তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের স্বদেশীদের দীর্ঘ প্রত্যাশিত দুই তীরের মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটিতে বিমান চলাচল ও মূলভূখন্ডের পর্যটকদের তাইওয়ান ভ্রমণ ৪ জুলাই বাস্তবায়িত হয়েছে । ৪ঠা জুলাই সকালে মূলভূভাগের প্রথম পর্যটক দল সাপ্তাহিক ফ্লাইট যোগে পেইচিং থেকে তাইওয়ান পৌঁছেছে। তাইপেই থেকে রওয়ানা হওয়া একটি বিমান মূলভুভাগের সাংহাই পৌঁছেছে ।
মূলভূভাগের প্রথম তাইওয়ানগামী পর্যটক দলের সদস্য সংখ্যা সাত শয়ের কিছু বেশি । তারা আলাদাভাবে কুয়াং চৌ , পেইচিং , নানচিং , সিয়া মেন ও সাংহাই থেকে তাইওয়ানে গিয়েছেন । তারা তাইওয়ানে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন থাকবেন ।
মূলভূভাগের পর্যটকরা তাইওয়ান ভ্রমণে ব্যাপকআগ্রহী । কুয়াং চৌয়ের পর্যটক সি আন ওয়ে বলেন , তাইওয়ান ভ্রমণ আমার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন । তিনি বলেন , তাইওয়ান যাওয়া আমার অনেক বছরের স্বপ্ন । আজ এ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে । দীর্ঘ দিন পর আমার আপন ভাইয়ের সঙ্গে মিলনের অনুভূতি হয়েছে । আজ আমার একটি স্মরণীয় দিন । আমি তাইওয়ান ভ্রমণকালে অনেক ছবি তুলবো ।
২০০৫ সালে মূলভূভাগ তাইওয়ান ভ্রমণের উদ্যোগ শুরু করে । দু তীরের পর্যটন বিষয়ক বেসরকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে একাধিক বার যোগাযোগ ও মতবিনিময় হয়। তবে তখনকার তাইওয়ান কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক বাধার কারণে মূলভূভাগের পর্যটকদের তাইওয়ান যাওয়ার সমস্যার মীমাংসা হয় নি । এ বছরের ১২ জুন মূলভূভাগের প্রণালীর দুই তীরের সম্পর্ক সমিতি ও তাইওয়ানের প্রণালীর দুই তীরের বিনিময় তহবিলের মধ্যে সংলাপ পুনরুদ্ধার হয় । ১৩ জুন দুটি সংস্থার স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি অনুসারে ৪ জুলাই থেকে প্রণালীর দুই তীরের মধ্যে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সরাসরি বিমান চলাচল ও মূলভূভাগের পর্যটকদের তাইওয়ান ভ্রমণ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
মূলভূভাগের দুই তীরের পর্যটন বিনিময় সমিতির প্রধান সাও ছি ওয়ে স্বয়ং পেইচিং থেকে পাঠানো পর্যটক দলের নেতা । তিনি জানিয়েছেন , তাইওয়ানের দর্শনীয় স্থানের সংখ্যা অনেক , তাইওয়ানের দুই কোটি ৩০ লাখ স্বেদেশী খুব অতিথিপরায়ন । তাইওয়ানে মূলভূভাগের পর্যটকদের ভ্রমণ প্রণালীর দুই তীরের মধ্যে আর একটি যোগাযোগের সেতু স্থাপন করেছে । সাও ছি ওয়ে বলেন , আমরা বিশ্বাস করি , দুই তীরের মানুষ ও পর্যটন মহলের চেষ্টায় মূল ভূভাগের যাত্রীদের তাইওয়ান ভ্রমণের কাজ সুসম্পন্ন হবে এবং ভবিষ্যত যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করবে ।
চীনের কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয় ও রাষ্ট্রীয় পরিষদের তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান ওয়াং ই বলেন , ৪ জুলাই তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন । তিনি বলেন , মূলভূভাগের পর্যটকদের তাইওয়ান ভ্রমণ এবং দুই তীরের মধ্যে বিমান চলাচল , ডাক বিনিময় ও বাণিজ্য বিনিময় বাস্তবায়ন দুই তীরের মানুষের আকাংখা । শুধু তাই নয় , আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এর ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে । মূলভূভাগের তাইওয়ানগামী পর্যটকদের পেশা ও অভিজ্ঞতা ভিন্ন হলেও তাদের তাইওয়ানের স্বদেশীদের প্রতি মূলভূভাগের শুভেচ্ছা পৌছে দেয়ার আকাংখা অভিন্ন । আমি বিশ্বাস করি , তারা অবশ্যই তাইওয়ানবাসীর আন্তরিক অর্ভ্যথনা পাবেন ।
৪জুলাই তাইওয়ানগামী বিমানে মূলভূভাগের পর্যটক ছাড়া কিছু তাইওয়ানবাসীও রয়েছে । উ রুই থেন তাদের মধ্যে একজন । গত ১৯ বছরে তিনি মূলভূভাগের নানচিং শহরে ব্যবসা করেন । তার নামে চারটি কোম্পানী আছে । তিনি বলেন , আগে তাইওয়ান ফিরে যাওয়ার সময় আমি হংকং হয়ে যেতে হতাম । এখন আমি সোজা তাইওয়ান যেতে পারছি। আমি মনে করি বাড়ি ফেরার পথ ছোট হয়ে গেছে , তাই আমি খুব খুশি।
৪জুলাই থেকে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার থেকে পরের সপ্তাহের সোমবার পর্যন্ত দুই তীরের মোট ১৮টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করে ।
|