v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-06 20:57:03    
অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন থেকে অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন-মেক্সিকো অলিম্পিক কমিটির চেয়ারম্যান ফিলিপি মুনোজ

cri
    ৪০ বছর আগে মেক্সিকোর ১৭ বছর বয়সের একটি ছেলে অলিম্পিকে পুরুষদের ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে স্বর্ণ পদক পেয়েছিলেন। ৪০ বছর পর এখন তিনি মেক্সিকো অলিম্পিক কমিটি'র চেয়ারম্যান হয়ে দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে নিজের অবদান রাখছেন।

    ১৯৬৮ সালের আক্টোবর মাসে মুনোজ প্রথম বারের মত কোনো অলিম্পিক গেমসে অংশ নেন। যদিও তখন কারোর তাকে নিয়ে তেমন উচ্চাশা ছিল না। কিন্তু পুরুষদের ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায়, শেষ মুহূর্তে মুনোজ সামনে এগিয়ে যায়। দেশের জন্য সাঁতারে প্রথম স্বর্ণ পদক জেতার ঘটনা স্মরণ করে মুনোজ বলেন, এটা তখনকার সব সহায়ক পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত।

    "অলিম্পিকে আমার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় আমি তখন খুব খুশি। বলা যায় আমি খুব ভাগ্যবান। কারণ তখন আমার শরীরের অবস্থা খুব ভাল ছিল এবং অনেকের সাহায্য ও ভাল প্রশিক্ষণ পেয়েছি। তাছাড়া, সাঁতার স্টেডিয়াম আমার বাড়ি থেকে খুব কাছে, আমার নিজের বাসায় আমি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। এজন্যই আমি সফল হয়েছি। আগে ভাবিনি যে আমি চ্যাম্পিয়ন হবো, কিন্তু তখন মনে মনে বললাম, এটা একটি খুব ভাল সুযোগ, আমাকে কাজে লাগাতেই হবে।"

    স্বর্ণ পদক পাওয়ার পর মুনোজ দেশের প্রধান ক্রীড়া তারকা হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রথমে গর্ববোধ ও আনন্দ ভাসার পর তিনি ক্রমাগতভাবে নিজের কাঁধের দায়িত্ব উপলব্ধী করতে থাকেন।

    "চীন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও জাপান ক্রীড়া ক্ষেত্রে এসব শক্তিশালী দেশের মতো না হলেও মেক্সিকোর ক্রীড়া ক্ষেত্রের উন্নয়ন হচ্ছে। তবে তা খুব দ্রুত নয়। রাতারাতি বিখ্যাত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু সমস্যাও চলে আসে। যেমন মানুষের প্রত্যাশা, আমার প্রতিটি কাজের ওপরে তাদের নিবিড় দৃষ্টি। তাই আমাকে খুব সাবধানে সব কাজ করতে হয়। এটা আমার কাছে একটি বড় দায়িত্ব হয়ে উঠেছে।"

    অনেকেই মনে করেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে সব কিছু পেতে পারেন। কিন্তু মুনোজ মনে করেন একবারের বিজয় ইতিহাস হয়ে গেছে। নিজেকে অব্যাহতভাবে উন্নত করতে হবে, যাতে আরো সুযোগ কাজে লাগানো যায়।

    "বিখ্যাত হলে কিছু সুবিধা পাওয়ার যায়, তবে তা যথেষ্ট নয়। আরো বেশি সাফল্য পেতে চাইলে পড়াশোনা এবং নিজেকে উন্নত করা দরকার। যেমন আমার অলিম্পিক কমিটি'র চেয়ারম্যান হওয়ার পেছনে অনেক কারণ আছে। যেমন, আমি অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টের ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। এছাড়াও আছে আমার বাবা মা'র প্রস্তাব। এসব আমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।"

    ছোটবেলা থেকে মুনোজ খেলায় খুব আগ্রহী ছিলেন। অলিম্পিক তারকা হওয়ার পর তিনি অব্যাহতভাবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে কাজ করে গেছেন। বিংশ শতাব্দীর আশি-এর দশকে তিনি মেক্সিকো ক্রীড়া লীগের চেয়ারম্যান ছিলেন। অনেক বার মেক্সিকো ক্রীড়া প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে দেশের খেলোয়াড়দের নিয়ে আমেরিকার ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ২০০১ সালে তিনি মেক্সিকোর অলিম্পিক কমিটি'র চেয়ারম্যান হন। ২০০৫ সালে আবার অলিম্পিক কমিটি'র চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি নিজের মাসিক ৯০০ ডলারের আয় না নিয়ে তা মেক্সিকো ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য দিয়ে দেন। এই পদক্ষেপ মেক্সিকোর ক্রীড়া লীগের সম্মান ও মর্যাদা পায়।

    এখন মুনোজের বয়স ৬০ ছাড়ালেও তাকে একজন ক্রীড়াবিদ বলেই মনে হয়। তিনি খুব রসিক মানুষ। ক্রীড়া ইভেন্ট সম্পর্কে বলতে গেলে তার কথা যেন শেষই হতে চায় না। মুনোজ বলেন, ক্রীড়ার উন্নয়ন হলে যুব প্রজন্মের জন্য বিশেষ কল্যাণ হবে।

   "ক্রীড়ার চেতনা থেকে আমি অনেক শিখেছি। যে কোনো কাজ সহজ নয়, নিজের চেষ্টা ছাড়াও ন্যায্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও দরকার। জয়-পরাজয় হোক না কেন, এখান থেকে শিশুরা বুঝতে পারবে জীবনের নিয়ম। অলিম্পিক হল নতুন বন্ধুদের আনন্দ মেলা। খেলার মাধ্যমে মানুষ শরীর ও যোগাযোগের শিক্ষা পেতে পারে।"

    অবশেষে মুনোজ পেইচিং অলিম্পিক সম্পর্কে তার প্রত্যাশার কথা বলেছেন:

    "আমি বিশ্বাস করি পেইচিং অলিম্পিক খুব সফল এবং চীনা বৈশিষ্টের হবে। অলিম্পিক নিয়ে সবারই নিজের প্রত্যাশা আছে। এখন অলিম্পিক শুরু হতে বেশি দিন বাকি নেই। কিন্তু শুরু হওয়ার পর খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। তাই সবার এবারের অলিম্পিক ভালভাবে উপভোগ করা উচিত।এটি একটি বিশ্ব আনন্দ মেলা হবে এবং আমরা সবাই সেখানে থাকবো।"(ইয়াং ওয়েই মিং)