v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International Thursday Apr 10th   2025 
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-20 16:53:08    
হলিউডের চলচ্চিত্র পরিচালক থেকে চীনের দাতব্য তহবিল পরিচালনা মশাল বাহক জেনি বাওয়েন

cri
    ১৬ জুন পেইচিং অলিম্পিক মশাল চীনের ছুং ছিং শহরে হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে হলিউডের মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক জেনি বাওয়েন মশাল বাহক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি এখন চীনে দাতব্য জনসেবার কাজে নিয়োজিত। নিজস্ব দাতব্য তহবিলের মাধ্যমে তিনি হাজার হাজার চীনা এতিমকে সাহায্য করেছেন। জনসেবা আগে তার কাছে একটি খন্ডকালীন কাজ ছিল, অথচ এখন তার সারা জীবনের ধ্যান জ্ঞান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে রূপ নিয়েছে। 

    ১০ বছর আগে জেনি জানতেন না যে তিনি চীনে এত বেশি সময় কাটাবেন। প্রথম চীনা এতিমকে দত্তক নেয়ার পর জেনি'র জীবন বদলে যায়। ১৯৯৭ সালের গ্রীষ্মকালে তিনি এবং তার স্বামী একসাথে কুয়াং চৌ'র একটি এতিমখানা থেকে একটি মেয়ে দত্তক নেন। জেনি এবং তার স্বামী'র যত্নে চিন্তাগত বিশৃংখলা অবস্থা থেকে মেয়েটি স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এরপর জেনি আরেকটি মেয়ে দত্তক নেন। জেনি বলেন, এই দুটি মেয়ে তার জীবন পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।

    "আমার সব মনোযোগ ও সময় মেয়েদের জন্য ব্যয় করেছি। ওদেরকে দত্তক নেয়ার পর আমার মনে যে পরিবারহারা সকল শিশুই আমার নিজের সন্তান।"

    দু'টি মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেনি উপলব্ধি করেছেন যে শুধু তার দুটি মেয়েকে নয়, সকল শিশু, বিশেষ করে এতিমদেরকে ভালবাসা খুব মূল্যবান। তখন জেনির মাথায় থেকে চীনে একটি দাতব্য তহবিল স্থাপন করার চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে। তিনি চীনের এতিমদের জন্য কিছু করতে চান।

    কিন্তু একজন চলচ্চিত্র পরিচালক থেকে তহবিল পরিচালকে পরিণত হওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। প্রথম বছরে জেনি অনেক দিন সরকারি কর্মকর্তা, এতিমখানার কর্মকর্তা এবং শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কাটিয়েছেন। এ প্রক্রিয়া থেকে জেনি অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ১৯৯৯ সালে জেনির "হাফ দ্য স্কাই ফাউন্ডেশন" চীনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতি পেয়ে সরকারের সাহায্যে কাজ করতে শুরু করে। এই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করতে গিয়ে জেনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন:

    "আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। কারণ চীন সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের উন্মুক্ত অবস্থান আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। গত বছর থেকে আমরা চীনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা চালাতে শুরু করি। পরে আমরা আরো বেশি দাতব্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে আরো বেশি এতিমকে সাহায্য করবো।"

    ১০ বছরের প্রচেষ্টার পর এখন পর্যন্ত জেনি এবং তার তহবিল ১৩ হাজার চীনা এতিমকে সাহায্য দিয়েছে এবং আরো ব্যাপক ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। সিছুয়ান ভূমিকম্পের পর জেনি এবং তার সহকর্মী তাত্ক্ষনিকভাবে ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের শিশুদের সাহায্য করেছেন।

    "ভূমিকম্পের পর আমাদের তহবিলের অনেকেই দুর্গত অঞ্চলে গেছে। তারা কয়েক সপ্তাহ ধরে ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করে সেখানকার শিশুদের দিয়েছে। কিন্তু পরে আমরা দেখেছি শিশুদের জন্য মানসিক চিকিত্সা আরো জরুরী। বিশেষ করে ভূমিকম্পে যারা বাবা মা হারিয়েছে তাদেরকে বিশেষ মানসিক সাহায্য দেয়া উচিত। তাই আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শিশু কেন্দ্র স্থাপন করেছি, সেখান থেকে তাদেরকে মানসিক সাহায্য দিচ্ছি। এছাড়াও আমরা কিন্ডারকার্টেনও খুলেছি, শিশুদের জন্য আর্ট এবং সঙ্গীত ক্লাস খুলেছি।

    জেনি এবং তার তহবিল অনেক চীনা শিশুদের সাহায্য দিচ্ছে। এর সঙ্গে সঙ্গে এসব শিশুর সাহস জেনিকে অনেক উত্সাহ দিয়েছে। জেনি বলেন:

    "শিশুদের যে বিষয়টি আমার মনে সবচেয়ে বেশি ছাপ ফেলেছে সেটি হচ্ছে তাদের কষ্ট অতিক্রম করার সাহস। কঠিন পরিস্থিতিতে থাকলেও তারা আশাবাদী থাকে। আমি বলতে চাই সারা চীনের মানুষই আমার মনে এই ছাপ ফেলেছে। চীনা মানুষ খুব দৃঢ় মনের এবং খুব সাহসী। সিছুয়ান ভূমিকম্পের মত বড় দুর্ঘটনায় পড়লেও তারা দৃঢ় মনোবল ধরে রাখেন। এমন চেতনাকে আমি মর্যাদার চোখে দেখি।"(ইয়াং ওয়েই মিং)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China