৪০ বছর ধরে ছাই তেন চুও মা নিজের উদাত্ত কন্ঠে গাওয়া গানে শ্রোতাদেরকে তুষার পাহাড়, তৃণভূমি এবং দিন দিন সুন্দর হয়ে ওঠা তিব্বতে টেনে এনেছেন। তিনি সাধারণ ভূমিদাসের মেয়ে থেকে বিশ্ব-বিখ্যাত গায়িকা হয়েছেন। লাসা শহরে পেইচিং অলিম্পিক গেমসের একজন মশাল-বাহকও ছিলেন তিন।
"পার্টির কাছে একটি পাহাড়ী গান গাই, আমি পার্টিকে আমার মায়ের সঙ্গে তুলনা করি। মা আমাকে জন্ম দিয়েছেন আর পার্টি আমাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে"।
"পার্টির কাছে পাহাড়ী গান গাই" নামের এই গানটি চীনে খুব জনপ্রিয়। ৭০ বছরেরও বেশি বয়সী ছাই তেন চুও মা যখন এই সুপরিচিত গানটি গাইলেন তখন আমরা আবারো মুদ্ধ হই।
এই গানটির সঙ্গে আমার বিশেষ অনুভূতি মিশে আছে। কারণ গানের কথায় পার্টির কাছে আমার মনের কথা প্রকাশিত হয়। গানের কথা খুব মর্মস্পর্শী। পার্টি, আমার উপ-জাতি এবং আমাদের মাতৃভূমির প্রতি সব অনুভূতি এ গানে রয়েছে। আমি চিরদিন এই গানটি গাইবো।
১৯৩৭ সালে ছাই তেন চুও মান তিব্বতের রি খা চে'র একটি ভূমিদাস পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে ২১ বছর বয়সে তিনি শাংহাই সঙ্গিত ইন্সটিটিউটে ভর্তি হন। তাঁর প্রতিনিধিত্বকারী গানগুলোর মধ্যে রয়েছে, "মুক্তি পাওয়া ভূমিদাস গান গায়", "পার্টির কাছে পাহাড়ী গান গাই" এবং "পেইচিংয়ের স্বর্ণ পাহাড়ে" প্রভৃতি। আস্তে আস্তে তিনি নিজের প্রতিভা এবং উদাত্ত ও সুরেলা কন্ঠ দিয়ে চীনের শ্রোতাদের মন জয় করেন। কিন্তু খুব কম মানুষ জানেন যে, স্নাতক শ্রেনীতে অধ্যয়নের সময় মনোনীত প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই-এর একটি কথা তাঁর জীবনটাই বদলে দেয়।
স্নাতক হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই আমাকে বলেন, আপনি তিব্বতে ফিরে চাকরি করলে ভালো হবে। তিনি আরো বলেন, তিব্বতী জনগণের জন্য আপনারা খুব প্রয়োজনীয়। তিব্বতের জন্য আপনার মতো সাংস্কৃতিক প্রতিভা যাদের আছে তাদের যার যার ভূমিকা পালন করা খুব দরকার। প্রধানমন্ত্রীর কথা আমি চিরদিন মনে রাখি।
তিব্বতে ফিরে আসা ছাই তেন চুও মান বরাবরই প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুসরণ করে যাচ্ছেন। তিনি তিব্বতের প্রতিটি জায়গায় গিয়েছেন। তিনি নিজের গানের সুরের মাধ্যমে জন্মভূমির জনগণকে শুভেচ্ছা জানান। গান গাওয়া অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ছাই তেন চুও মা তিব্বতের ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীতকে লালন করার কথা কখনও ভুলে যান নি।
একটি উপজাতি হিসেবে নিজের লোকশিল্প ত্যাগ করলে সকল জাতির সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমি আশা করি, তিব্বতের সাংস্কৃতিক কর্মীরা যার যার কাজ ভালোভাবে করা ছাড়াও, সারা দেশে তথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের সংস্কৃতি প্রচার ও লালন করবেন।
ছাই তেন চুও মা বলেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের একজন মশাল বাহক নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সাক্ষাত্কার শেষে ছাই তেন চুও মা গানের সুর দিয়ে মনের শুভেচ্ছা আবার জানিয়েছেন।
পেইচিং অলিম্পিক গেমসের জন্য শুভ কামনা করি। আমি পেইচিং অলিম্পিকের জন্য গান গাইবো। (লিলি)
|