১৭ জুন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিন পিয়ংইয়ং পৌছে উত্তর কোরিয়ায় তার আনুষ্ঠানিক মৈত্রী সফর শুরু করেছেন । উত্তর কোরিয়া ছাড়া সি চিন পিং মঙ্গোলিয়া ,সৌদি আরব , কাতার ও ইয়েমেন সফর করবেন । এ বছরের মার্চ মাসে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এটা তার প্রথম বিদেশ সফর । চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে , সি চিন পিংয়ের বর্তমান সফর এশিয়ার পাঁচটি দেশের সঙ্গে চীনের বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়াবে এবং এ পাঁচটি দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করে তুলবে ।
ভাইস প্রেসিডেন্ট চি চিন পিংয়ের বর্তমান ধারাবাহিক সফরের প্রথম দেশ হলো উত্তর কোরিয়া । ২০০৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সফরের পর সি চিন পিং হচ্ছেন উত্তর কোরিয়ায় সফরে যাওয়া চীনের সর্বোচ্চ নেতা । তার উত্তর কোরিয়া সফর সম্পর্কে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ছিং কান বলেন , উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সৌহার্দ্যময় ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রসার দু দেশের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং কোরিয়া উপদ্বীপ ও আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হিতকর । চীন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সুপ্রতিবেশীসুলভ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রসার করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে । ছিং কান বলেন , উত্তরকোরিয়া সফরকালে ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উত্তর কোরিয়ার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আমরা আশা করি , সফরের সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও কোরিয় উপদ্বীপের পরমাণু সমস্যাসহ দু দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে মত বিনিময় হবে । উত্তর কোরিয়া হলো উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় চীনের অন্যতম প্রতিবেশী দেশ । রাজনীতি , অর্থনীতি ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে দু দেশের সহযোগিতা ও বিনিময় বাড়ছে । আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ব্যাপারগুলোতে দু দেশ সহযোগিতা করে আসছে । বিশেষ করে ছ'পক্ষীয় বৈঠকে দুদেশের যোগাযোগ ও সহযোগিতা ভালো । ছিং কান বলেন , উত্তর কোরিয়াসহ বিভিন্ন পক্ষের চেষ্টায় ছপক্ষীয় বৈঠকে প্রথম পর্যায়ের অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে । এখন ছয়টি দেশ পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ ও অবস্থান সমন্বয় এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক সফল করার চেষ্টা করছে ।
উত্তর কোরিয়া সফরের পর সি চিন পিং মঙ্গোলিয়া সফর করবেন । ২০০৩ সালের জুন মাসে প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও মঙ্গোলিয়া সফর করেন । সফরকালে দু দেশের নেতৃবৃন্দ চীন ও মঙ্গোলিয়ার মধ্যে সুপ্রতিবেশীসুলভ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন । এখন চীন মঙ্গোলিয়ার বৃহতম বাণিজ্যিক অংশীদার ও বিনিয়োগকারী দেশ । ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মঙ্গোলিয়ার নেতার সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের বিনিময় ও সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন ।
ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এশিয়ার দুটি দেশ ছাড়া আরব উপদ্বীপের তিনটি দেশ সৌদি আরব , কাতার ও ইয়েমেন সফর করবেন । আরব দেশগুলোর মধ্যে ইয়েমেনই সবচেয়ে আগে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে । সৌদি আরব ১৯৯০ সালে চীনের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে । দু দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সময় বেশি দীর্ঘ না হলেও দু দেশের সম্পর্কের দ্রুত উন্নতি হচ্ছে । সৌদি আরব হচ্ছে পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ও তেল সরবরাহকারী দেশ । চি চিন পিংয়ের তিনটি আরব দেশ সফর সম্পর্কে মুখপাত্র ছিং কান বলেন , সফরকালে সি চিন পিং সৌদি আরবের বাদশাহ , যুব রাজ , কাতারের আমির , যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী এবং ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন এবং চীন ও সৌদি আরব এবং চীন ও ইয়েমেনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ফোরামে অংশ নেবেন । তিনি সফরের সময় এ তিন দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করবেন ।
|