
সিলেট জেলার শ্রোতা জীতেন্দ্র নাথ শীল তাঁর চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছেন, চীনরে সবচেয়ে বিখ্যাত পাহাড়ের নাম কি?
উত্তরে বলছি, চীনে অজস্র বড় বড় পাহাড় আছে। অনেক পাহাড় দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। যেমন আনহুয়ে প্রদেশে অবস্থিত হওয়াংসেন পাহাড়, সানডং প্রদেশে অবস্থিত থাইসেন পাহাড় চীনের বিখ্যাত পযর্টন স্থান। এ দু'টো পাহাড়ের দৃশ্য খুবই সুন্দর। সুতরাং এ দু'টো পাহাড়কে চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত পাহাড় বলে গণ্য করা হয়।
|