প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, সম্প্রতি দক্ষিণ আফগানিস্তানের কান্দাহারের কাছাকাছি এলাকায় সশস্ত্র তালিবানরা অব্যাহতভাবে হামলা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কারাগার থেকে বন্দী ছিনিয়ে আনার ঘটনার পর সশস্ত্র তালিবানরা আরো দশটিরও বেশি গ্রাম দখল করে নিয়েছে। এর পাশাপাশি আফগানিস্তান সরকারী বাহিনী এবং সেখানে মোতায়েন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী কান্দাহারে ব্যাপক তালিবান বিরোধী সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। তিন সপ্তাহ ধরে তালিবানসহ বিভিন্ন সরকারী বিরোধী সশস্ত্র সংস্থা আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে বহু সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আফগান সরকারী বাহিনী ও আন্তর্জাতিক বাহিনী তালিবানসহ বিভিন্ন সরকার বিরোধী সশস্ত্র সংস্থার উপর আঘাত জোরদার করছে। কান্দাহার প্রদেশের আর্ঘান্দব এলাকার পুলিশ সাত্তার মুহাম্মদ বলেন,(১)
বর্তমানে আর্ঘান্দব এলাকায় পাঁচ শোরও বেশি সশস্ত্র তালিবান সদস্য রয়েছে। তারা সেখানে মাটির নীচে ব্যাপক স্থল মাইন পেতে রেখেছে। এলাকাটি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর সাহায্যে আফগান বাহিনী ও পুলিশ ঘিরে রেখেছে এবং খুব শিগগির তারা তালিবানদের ওপর সামরিক অভিযান চালাবে।
১৬ জুন থেকে আফগানিস্তান সরকারী বাহিনী ও বিদেশী বাহিনী তালিবান বিরোধী অভিযানে সাহায্য করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে আফগানিস্তানের সাত শো সৈন্যকে কান্দাহার প্রদেশে পাঠিয়েছে।
এর পাশাপাশি কান্দাহার এলাকার উত্তেজনাময় পরিস্থিতির দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। জানা গেছে, আফগানিস্তান সরকার বর্তমান ব্যাপক তালিবান হুমকির মুখে রয়েছে। তারা কান্দাহার দখল করে নিতে সক্ষম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৭ জুন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই উদ্বেগ নিয়ে আফগান প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র হুমায়ুন হামিদজাদা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, (২)
আফগানিস্তানের সরকারী বাহিনী কান্দাহার এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা একটি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে নিরাপত্তা সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান করতে চায়। বর্তমানে সংবাদ মাধ্যম কান্দাহার নিয়ে যেসব রিপোর্ট করছে তা সুবিবেচনাপ্রসূত নয় এবং কিছু কিছু ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে।
আফগানিস্তান সরকারী বাহিনী ও ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর তালিবান নির্মূলীকরণ অভিযান প্রসঙ্গে চীনের সমাজ একাডেমির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গবেষণা বিভাগের বিশেষজ্ঞ ইয়ে হাই লিন মনে করেন, সম্প্রতি তালিবান হামলা বেড়ে যাওয়ায় আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি হুমকি পাওয়া ছাড়াই, আফগানিস্তানের প্রতি মার্কিন সরকারের নীতিও তালিবানদের অভিযান বেড়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। তিনি মনে করেন, বুশ সরকার তাদের বিদ্যায়ের আগেই আফগানিস্তান সমস্যা সমাধান করবে বলে আশা করছে। আফগানিস্তান সমস্যা সমাধান করতে চাইলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরো উন্নত করা উচিত। তিনি বলেন, (৩)
এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার জন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের ব্যাপারে বেশি বেশি ব্যবস্থা নিয়েছে এবং নীতি প্রণয়ন করেছে। যেমন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডার পদে পরিবর্তন। এসব পরিবর্তন অচিরেই ন্যাটো, মার্কিন বাহিনী ও আফগানিস্তান সরকারী বাহিনীর তালিবানদের ওপর একটি ব্যাপকতর সামরিক অভিযান চালানোর লক্ষণ।
এতো কিছুর পরও আফগানিস্তানে তালিবানদের নির্মূল করা সহজ কাজ নয়। ইয়ে হাই লিন মনে করেন, তালিবানরা আফগানিস্তান সরকারী বাহিনী ও বিদেশী বাহিনীকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন শর্ত সীমিত করার কারণে একবারের অভিযানে সশস্ত্র তালিবানদেরকে সমূলে উত্পাটন করার কোনো সম্ভাবনাই নেই।(লিলু)
|