চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ১০ জুন পেইচিংয়ে বলেছেন , এখন সিছুয়ান প্রদেশের দুর্গত এলাকায় ব্যাপকভিত্তিক জরুরী ত্রাণচিকিত্সার কাজ মোটামুটি শেষ হয়েছে । বেশির ভাগ আহত লোক সুষ্ঠুভাবে চিকিত্সা পেয়েছেন । এর পর চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ নানা ধরণের ব্যবস্থা নেবে যাতে গুরুতর দুর্যোগের পর কোনো সংক্রামক রোগ দেখা না দেয়।
এ দিন আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও ছুন আন বলেন , ১২ মে সিছুয়ানের ওয়েনছুয়ান ভূমিকম্প হওয়ার পর চীনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ দুর্গত এলাকায় চিকিত্সা, সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ এবং তত্ত্বাবধান কাজের জন্য ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী পাঠায় । জরুরীভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় ২০০০ এ্যাম্বুলেন্স, গণ স্বাস্থ্যহানিকররোগ প্রতিরোধ গাড়ি ও গণ স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান গাড়িও পাঠানো হয় । এর পাশাপাশি " ভূমিকম্প উদ্ধার ও ত্রাণ এবং গণ স্বাস্থ্যহানিকর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ"সহ ধারাবাহিক কার্যক্রম ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় । এর ফলে ভূমিকম্প উদ্ধার ও ত্রাণ এবং চিকিত্সার কাজ সুষ্ঠুভাবে চালানো গেছে । মাও ছুনআন বলেন, বর্তমানে দুর্গত এলাকায় ব্যাপকভিত্তিক জরুরী চিকিত্সা কাজ মোটামুটি শেষ হয়েছে । আহতরা সুষ্ঠু চিকিত্সা পেয়েছেন । এক হাজারেরও বেশি আহত লোককে অন্য বিশটিরও বেশি প্রদেশে স্থানান্তর করা হয়েছে । গুরুতর আহত লোকেরা দেশের বিখ্যাত বিশেষজ্ঞদের চিকিত্সাধীন রয়েছেন ।
মাও ছুনআন বলেন , পরবর্তীকালে স্বাস্থ্য বিভাগগুলো চিকিত্সার শক্তি জোরদার করে আহতদের জীবন বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চচেষ্টা চালাবে । চোখের ছানির শল্যচিকিত্সা এবং নারী রোগ চিকিত্সার জন্য স্থানীয় চিকিত্সকদেরকে সংগঠিত করা হবে এবং দুর্গত এলাকার জনসাধারণের মানসিক রোগ চিকিত্সা জোরদার করবে ।
মুখপাত্র মাও ছুনআন উল্লেখ করেন , গুরুতর দুর্যোগের পর যাতে কোনো সংক্রামক রোগ না হয় তা নিশ্চিত করা বর্তমান স্বাস্থ্য ও চিকিত্সার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ । গণ স্বাস্থ্যহানিকর সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও তত্ত্বাবধানসহ নানা কাজ দুর্গত এলাকায় সার্বিকভাবে চালানো হয়েছে । ১০ জুন পর্যন্ত সিছুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় কোনো গুরুতর সংক্রামক রোগ ও গণ স্বাস্থ্যহানিকর আকস্মিক ঘটনা ঘটেনি ।
মাও ছুনআন এও বলেছেন , দুর্গত এলাকায় সংক্রামক রোগ হওয়ার ঝুঁকি এখনো রয়েছে । যে জায়গায় সংক্রামক রোগ হওয়ার আশংকা রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ সে সব জায়গায় বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে । এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এক , দুর্গতদের যৌথভাবে থাকার জায়গা । বহু দুর্গতদের থাকার জন্য একই জায়গায় জড়ো করার কারণে তাদের সংক্রামক রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে । এখন আমরা এই সব জায়গায় সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ এবং তত্ত্বাবধানের কাজ জোরদার করেছি । দুই, অতীতের অবিজ্ঞতা অনুযায়ী ওয়েনছুয়ান ভূমিকম্পের মতো ভয়াবহ ভূমিকম্প হওয়ার পর পানি ও খাদ্যের নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে মিলে পানির উত্স থেকে নাগরিকদের কাছে পানি পৌঁছানোপর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়ার ওপর তত্ত্বাবধান জোরদার করেছে ।
জানা গেছে , এখন বিভিন্ন দুর্গত এলাকায় সংক্রামক রোগ সম্পর্কে " দৈনিক রিপোর্ট" ব্যবস্থা চালু রয়েছে । মাও ছুনআন বলেন , ভূমিকম্পে দুর্গত এলাকার সংক্রামক রোগ সম্পর্কিত রিপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা গুরুতর ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে । কিন্তু মোবাইল নেটওয়ার্ক নানা ব্যবস্থার মাধ্যমে সংক্রামক রোগ তত্ত্বাবধানের কাজ সকল দুর্গত জেলা , থানা ও দুর্গতদের অস্থায়ী আবাসিক এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে । স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে যক্ষা, যকৃতের প্রদাহ, উদরাময়সহ কিছু সংক্রামক রোগের রিপোর্ট পেয়েছে ।কিন্তু কোনো গুরুতর সংক্রামক রোগ ও গণ স্বাস্থ্যহানিকর আকস্মিক ঘটনা আবিস্কার হয়নি । --চুং শাওলি
|