২৮ মে চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান মু হোং পেইচিংয়ে বলেছেন , সিছুয়ান ভূমিকম্প দুর্গত এলাকার বুনিয়াদী ব্যবস্থা মেরামতের কাজে পর্যায়ক্রমে সাফল্য আসছে। ভূমিকম্পের নানা ধরণের উদ্ধার ও ত্রাণসামগ্রী দুর্গত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে । চীন সরকার পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে দুর্যোগোত্তর পুনর্গঠনের প্রধান প্রধান কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নিয়েছে ।
১২ মে সিছুয়ানের ওয়েনছুয়ানে ভূমিকম্প হওয়ার পর চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের উদ্যোগে বিশটিরও বেশি বিভাগের বুনিয়াদী ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও পুনর্গঠন বিষয়ক একটি যৌথ কর্মগ্রুপ গঠিত হয় । জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান মু হোং বলেন , এখন সিছুয়ান ভূমিকম্প দুর্গত এলাকার বুনিয়াদী ব্যবস্থা মেরামতের কাজে পর্যায়ক্রমে সাফল্য আসছে । তিনি বলেন , ভুমিকম্প হওয়ার পর বুনিয়াদী ব্যবস্থার নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মগ্রুপের সদস্য ইউনিটগুলো শিগগিরই নানা উপায়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সড়কপথ, জ্বালানী শক্তি , টেলিযোগাযোগ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামতের কাজ শুরু করে , বাঁধ ও ভূমিকম্পহ্রদ পরিদর্শন করে বিপদজনক অবস্থা মোকাবেলা করে এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনরুদ্ধার করে । ১৮ মে পর্যন্ত দুর্গত জেলা ও শহরগুলোর টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি পুনরুদ্ধার হয়েছে । ২১ মে পর্যন্ত পেইছুয়ান জেলাশহর ছাড়া সিছুয়ান প্রদেশের সকল দুর্গত জেলাশহরের বিদ্যুত সরবরাহ মোটামুটি বা আংশিকভাবে আবার শুরু হয়েছে । এখন দুর্গত এলাকার পানি সরবরাহ সমস্যাও মোটামুটি কেটে গেছে । বেশির ভাগ দুর্গত গ্রামের পানি সরবরাহ সমস্যার প্রাথমিক সমাধান হয়েছে ।
মু হোং জানান , এবারের ভূমিকম্পে মোট ১৬টি হাইওয়েন, ৯টি রেলপথ এবং ২১টি বিমানবন্দর ভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এখন এই সব পথ পুনরায় যাতায়াত শুরু হয়েছে । গুরুতর দুর্গত এলাকার প্রতিটি জেলা শহরে বাইরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কমপক্ষে একটি সড়কপথ চালু হয়েছে ।
সড়কপথগুলো পুনরায় চালু হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে ত্রাণকর্মী ও ত্রাণসামগ্রী অনবরতভাবে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে । মু হোং বলেন , দুর্গত এলাকার জনসাধারণের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার দুর্গত প্রদেশ ও শহরগুলোকেপ্রথম কিস্তির ৩ লাখ ৮০ হাজার টন ত্রাণ খাদ্যশস্য পাঠিয়েছে । তিনি বলেন , দুর্গত এলাকার জনগণের খাদ্যশস্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার গুদামে রাখা আংশিক খাদ্যশস্য দুর্গত এলাকায় পাঠিয়েছে । এর পাশাপাশি সিছুয়ান প্রদেশের কিছু মজুদ খাদ্যশস্যও দুর্গত এলাকায় পাঠিয়েছে । সিছুয়ান প্রদেশের খাদ্যশস্যের সরবরাহ এখন নিশ্চিত রযেছে । খাদ্যশস্যের দামও স্থিতিশীল রয়েছে ।
মু হোং এও বলেছেন , ভূমিকম্পে সিছুয়ান প্রদেশের বুনিয়াদী ব্যবস্থা গুরুতর ভাবে ধ্বংস হয়েছে । দুর্গত এলাকার উত্পাদন পুনরুদ্ধার এবং পুনর্গঠনের কাজ অত্যন্ত কঠিন ও জটিল হবে । তিনি বলেন, জরুরী মেরামতের কাজ নিম্ন স্তরে ও প্রত্যন্ত গ্রামে বিস্তৃত হচ্ছে । এখন ব্যাপকভাবে মেরামতের কাজ চালানো হচ্ছে । কিন্তু ভূমিকম্পের পরাঘাত এবং ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট নতুন দুর্যোগ ঘনঘন হচ্ছে , বিশেষ করে সিছুয়ানে বর্ষ মৌসুমশুরু হচ্ছে বলে বিদ্যুত সরবরাহ, টেলিযোগাযোগ ও সড়কপথ নিশ্চিত করার জটিলতা ও চাপ আরও বেড়েছে ।
জানা গেছে , ভূমিকম্প পরবর্তীপুনর্গঠনে চীন সরকার ইতোমধ্যে ৭০ বিলিয়ন রেনমিনপি বরাদ্দ করেছে । পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পুনর্গঠনের পরিকল্পনা এবং তিন বছরের মধ্যে পুনর্গঠনের প্রধান প্রধান কর্তব্য সম্পন্ন করা হবে বলে চীন সরকার আশা প্রকাশ করে ।--চুং শাওলি
|