v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-24 20:36:17    
চীন-ভারত মৈত্রী ভবনে গোলাপত্রিশ্নার সুখী জীবন

cri

    চীনের সমুদ্রতীরবর্তী শহরগুলোর শিল্প হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় দক্ষিণ চীনের মধ্যবর্তী প্রদেশ চিয়াং সি'র রাজধানী নান ছাং শহরও দেশ বিদেশের ব্যবসায়ী আকর্ষণে পুঁজি বিনিয়োগের পরিবেশ সুসংহত করছে । আস্তে আস্তে নান ছাং শহর আরো বেশি বিদেশি বন্ধুদের লেখাপড়া , পুঁজি বিনিয়োগ ও কাজের ক্ষেত্রে আকর্ষণ করছে । আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের একজন ভারতীয় বন্ধুর পরিচয় করিয়ে দেবো । তার নাম গোপালকৃষ্ণ এইচ কুলকার্নি । তিনি নান ছাং মহরের "ছিয়ান সি ইউয়ান" নামের একটি কমিউনিটিতে থাকেন , তিনি যে ভবনে থাকেন তার নাম "চীন-ভারত মৈত্রী ভবন" ।

    "ছিয়ান সি ইউয়ান" কমিউনিটিতে ঢুকলে দেখা যাবে লাল ও সাদা রঙের ভবন , শিশুরা কমিউনিটিতে খেলাধূলা করছে । তাদের বাবা মা পাশেই গল্প-গুজব করছে । এসব ভবনের মধ্যে একটি ভবন একটু আলাদা । কারণ সেখানে আটটি ভারতীয় পরিবার থাকেন । তারা সবাই মহিন্দ্র ট্রাক্টর কোম্পানীর উচ্চ পদস্থ কর্মী । তাই সবাই এ ভবনটিকে "চীন-ভারত মৈত্রী ভবন" বলে । আজকের অনুষ্ঠানের মুখচরিত্র গোপালকৃষ্ণও এ ভবনে থাকেন । ৩৮ বছর বয়সী গোপালকৃষ্ণ ২০০৫ সালে নান ছাংয়ে এসেছেন । তার জন্মস্থান ভারতের বৃহত্তম শহর মুম্বাইয়ে । পেইচিং ও সাংহাইয়ের তুলনায় নান ছাং শহর ততটা উন্নত নয় , তবে গোপালকৃষ্ণ মনে করেন এ শহরের নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে । তিনি বলেন :

    যদিও নান ছাং শহর পেইচিং ও সাংহাইয়ের মত বড় নয় । তবে জীবনযাপনের জন্য এ শহর বেশি উপযোগী । কারণ এ শহরে থাকলে স্বজনের সঙ্গে বেশি সময় কাটানো যায়। এখানে থাকতে আমার খুব ভালো লাগে । সমস্যা হলে , এ কমিউনিটির বন্ধুরা আমাদেরকে সাহায্য করেন । গোপালকৃষ্ণ প্রথম চীনে একাই এসেছিলেন । আত্মীয়স্বজন তার সঙ্গে আসেন নি । তিনি বলেন :  

    আমার মনে হয় চীনারা খুব উষ্ণহৃদয় এবং অন্যকে সাহায্য করতে আগ্রহী । যখন আমি চীনা ভাষা বলতে পারতাম না , তখন তারা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন । যেমন বিমানবন্দরে বা হোটেলে । যদিও হোটেলের কর্মী ইংরেজী বলতে পারে না , তবুও তারা আন্তরিক চেষ্টায় আমাকে সাহায্য করেছে । আমি চীনাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পছন্দ করি । ২০০৬ সালে গোপালকৃষ্ণর স্ত্রী ও সন্তান নান ছাংয়ে আসেন । ঠিক এ বছরে নাং ছাংয়ে প্রথমবারের মত চীন ও ইংরেজী ভাষায় মানচিত্র ছাপা হয়েছে । এ মানচিত্রে স্থানীয় দর্শনীয় স্থান এবং রাস্তার ইংরেজী নাম আছে । এ ছাড়া , শিল্প প্রতিষ্ঠান , বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারী সংস্থার ইংরেজী নামও আছে । গোপালকৃষ্ণর স্ত্রীর একটি সুন্দর চীনা নাম আছে , তা হল লি ইয়ুয়ে । তিনি এখন নান ছাংয়ের একটি ব্রিটিশ কোম্পানীতে কাজ করেন । প্রতি সপ্তাহে তিনি গোপালকৃষ্ণর সঙ্গে নান ছাং বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা শেখেন । কাজ ছাড়া কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন লি ইয়ুয়ে । তিনি বলেন :

    নান ছাং শহর খুব ভাল । থাকার জন্য বেশ উপযোগী । এ শহরের সুবজায়ন অবস্থাও খুব ভালো । আমরা সবসময় নিজেরা রান্না করি এবং সুপারমার্কেটে কেনাকাটা করি । আমি কিছু চীনা ভাষা বলতে পারি , তাই ভাষার অসুবিধা নেই ।

    চিয়াং সি প্রদেশের লোকেরা ঝাল খাবার পছন্দ করে । অনেক পর্যটক চিয়াং সি প্রদেশে আসলে সেখানকার খাবারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে না । তবে গোপালকৃষ্ণর পরিবারের জন্য এটা কোনো সমস্যা না । গোপালকৃষ্ণ বলেন :

    নান ছাংয়ের কিছু কিছু খাবার বেশ ঝাল । তবে আমাদের ভারতীয় মানুষের জন্য কোনো সমস্যা নেই । আমি এখন মোটামুটি চীনা খাবার খেতে পারি । মাঝে মাঝে আমরাও রেস্তরাঁয় খাই । কারণ আমরা এখন চীনা ভাষা শিখছি , তাই চীনাদের সঙ্গে আলাপ করতে পারি ।

    কোম্পানীর কর্মী শুয়েই ইয়ুন খুন গোপালকৃষ্ণর সঙ্গে কাজ করতেন । তিনি টেলিফোনে সংবাদদাতাকে বলেন , গোপালকৃষ্ণর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব স্মরণীয় । তিনি বলেন :

    তিনি আমার প্রথম ম্যানেজার । আমার ওপরে তার প্রভাব বিরাট । তিনি খুব ভালো একজন বন্ধুও ।

    নিজের কোম্পানী মহিন্দ্র সম্পর্কে গোপালকৃষ্ণ বলেন :

    ভারতীয় ও চীনাদের অনেক মিল আছে । ভারতের জনসংখ্যা অনেক বেশি , ভারতের ইতিহাসও সুদীর্ঘ । চীনও একটি বড় দেশ । চীন ও ভারত উভয়ই কৃষিপ্রধান দেশ । নিঃসন্দেহে , মহিন্দ্র চীনে সফল হবে ।

    "চীন-ভারত মৈত্রী ভবনে" থেকে গোপালকৃষ্ণর পরিবার খুব সন্তুষ্ট । যদিও দু'বছর পর কোম্পানীর সঙ্গে গোপালকৃষ্ণর কর্মমেয়াদ শেষ হবে । তবে তিনি বলেন , চীনে থাকার অভিজ্ঞতা কখনোই তিনি ভুলে যাবেন না ।

(শুয়েই ফেই ফেই)