v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-06 17:31:44    
প্রৌঢ় বয়স মানুষের জীবনের একটি সোনালি সময়পর্ব

cri
    সেদিন সংবাদদাতা টেলিভিশনে বৃদ্ধবৃদ্ধা সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠান দেখেছেন । বৃদ্ধবৃদ্ধারা কেমন করে' যে শেষ জীবণ কাটাবেন , সে সম্বন্ধে একজন বয়স্কসমস্যা বিষয়ক প্রবীন বিশেষজ্ঞ বিবৃত করেছেন । অনুষ্ঠানটি দেখে এই ক্ষেত্রে সংবাদদাতা অনেক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন । আসলে এখন বহু ক্ষেত্রে প্রৌঢ় আর বয়স্কদের মধ্যে বিশেষ একটি স্পষ্ট সীমা নেই । কোনো কোনো ইউনিটে যারা চল্লিশোর্ধ বয়সে অবসর নিয়েছেন , তাদের সংখ্যা কম নয় । চীনের একটি প্রবাদে বলা হয়েছে , দূরদর্শীদিক থেকে স্বাস্থ্যের জন্য কোনো চিন্তা আর যত্ন না থাকলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে । প্রৌঢ় বয়স মানুষের জীবনের একটি সোনালি সময়পর্ব ।এই সময়পর্বে ব্যাংকে উপযুক্ত সন্চয় করতে হবে এবং নিজের ভবিষ্যতের জন্য যথাযথ বিবেচনা করতে হবে । জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আগে থেকে কিছু প্রস্তুতি নিলে আর বস্তুগত ও মানসিক দিক থেকে বেশী সন্চয় করলে মানুষের শেষ জীবনে খাওয়া আর পরার কোনো চিন্তা থাকবে না এবং তারা সুখী আর নিরাপদ থাকবেন । তাহলে মানুষের শেষ জীবনে কোনো চিন্তা না থাকার জন্য যে কি কি কাজ করতে হবে ? বিশেষজ্ঞরা বলেছেন নিম্নলিখিত তিনটি কাজ করতে হবে ।

    প্রথমতঃ সুস্থ শরীর আর সুন্দর মন বজায় রাখতে হবে । এটাই মানুষের স্বাস্থ্যের মূল ভিত্তি । একটা বানিজ্যিক বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে , ৬০ বছর বয়সী লোকের হৃদয় ৩০ বছর বয়সী লোকের মতো । মানুষকে প্রৌঢ় থেকেই নিজের স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখতে হবে । এমনই করলেই যখন বয়স্ক , তখন সুস্থ থাকতে পারে । এখন সমাজে মানুষে মানুষে প্রতিদ্বন্দিতা দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে । প্রৌঢ় হিসেবে তাদের প্রবীণ ও বাচ্চাদের লালন পালন করতে হয় । সংসার চালাবার জন্য বাড়ি , চাকরি , পয়সা আর সন্তান সন্ততিদের উপর মনোযোগ দিতে হয় । তাদের কাঁধের উপরে বোঝা বেশী । স্বাস্থ্যের উপরেও চাপ বেশী । আমাদের কাছে বয়স্কদের মধ্যে যারা মারা গেছে , তাদের সংখ্যা কম নয় । সুতরাং মানুষ যখন প্রৌঢ় , তখন তাদের নিজের স্বাস্থ্যের উপর সব সময় গুরুত্ব দেয়া উচিত । বরং সাময়িক স্বার্থেরজন্য নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি উদাসীন হওয়া উচিত নয় । স্বাস্থ্য না থাকলে সব কিছু শেষ হবে । সুষ্ঠু মনোবল মানুষের জীবনের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা আর উদারতা থেকে এসেছে । মানুষের জীবনে মর্যাদা আর মুনাফা সত্যই গুরুত্বপূর্ণ । কিন্তু স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন এর চেয়ে আরো মূল্যবান । এই ভিত্তি না থাকলে কোনো কিছু নেই । প্রৌঢ়কালে স্বাস্থ্যের বদলে পয়সা আর মর্যাদা বিনিময় করা হলে বয়স্ককালে প্রচুর টাকা পয়সার বদলে স্বাস্থ্যবিনিময় করা যাবে না ।

    দ্বিতীয়তঃ শেষ জীবনে জরুরী প্রয়োজনের জন্য উপযুক্ত সন্চয় থাকতে হবে । প্রৌঢ়কালে বহু খরচ লাগে । যেমন বয়স্কদের লালন পালন করা , বাচ্চাদের লেখাপড়া , বিয়ে করা , আত্মীয় ও বন্ধু বান্ধবদের সংগে আদান প্রদান করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সব কিছুতে খরচ লাগে । সুতরাং ব্যাংকে একটু বেশী আমানত সন্চয় করতে হবে । কারণ অবসর নেয়ার পর বৃদ্ধবৃদ্ধাদের অবসর ভাতা কিছুটা বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও অন্য কর্মীদের চেয়ে বেশী নেই । সুতরাং হাতে আমানত থাকলেই শেষ জীবনের নিশ্চয়তা থাকবে । বৃদ্ধবৃদ্ধাদের আমানত সন্তান সন্ততিদের বা অন্যদের বন্টন বা উপহার দেয়া যাবে না । বৃদ্ধবৃদ্ধাদের হাতে যত বেশী আমানত আছে , তাদের মনে তত বেশী নিশ্চয়তা থাকবে । তা ছাড়া বৃদ্ধবৃদ্ধাদের এই অর্থনৈতিক ভিত্তি বাড়াবার জন্য বীমাও কিনতে হবে । ফলে তাদের সুস্থ হতে পারে এবং শক্তিশালী বস্তুগত নিশ্চয়তা থাকবে ।

    তৃতীয়তঃ সুখী ও আনন্দময় জীবন কাটাবার জন্য নিজের সখ ও কৌতুহল থাকতে হবে । বাস্তব জীবনযাপনে আমরা লক্ষ্য করেছি , যারা সুস্থ আর সুখী জীবণ কাটান , তাদের যার যার সখ ও কৌতুহল আছে । তাদের মধ্যে কেউ কেউ চিত্র ও হস্ত- লিপি শিল্প পছন্দ করেন , কেউ কেউ বা তাস খেলা ও নানা ধরনের শরীর চর্চা পছন্দ করেন ।এই সব সখ ও কৌতুহলে শেষ জীবনের জীবনযাত্রা সমৃদ্ধ করে' দেয়া হয়েছে । এই সব তত্পরতায় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের শরীর ও মস্তিষ্কও চর্চা করা হয়েছে । যারা কোনো কর্মনিষ্ঠ নন আর যাদের চিন্তা বেশী , তাদের সুস্থ থাকা আর দীর্ঘায়ু হওয়া কঠিন । সুতরাং প্রৌঢ় বয়স থেকেই আপনাদের সখ ও কৌতুহল গড়ে তুলতে হবে । এমনই করলে আপনাদের শেষ জীবন অবশ্যি আরো সমৃদ্ধিশালী হবে ।