১৯ জুন সকালে পঞ্চম এশিয়া-ইউরোপ পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলন পেইচিংয়ে শুরু হয়েছে । উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারমান উ পাং কো এ অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টের নেতা ও প্রতিনিধিদের চীনের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের বিবরণ দিয়েছেন এবং এশিয়া -ইউরোপ পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলনের উন্নয়নে প্রস্তাবপেশ করেছেন ।
তিন দিন স্থায়ী বর্তমান এশিয়া-ইউরোপ পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতা জোরদার করা এবং অভিন্ন উন্নয়ন তরান্বিত করা । চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান উ পাং কো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন , এশিয়া ও ইউরোপের সহযোগিতা বাড়ানো ও উন্নয়ন তরান্বিত করা দুই মহাদেশের জনগণের স্বার্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ সম্মেলনেআমরা যে এ বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করছি এবং পার্লামেন্টারি সহযোগিতার ভূমিকা আলোচনা করছি , তা' উন্নয়নের প্রবণতা ও জনগণের আকাংখার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ । এটা বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা বাড়ানো এবং অভিন্ন সমৃদ্ধি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাত্পর্যপূর্ণ ।
প্রথম এশিয়া ও ইউরোপের পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলন ১৯৯৬ সালে শুরু হয় । এ সম্মেলনের লক্ষ্য হলো এশিয়া ও ইউরোপের পার্লামেন্টের মধ্যে সংলাপ বাড়ানোর মাধ্যমে দুই অঞ্চলের জনগণের সমঝোতা বাড়ানো এবং পার্লামেন্টের ভূমিকা বাড়ানো । প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠানের পর ১২ বছরে সদস্য সংখ্যা ২৬ থেকে ৪৩টিতে দাঁড়িয়েছে । এর আগে অনুষ্ঠিত চারটি সম্মেলনে অনেক দলিল ও প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে । এ সব দলিল ও প্রস্তাবে বড় বড় আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যা সম্পর্কে সদস্য দেশের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে । এ সম্মেলনসদস্য দেশগুলোর সংলাপ ,যোগাযোগ ও সহযোগিতা তরান্বিত করেছে ।
উ পাং কো বলেন , এশিয়া-ইউরোপ পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলন ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টের সংলাপ জোরদার করা , পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতা বাড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে । এ অধিবেশনের ভবিষ্যত উজ্জ্বল । চেয়ারম্যান উ পাং কো এশিয়া-ইউরোপ পার্লামেন্টারি অংশীদারিত্ব সম্মেলন পরবর্তী উন্নয়ন সম্পর্কে প্রস্তাব পেশ করেছেন । তিনি বলেন , সদস্যদেশগুলোর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত এবং সমতার ভিত্তিতে পরামর্শের মাধ্যমে মতবিরোধ দূর করার চেষ্টা চালাতে হবে এবং অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে মতৈক্য পৌছানোর চেষ্টা করতে হবে । এ ছাড়া এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করা উচিত । যাতে দুটি মহাদেশের মানুষ পরস্পরের ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জানতে পারেন ।
চেয়ারম্যান উ পাং কো তার ভাষণে চীনের ভূমিকম্প দুর্গত অঞ্চলের ত্রাণকাজ ও পুনর্গঠনের বিবরণও দিয়েছেন । তিনি বলেন , সি ছুয়ান প্রদেশের ভয়াবহ ভূমিকম্পে চীনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর এবারের ভূমিকম্পে ক্ষতি সবচেয়ে ব্যাপক । এবার ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়া সাড়ে ছয় হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে , ১৭ লাখ আহত মানুষকে চিকিত্সার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং দেড় কোটি মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । চীনে ভয়াবহ ভূমিকম্প ঘটার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে । উ পান কো চীন সরকার ও চীনা জনগণের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন , ভূমিকম্পদুর্গত অঞ্চলের ত্রাণকাজে আমরা এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার ও জনগণের সমর্থন ও সাহায্য পেয়েছি । কিছু দেশের ত্রাণ দল ও চিকিত্সা দল দুর্গত অঞ্চলে গিয়ে ত্রাণকাজে অংশ নিয়েছে । এতে চীনের জনগনের প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বন্ধুত্ব প্রতিফলিত হয়েছে । আমি আরেকবার চীন সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ।
|