তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মের দুটি প্রধান সম্প্রদায় হচ্ছে নিংমা ও সামা। এর ভিত্তিতে চারটি গোষ্ঠীও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
নিংমা গোষ্ঠী হচ্ছে তিব্বতে সবচেয়ে প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। ১১ শতাব্দীতে নিংমা গোষ্ঠী সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় নিয়ম ও মন্দির কেন্দ্রীক আনুষ্ঠানিক ধর্মসম্প্রদায় হিসেবে গড়ে উঠে। ষোড়শ শতকে তিব্বত প্রশাসকের জোরালো সমর্থনে নিংমা গোষ্ঠীর লক্ষণীয় উন্নয়ন হয় এবং বড় মন্দির সে সময় নির্মিত হয়।
গেগয়ু গোষ্ঠী ১১ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই গোষ্ঠী গুরু ও ছাত্রছাত্রীদের মুখে মুখে ধর্মীয় জ্ঞান প্রচারের কাজ শুরু করে। তারা বিশেষ করে জনবসতিহীন এলাকায় ধর্মীয় অনুশীলন করতে থাকে। গেগয়ু গোষ্ঠীর ধর্মাবলম্বীরা আজীবন লম্বা চুল রাখে এবং পাহাড়ী গুহায় বসবাস করে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ইয়াংচোইয়ো হ্রদের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত শানডিং মন্দির হচ্ছে তিব্বতের একমাত্র জীবন্ত নারী বৌদ্ধের গেগয়ু গোষ্ঠীর মন্দির। গেগয়ু গোষ্ঠীই প্রথমে জীবন্ড বৌদ্ধ ব্যবস্থা চালু করে।
সাগয়া গোষ্ঠী ১০৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ইউয়ান রাজবংশের সময় এই গোষ্ঠী সবচেয়ে সমৃদ্ধ ছিলো। ১৩ শতাব্দীতে সাগয়া গোষ্ঠীর প্রধান ও তত্কালীন মঙ্গোলিয় রাষ্ট্র বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম চীনের কানসু প্রদেশে তিব্বত প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং তিব্বতের বিভিন্ন সম্প্রদায়কে এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য চিঠি পাঠান। ১২৭১ সালে ইউয়ান রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকেই তিব্বত আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের ইউয়ানসহ পরের সকল রাজবংশের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একীভূত অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে সাগয়া গোষ্ঠী তিব্বতের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ক্ষমতা পাওয়ার পর তিব্বতে রাজনীতি ও ধর্মের একীভূত শাসন ব্যবস্থা চালু করে।
১৫ শতাব্দীর প্রথম দিকে, গেলুগ গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জোগেপাচেন ধর্মাবলম্বীরা কঠোরভাবে নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি কৃষি কাজ পরিত্যাগ করে, সারা জীবন বিয়ে না করার নীতিকে মেনে চলতে শুরু করে। জোংগেপাচেন ও তাঁর ছাত্ররা মাথায় হলুদ রংয়ের এক বড় টুপি পড়ে। ফলে গেলুগ গোষ্ঠীকে সাধারণতঃ হলুদ ধর্মাবলম্বী বলা হয়। দালাই ও পানচেন হচ্ছে এই গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় দু'জন জীবন্ত বৌদ্ধ। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)
|