v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-12 20:55:30    
অন্তঃর্মঙ্গোলিয়ার কৃষি ও পশু পালন অঞ্চলে আর্থিক সেবা

cri
    আপনারা পেইচিং থেকে প্রচারিত চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন । এখন শুনুন সেই গ্রাম এই জীবন । পরিবেশন করছি আমি…

    তা মাও জেলা অন্তঃর্মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত । এ জেলার আয়তন ১৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার । এর মধ্যে ১৬.৬ হাজার বর্গ কিলোমিটার প্রাকৃতিক তৃণভূমি । মোট জনসংখ্যা মাত্র ১.১ লাখ । এ বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে লোক সংখ্যা খুব কম । কিন্তু এ ধরনের এলাকায় আর্থিক সেবার আরো প্রয়োজন । পাও শাং নামে একটি ঋণ দান কোম্পানির একজন কর্মকর্তা ইয়াং কাও ছুন বলেন , গত এক বছর ধরে কোম্পানি ঋণ দান ও ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে । ঋণ দানের কাজ সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য কোম্পানির কয়েক জন কর্মী জেলার ৭০টিরও বেশি গ্রাম ঘুরে ঘুরে বেড়িয়েছেন । তৃণভূমিতে ব্যাপক কৃষক ও পশু পালকরা তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ।

    ঋণ দান কোম্পানি চালু হওয়ার আগে তা মাও জেলায় অচেনা ছিল । কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ছেং লি ইউ বলেন , তিনি ঋণ দান কোম্পানি গড়ে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ নেন । ঋণ দান কোম্পানি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হল কৃষি ও পশু পালন এলাকাগুলোতে ঋণ দানের প্রযুক্তি ও উদ্বৃত্ত অর্থ কাজে লাগানো ।

    ঋণ দান কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রথম দিকে যোগ্য কর্মীর দারুণ অভাব ছিল । তখন শুধু ৭জন কর্মী ছিলেন । ছেং লি ইউ সংবাদদাতাকে বলেন , প্রথমে ঋণ দান কোম্পানির কাজ জেলা শহর থেকে শুরু হয় । বহু বেসরকারী শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী ঋণ নিয়েছেন ।

    ফলে ঋণ নেয়ার ব্যবস্থা সরল এবং গ্যারেন্টারের কোনো প্রয়োজন ছিল না বলে বিপুল সংখ্যক লোক এ ঋণের জন্য আবেদন জানায় । ঋণ কোম্পানি চালু হওয়ার পরবর্তী তিন মাসে দিনে ১ শোরও বেশি ঋণগ্রহীতার ব্যবস্থা করা হয় । এর পাশাপাশি বিভিন্ন থানা ও গ্রাম পরিদর্শনের ভিত্তিতে কোম্পানিটি কৃষি ও পশু পালন অঞ্চলের ঋণ দান সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছে । ফলে কৃষক ও পশু পালকদের মধ্যে কোম্পানির পরিচিতি অনেক বেড়ে গেছে ।

    ২০০৭ সালের মে মাসে তা মাও জেলায় ঋণ কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় । মোট ৮জন যোগ্য কর্মী ঋণ দানে কর্মরত রয়েছেন । ঋণ দানের অনুশীলন ও পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের গুণগত মান অনেক উন্নত হয়েছে ।

    বর্তমানে কোম্পানিটির উদ্যোগে ঋণ দেয়া , ঋণ গ্রহীতাদের যোগ্যতা যাচাই এবং ঋণ দানের অনুমোদনসহ একটি পূর্ণাঙ্গ সেবা ব্যবস্থা চালু রয়েছে । ঋণগ্রহীতারা কোম্পানির ঋণ দানের পরিমাণ ও নিয়ম কানুন সম্পর্কে যাতে আরো বেশি জানতে পারেন , সে জন্য কোম্পানির কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে প্রচার কাজ চালান । কৃষি ও পশু পালন প্রকল্পের জন্য যে ঋণ নেয়া প্রয়োজন , তা গ্রামের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পরিমাণ ও যোগ্যতা যাচাই করা দরকার ।

    ঋণ যাতে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দেয়া হয় , সেজন্য ঋণ কোম্পানি কৃষক ও পশু পালকদের ঋণ নেয়ার আবেদনপত্র পাওয়ার দু' এক দিনের মধ্যে যাচাই করার জন্য কর্মী পাঠাবে । ঋণ দেয়া বিষয়ক বিবরণী অনুমোদনের জন্য সাধারনতঃ ২০ মিনিট লাগে । যাদের ঋণ নেয়ার আবেদন অনুমোদিত হয় , তারা সাধারণতঃ তিন দিনের মধ্যে নগদ অর্থ পেয়ে যান ।

    জনসাধারণের ঋণের সুদ ও ঋণ ফেরত্ দেয়ার ব্যাপারেও কোম্পানি বিস্তারিত নিয়ম কানুন প্রণয়ন করেছে । বেসরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ দেয়ার বার্ষিক সুদের হার ১৮ শতাংশ । কিন্তু কৃষক ও পশু পালকদের বার্ষিক সুদের হার মাত্র ১২ শতাংশ । এতে বোঝা যায় , এ ব্যাপারে কাদের জন্য বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে ।

    ঋণ ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ঋণ কোম্পানিও বেশি কথা বিবেচনা করেছে । যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান দেশের উন্নয়নের সঙ্গে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ , সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে সর্বাধিকার দেয়া হয় । যেমন ছাগল লালন পালন , কৃষি ও পার্শ্বজাত দ্রব্যর প্রক্রিয়াকরণ এবং কৃষি ও পশু পালনের শিল্পায়নের ওপর সরকার যথাযোগ্য সর্বাধিকারের গুরুত্ব দেয় । যে সব প্রকল্প দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বেশি কল্যাণ বয়ে আনবে না , সে সব প্রকল্পকে ঋণের বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে না ।

    ঋণ কোম্পানির কর্মীরা অল্পবয়সী , কিন্তু তাদের পেশাগত নৈপুণ্য অনেক উত্কৃষ্ট । তাদের মধ্যে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ছেং লি ইউ জ্যেষ্ঠ । তার বয়স ৩৫ বছর । কোম্পানির কর্মী হতে হলে প্রথমতঃ স্থানীয় অধিবাসী , দ্বিতীয়তঃ গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি এবং তৃতীয়তঃ অন্যদের সঙ্গ সুষ্ঠু বিনিময়ে সামর্থ থাকতে হয় । এ বছরের মার্চ মাসে ঋণ দেয়ার পরিমাণ ও কাজ দ্রুত বাড়াবার পাশাপাশি কোম্পানি এ ক্ষেত্রে আরো ৫ জন কর্মী নিয়োগ করেছে ।

    কর্মী ইউন লি চেনের বয়স ২৮ বছর । তিনি এমন একজন কর্মী , যার প্রচেষ্টায় কোম্পানিতে ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা তিন শোরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে । এই সংখ্যা কোম্পানির সকল ঋণ গ্রহীতার মোট সংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ । ঋণ দেয়ার জন্য তিনি মাঝে মাঝে পশু পালন অঞ্চলে যান । সেখানে লোক সংখ্যা কম এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত ।

    গত এক বছরে ঋণ কোম্পানির কাজ দ্রুত প্রসারিত হয়েছে । কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ছেং লি ইউ বলেন , কোম্পানির ঋণ দেয়ার অবস্থা ভাল । এ পর্যন্ত কোনো অচল ঋণের সমস্যা দেখা দেয় নি । এ বছরের মার্চ মাসে কোম্পানির আয় ও ব্যয়ের ব্যাপারে ভারসাম্য দেখা দিয়েছে । এ বছরের শেষার্ধে কোম্পানির বেশি মুনাফা হবে ।

    বর্তমানের বৃদ্ধির প্রবণতা অনুযায়ী কোম্পানির ঋণ দেয়ার পরিমাণ ২ কোটি ইউয়ানে দাঁড়াবে । কোম্পানির একটি নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ কোম্পানির ঋণ দেয়ার পরিমাণ অবশেষে ২০ কোটি ইউয়ানে পৌঁছবে । ফলে জেলার কৃষক ও পশু পালকদের আর্থিক চাহিদার সঙ্গে তা সামঞ্জ্যপূর্ণ হবে । এ লক্ষ্য এ বছরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন বলে অনুমান করা হচ্ছে ।

    এতক্ষণ শুনলেন সেই গ্রাম এই জীবন ।(থান ইয়াও খাং)