v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-11 17:28:18    
ইইউ-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনে কোন ফলাফল হয়নি

cri
১০ জুন দিনব্যাপী ইইউ-আমেরিকা শীর্ষ সম্মেলন স্লোভিনিয়ার বরদোতে শেষ হয়েছে। দু'পক্ষ ইইউ-মার্কিন অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সন্ত্রাস দমন, ইরানের পরমাণু সমস্যা এবং জ্বালানীর নিরাপত্তা, জলবায়ুর পরিবর্তন এবং খাদ্যের দামসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে এখনও প্রতিশ্রুতি বাস্তায়নের চেয়ে প্রাপ্তির দিক গুরুত্ব পেয়েছে। এতে বেশি নির্দিষ্ট কোন সাফল্য অর্জিত হয় নি।

দীর্ঘকাল ধরে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক মিত্র ছাড়াও পরম্পরের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং পুঁজি বিনিয়োগকারী। ১৯৯০ সালে নিয়মিত আলোচনা ব্যবস্থা শুরু করার পর ইইউ-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলন দু'পক্ষের উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। গত বছরের শীর্ষ সম্মেলনে দু'পক্ষের মধ্যে 'অ্যাটলান্টিক মহাসাগরীয় অর্থনীতির একীকরণ কর্মসূচী' এবং আকাশ সীমা উন্মূক্ত করাসহ বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরি হয়েছে এবং দু'পক্ষের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা ও জোরদার করার লক্ষ্যে 'অ্যাটলান্টিক মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক পরিষদ' প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবারে জর্জ বুশ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সর্বশেষ বারের মতো ইইউ-মার্কিন সম্মেলনে অংশ নেন। তার লক্ষ্য হচ্ছে ইউরোপীয় মিত্রদেরকে ইরানের ওপর কট্টর দৃষ্টিভঙ্গী আরোপের জন্য প্রচারনা চালানো এবং পূর্ব ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা স্থাপনে ইইউ'র সমর্থন পাওয়া।

কিন্তু ইইউ কার্যমেয়াদ সম্পন্ন হওয়ার বুশের এই প্রভাবে তারা প্রভাবিত হননি। যমন ইরানের পরমাণু সমস্যা। এর আগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুমান অনুযায়ী সম্ভবতঃ কয়েক বছরের মধ্যে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরী করার ক্ষমতা অর্জন করবে। পাশাপাশি আগামী বছর জানুয়ারী মাসে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তবর্তি কালের কর্মধারার বাস্তবায়ন কালীণ সময়কে বুশ সরকার খুব বিপদ সময় হিসেবে মনে করবে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র আশা করে ইউরোপীয় দেশগুলো এই সময় দৃঢ় ভুমিকা পালন করবে। তবে সম্মেলনের পর এক যৌথ বিবৃতিতে দু'পক্ষ আগের মতো ইরানের প্রতি পরমাণু সমস্যায় তার আন্তর্জাতিক কর্তব্য মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়াও ইরানের পরমাণু সমস্যার জটিলতাও ইইউ-মার্কিন একবারের শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে সমাধান করা যায় নি।

সম্মেলনের পর যে যৌথ বিবৃতি দেয়া হয়েছে তার সঙ্গে পূর্ব ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা স্থাপন সংক্রান্ত সমস্যার কোন সম্পর্ক নেই। খবরে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সম্মেলনের পর বিবৃতি প্রকাশ করার পরিকল্পনা ছিল। যাতে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র এক সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য চেষ্টা চালানোকে স্বাগত জানানো এবং এ ব্যবস্থার ফলে সৃষ্ট বেশ কিছু নিরাপত্তা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা গভীরতর করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ, ইইউ কমিটির চেয়ারম্যান জোস মানুয়েল বারোসো এবং ইইউ'র পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্র স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ানেজ ইয়ানসা ঐ যৌথ বিবৃতিতে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু বলেন নি। বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে, ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিক মিত্র হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘর্ষ ও দ্বন্দ্ব এখনও বিদ্যমান। আরো দূরে কথা হচ্ছে ইরাক যুদ্ধ বাঁধানো বুশের পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলোতে জনপ্রিয়তা নেই। সুতরাং বুশের বাকি ৭ মাসের কার্যমেয়াদে ইইউ'র নেতৃবৃন্দ তাদের মনোযোগ ও প্রত্যাশা বুশের উত্তরাধিকারীর ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

জলবায়ু সমস্যার ব্যাপারে শীর্ষ সম্মেলনের পর এক সংবাদ ব্রিফিং-এ ইইউ পালাক্রমিক সভাপতি রাষ্ট্র স্লোভিনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইয়ানেজ ইয়ানসা বলেন, গ্রীনহাউসের বিষাক্ত গ্যাস নিগর্মন হ্রাসসহ বিভিন্ন সমস্যায় ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে দু'পক্ষের নেতৃবৃন্দ আবার জোর দিয়ে বলেন, তারা এক সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিশ্বের সম্মুখীন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করবেন। ইইউ কমিটির চেয়ারম্যান বারোসো বিশ্বের সবেচেয়ে উন্নত দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ গ্রীনহাউসের বিষাক্ত গ্যাস নিগর্মন হ্রাস সমস্যা নিরসনে আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি বুশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, সম্ভবতঃ যুক্তরাষ্ট্র বুশের কার্যমেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যায় চুক্তিতে পৌঁছাবে।

এছাড়া, কার্যমেয়াদ শেষ পর্যায়ে এসে বুশ এবারের শীর্ষ সম্মেলনের সুযোগ নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলোতে তার বিদায়ী সফর শুরু করেন। তিনি জার্মানী, ইতালি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনে আটদিনব্যাপী সফর করবেন। কীভাবে ইইউ-মার্কিন দীর্ঘ দিনের মতভেদ কাটিয়ে উঠে আগামী বছরগুলোতে সম্প্রসারিত হতে থাকা বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে। তা বুশের এবারের সফর অব্যাহতভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবে।