v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-09 18:35:58    
মালিকির ইরান সফরের আসল উদ্দেশ্য

cri

    ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূরি আল-মালিকি ৮ জুন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময়ে জোর দিয়ে বলেছেন, একটি স্থিতিশীল ইরাক এ অঞ্চল তথা সারা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য অনুকূল। মালিকি ৭ জুন ইরানকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ইরাক ইরানের স্বার্থ ক্ষুন্ন করার প্লাটফর্মে পরিণত হবে না। বিশ্লেষকরা মনে করেন, মালিকির ইরান সফরের সঙ্গে বর্তমান 'ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর মর্যাদা চুক্তি' সংক্রান্ত আলোচনার নিবিড় সম্পর্ক আছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র 'ইরাকে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর মর্যাদা চুক্তির' প্রস্তাব করেছে। ইরান এতে উদ্বিগ্ন এবং এর তীব্র বিরোধিতা করেছে। মালিকির এবারের ইরান সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরানকে সান্ত্বনা দেয়া।

    জাতিসংঘ অনুমোদনকৃত ইরাকে মার্কিন বাহিনীর কার্যমেয়াদ এ বছরের শেষ নাগাদ শেষ হবে। এ বছরের মার্চ মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাক দীর্ঘকালীন সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করে। ভবিষ্যতে ইরাকে মার্কিন বাহিনীর মোতায়েনের সমস্যা আলোচ্য বিষয় হিসবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দু'পক্ষ জুলাই মাসের আগে চুক্তি স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা নিয়েছে। যাতে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী সামরিক অস্তিত্বকে বৈধতা দেওয়া যায়। কিন্তু ইরাকের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ইরান এ চুক্তি নিয়ে অসন্তুষ্ট। নিজের নিরাপত্তা বিবেচনা করে ইরান অবশ্যই দেখতে চায় না যে, তার 'প্রথম শত্রু' যুক্তরাষ্ট্র নিজের দরজার সামনে অব্যাহতভাবে এক লাখেরও বেশি সৈন্য মোতায়েন রেখেছে। ফলে চুক্তির বিষয়বস্তু প্রকাশের পর দ্রুত ইরান এর তীব্র বিরোধিতা করে। ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আকবর হাশেমি রাফসানজানি বলেন, ইরাক ও এই অঞ্চলের জনগণ ইরাক সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষর হতে দেবে না। এ চুক্তির মাধ্যমে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের 'চিরস্থায়ী দখল' বাস্তবায়িত হবে। চুক্তির আসল অর্থ হচ্ছে ইরাকী মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রের দাসে পরিণত করা। এ পরিপ্রেক্ষিতে মালিকি ৭ জুন বিকালে প্রতিনিধি দল নিয়ে তেহরানে পৌঁছে ইরানে তাঁর দু'দিনব্যাপী সফর শুরু করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি এ নিয়ে দু'বার ইরান সফর করলেন।

    ইরান পৌঁছানোর দিনে গভীর রাতে মালিকি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মানুচেহর মোত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ইরাক ইরানের স্বার্থ ক্ষুন্ন করার প্লাটফর্মে পরিণত হবে না। তিনি আরো জোর দিয়ে বলেন, ইরাক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য 'ইরাকে মার্কিন বাহিনীর মর্যাদা সংক্রান্ত চুক্তি' ইরানের স্বার্থকে ক্ষুন্ন করবে না। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরাক ইরানকে স্থিতিশীল করতে চায়, যাতে এ অঞ্চলের নিরাপত্তাগত পরিবেশ স্থিতিশীল থাকে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদি ইরাক এই চুক্তি স্বাক্ষর করে। তাহলে তা ইরান ও ইরাকের সম্পর্কের ওপর অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। প্রথমতঃ ইরাক এর জন্য ইরানকে অখুশি করতে চায় না। কারণ বর্তমানে শিয়া মুসলমান ও কুর্দিশের ক্ষমতাসীন ইরাক সরকারের প্রতিবেশী শিয়া সম্প্রদায়ের দেশ ইরানের সমর্থন পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়তঃ ইরাক দেখতে চায় না যে, এই চুক্তির প্রভাবের কারণে ইরান অব্যাহতভাবে ইরাকের শিয়া সম্প্রদায়ের সশস্ত্র শক্তিকে সমর্থন করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংগ্রাম করছে।

    উল্লেখ্য যে, মালিকির সফরের আগে তাঁর মুখপাত্র জানিয়েছেন, মালিকি আশা করেন, ইরানের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি তথাকথিত ইরান ইরাকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার প্রমান নিয়েও আলোচনা হবে। এ বছরের মে মাসে ইরাক ইরানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। তারা ইরানকে তথাকথিত ইরাকের শিয়া সম্প্রদায়ের সশস্ত্র শক্তিকে ইরানের সমর্থন দেয়ার প্রমাণ হাজির করে। ইরাক একাধিক বার বলেছে, তারা ইরাকের ভূভাগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের যুদ্ধ দেখতে চায় না। ফলে বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেন, চুক্তির বিষয় নিয়ে ইরানকে ইরাকের সান্ত্বনা থেকে কিছুটি কার্যকর হবে। কিন্তু ইরান সহজে আপোষ করবে না। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)