v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-06-02 17:51:00    
নওয়াজ শরিফ উপনির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন

cri

    পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ১ জুন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ জাতীয় পরিষদের দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্টি মুসলিম লীগ(এন) এর নেতা নওয়াজ শরিফের ২৬ জুন অনুষ্ঠেয় পার্লামেন্টের উপনির্বাচনে অংশ গ্রহণ অনুমোদন করেছে। কিছু দিন ধরে শান্ত থাকা পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।

    গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শরিফের বিরুদ্ধে ফৌজদারী অভিযোগ থাকায় নির্বাচন কমিশন এ বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে। নির্বাচনের পর পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের কিছু আসন শূন্য থাকায় এই উপনির্বাচন হতে যাচ্ছে। শরিফ এতে অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করেন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, উপ নির্বাচনে শরিফের অংশগ্রহণ পাকিস্তানের রাজনীতিতে দু'ধরনের প্রভাব ফেলবে।

    প্রথমতঃ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ আরো বেশি চাপের মুখে পড়বেন। পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) গত ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা কমানোর উদ্দেশ্যে সংবিধান সংশোধনী বিল আনার কথা প্রকাশ করে। খুব শিগগির পার্লামেন্টে এই সংশোধনী বিলের ওপর ভোটাভুটির প্রস্তুতি চলছে। তা ছাড়া পিপিপির যুগ্ম চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি ২৭ মে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করার পর বলেছেন, দু'পক্ষ প্রেসিডেন্ট মুশাররফের পদত্যাগের পক্ষে একমত হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে শরিফ দু'বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৯ সালে মুশাররফ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শরিফ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। এরপর শরিফ বিদেশে নির্বাসনে চলে যান। এ বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে শরিফের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ(এন) জাতীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্টির মর্যাদা পায় এবং বৃহত্তম পার্টি ---পিপিপির নেতৃত্ব কোয়ালিশন সরকারে যোগদান করে। মুসলিম লীগের(এন) পিপিপির নেতৃত্ব সরকারে যোগ দেয়ার প্রথম শর্ত ছিল মুশাররফের পতদ্যাগ এবং বরখাস্ত বিচারপতিদের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা। এ নিয়ে শরিফ ও মুশাররফের মধ্যকার মতভিন্নতার সহজ সমাধান খুঁজে পাওয়া যায় নি। এ কারণে উপনির্বাচনে শরিফ জয়ী হয়ে জাতীয় পার্লামেন্টে যোগ দিলে মুশাররফ নিঃসন্দেহে আরো বড় ধরনের চাপের মুখে পড়বেন।

    দ্বিতীয়তঃ এতে জাতীয় পার্লামেন্টে পিপিপির প্রভাব ও শক্তি কিছুটা হলেও কমার সম্ভাবনা থাকবে। পিপিপি ও মুসলিম লীগ(এন) এ বছরের মার্চ মাসে কোয়ালিশন সরকার গঠনের ঘোষণা করলেও এই দুটি দলের মধ্যে এখনো বড় ধরনের মতভেদ রয়ে গেছে। মুশাররফের পদত্যাগের ব্যাপারে শরিফ এখনো অনড়। অন্যদিকে পিপিপি চাইছে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করে নিজেদের স্বার্থ সুসংহত করতে। এ ছাড়া শরিফ গত বছরের ৩ নভেম্বর মুশাররফ কর্তৃক অপসারিত সুপ্রিম কোটের সাবেক প্রধান বিচারপতি ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীসহ ৬০ জনেরও বেশি বিচারপতিকে দায়িত্বে পুনর্বহালের শর্ত আলোপ করেন। পিপিপির সংবিধান সংশোধনী বিল অনুযায়ী, বিচারপতিদের দায়িত্বে পুনর্বহালের কথা বলা হলেও প্রধান বিচারপতির কার্যমেয়াদ কমিয়ে তিন বছর করা হবে। কিন্তু সাবেক প্রধান বিচারপতি ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীর কার্যমেয়াদ এ বছরের জুন মাসে তিন বছর পূর্ণ হওয়ার কথা। সুতরাং তাঁর প্রধান বিচারপতি থাকার যোগ্যতা তখন শেষ হয়ে যাবে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, যদিও পিপিপি জাতীয় পার্লামেন্টের বৃহত্তম পার্টি হলেও শরিফ দু'দু'বার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী থাকায় পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে তাঁর যথেষ্ঠ প্রভাব ও শক্তি রয়ে গেছে। শরিফ জাতীয় পার্লামেন্টে প্রবেশ করলে অবশ্যই পিপিপির প্রভাব ও শক্তি কমবে। তা ছাড়া পিপিপি থেকে আসা প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির ওপরও প্রভাব ফেলবে। ফলে পিপিপি জারদারিকেও উপনিবার্চনে অংশ নেয়ার প্রস্তাব করেছে। তাহলে জাতীয় পার্লামেন্টে কিছুটা ভারসাম্য বজায় থাকবে।

    অন্যান্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় মুশাররফের সামরিক আঘাতের মাধ্যমে সন্ত্রাস দমন নীতিকে সমর্থন করে এসেছে। কিন্তু পাকিস্তানের কোয়ালিশন সরকার, বিশেষ করে মুসলিম লীগ(এন) সশস্ত্র সংস্থার সঙ্গে সংলাপের পক্ষে অটল। ফলে যুক্তরাষ্ট্র নিজের সন্ত্রাস দমন নীতি নিশ্চিত করার স্বার্থে মুশাররফ, পিপিপি ও মুসলিম লীগ(এন) এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখারই উদ্যোগ নেবে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)