সি ছুয়ানের ওয়েন ছুয়ান ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠনে চীন ও জাপানের সহযোগিতা সম্পর্কিত আলোচনা সভা ১ জুলাই পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে । দু দেশের কর্মকর্তারা বলেছেন , সি ছুয়ানের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠনে চীন জাপানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে । জানা গেছে , দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠনে পরামর্শ দেয়ার জন্য জাপান চীনে বিশেষজ্ঞ পাঠাবে । চীনের আবাসন ও পূর্ত মন্ত্রণালয় ও জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকার যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় চীন ও জাপানের বিশ-বাইশজন সরকারী কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ অংশ নিয়েছেন ।
সি ছুয়ান প্রদেশের পূর্ত ব্যুরোর উপপ্রধান লি ইউ আলোচনা সভায় ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠনে জাপানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আশা প্রকাশ করেছেন । তিনি বলেন , সি ছুয়ানের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর জাপান সরকার ওয়েন ছুয়ানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির জন্য সমবেদনা প্রকাশ করেছে। জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীনের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে । জাপান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ । এবার সি ছুয়ান ভূমিকম্পের ক্ষতি গুরুতর । জাপানের কিছু অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা আমাদের কাজে লাগবে ।
১২ মে সি ছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ান জেলায় ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৬৯ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে । দুর্গত অঞ্চলের আয়তন এক লাখ বর্গকিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর চীনে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে এবারের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি । ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন এক কঠিন ব্যাপার । এতে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় ছাড়াও বিদেশ থেকে উন্নত প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা আমদানি করা প্রয়োজন।
একটি ভূমিকম্পপ্রবন দেশ হিসেবে জাপান ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠনে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে । ১৯৯৫ সালে জাপানের হানশিনে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার পর জাপান সরকার এক মাসের মধ্যে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিল এবং অল্প সময়ের মধ্যে দুর্গত অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্বাভাবিক জীবন পুনরুদ্ধার করেছিল ।
জাইকার চীন শাখার প্রধান কোগা শিগেনারি বলেন , জাপান চীনকে নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে আগ্রহী এবং চীনের দুর্গত অঞ্চলে বিশেষজ্ঞ পাঠাবে । তিনি বলেন , আমরা চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জাপানের ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠনের অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার কথা বুঝিয়ে বলবো । আলোচনা সভায় আমরা দুর্গত অঞ্চলের বাস্তব অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছি । এটা পরবর্তীকালে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও বিশেষজ্ঞ পাঠানোর জন্য হিতকর হবে । যদিও জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এজেন্সী দুর্গত অঞ্চলে সড়কপথ নির্মানের মতো প্রত্যক্ষ সাহায্য দিতে পারে না , তবে চীনের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের পুনর্গঠনে অবদান রাখার জন্য আমরা এ ক্ষেত্রে জাপানের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি সরবরাহ করতে আগ্রহী।
তিনি আরো বলেন , জাইকা ইতোমধ্যে সি ছুয়ানে কয়েকটি সাহায্য প্রকল্প শুরু করেছে । এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ভূমিকম্পে নষ্ট বনাঞ্চল পুনঃপ্রতিষ্ঠা , দুর্গত অঞ্চলে মহামারি প্রতিরোধ ও অস্ত্রোপচারেরপর আহতদের শুশ্রূষা ইত্যাদি । সি ছুয়ানে আট মাত্রার ভূমিকম্পের পর চীন সরকার যে ত্রাণ ও উদ্ধারের জোর চেষ্টা চালিয়েছে , তা' আমাদের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে । তিনি বলেন , ভূমিকম্পের পর চীন সরকার দুর্গত অঞ্চলে দ্রুত চিকিত্সা দল ও ত্রাণ দল পাঠিয়েছে এবং আহতদের যথাসময় চীনের বিভিন্ন বড় শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে আহত মানুষ ভালো চিকিত্সা পেয়েছেন । এ পদ্ধতি জাপানের কাছে শিক্ষনীয়।
|