v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-26 21:04:47    
চীন-রাশিয়ার কৌশলগত ভিত্তি আরো জোরদার হবে

cri
    গত সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ চীনে দু'দিন সফর করেছেন। এবার হল প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মেদভেদেভের প্রথম চীন সফর। তার এবারের সফরের "গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিষয়ে চীন-রাশিয়া যৌথ বিবৃতি" হল সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়।

    এই যৌথ বিবৃতিতে ১১টি বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রধান নিয়মকানুন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিষয়ে দু'পক্ষের অভিন্ন মতামত। বিবৃতিতে দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে "সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখন্ডতার প্রতি মর্যাদা প্রদান এবং পরস্পরের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা"সহ ৫টি নীতি অনুসরণ করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে জাতিসংঘের অধিকারকে মর্যাদা দেয়া, রকেট-প্রতিরোধক ব্যবস্থা স্থাপনের বিরোধিতা করা, সন্ত্রাস দমনে দু'রকম মানদন্ডের অভিযোগ করা, সংস্কৃতি'র বৈচিত্রময়তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং মানবাধিকারের মাধ্যমে অন্য দেশের অভন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিরোধিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চীন ও রাশিয়া অভিন্ন মতামত প্রকাশ করা হয়।

    এই বিবৃতি'র লক্ষ্য খুব স্পষ্ট। এর পটভূমি নিয়ে আমরা কিছু কথা বলতে চাই। ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর নতুন আন্তর্জাতিক কাঠামোতে চীন ও রাশিয়া কিছু অভিন্ন পরিস্থিতি'র সম্মুখীন হয়েছিল। এসব সমস্যার উত্স প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের একপক্ষীয় নীতি, পশ্চিমা দেশগুলোর উচ্চতর বোধ এবং সন্ত্রাস দমনে দু'রকম মানদন্ড অনুসরণ করা। এসব ব্যাপারে চীন ও রাশিয়ার অভিন্ন মতামতের ভিত্তিতে দু'দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হয়েছে।

    রাশিয়ার পক্ষে, ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর সন্ত্রাস দমন ক্ষেত্রের সহযোগিতা রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ করে তুলেছে। কিন্তু এরপর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার গণতন্ত্র প্রক্রিয়া অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এবং কমনওয়েল্থভুক্ত স্বাধীন দেশসমুহকে "রংয়ের বিপ্লব" ঘটাতে উত্সাহ দিয়েছে। এ কারণে দু'দেশের সম্পর্ক দূরত্ব সৃষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি ন্যাটো পূর্ব দিকে বিস্তারের ফলে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব ইউরোপে রকেট-প্রতিরোধক ব্যবস্থা স্থাপন করতে চেয়েছিল। তাতে মার্কিন-রুশ সম্পর্কের বিতর্ক আরো সরব হয়ে উঠে। এই পটভূমিতে রাশিয়ার নীতিরও পরিবর্তন হয়েছে এবং তা খুব দরকার। চীনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতি এবং অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে চীনকে চাপ দেয়ার চেষ্টা করছে। কিছু দিন আগে অলিম্পিক গেমসে মশাল হস্তান্তরে, তিব্বত বিষয়ে এবং তাইওয়ান বিষয়ে তারা চীনের বিরুদ্ধে যে অপচেষ্টা চালিয়েছে চীন তাতে খুব অপমান হয়েছে।

    এমন অবস্থায় চীন-রাশিয়া একটি আরো ন্যয্য আন্তর্জাতিক পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কৌশলগত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা খুব প্রয়োজন।

    আসলে চীনের পক্ষ থেকে চীন-রাশিয়া সম্পর্ক, চীন-মার্কিন সম্পর্ক এবং চীন-ইউরোপ সম্পর্কের মধ্যে মূল পার্থক্য আছে। যদি বলা যায় চীন-মার্কিন ও চীন-ইউরোপ সম্পর্কের ভিত্তি প্রধানত অর্থ-বাণিজ্য, সন্ত্রাস দমন এবং পরিবেশ রক্ষা , তাহলে চীন-রাশিয়া সম্পর্ক প্রধানত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ভারসাম্য, দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভূখন্ডের অখন্ডতা রক্ষার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা।

    রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উপরে গুরত্ব দিয়ে আসছেন। ২০০১ সালে চীন ও রাশিয়া "সুপ্রতিবেশী সহযোগিতামূলক চুক্তি" স্বাক্ষর করেছে। ২০০৪ সালে দু'দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আলোচনার পর, সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে, দু'দেশের কৌশলগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে এবং "সুপ্রতিবেশীসুলভ সহযোগিতামূলক চুক্তি" স্বাক্ষরিত হয়েছে। চীন-রাশিয়া কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্কের উন্নতির যোগ এখন থেকেই সার্বিকভাবে শুরু হয়েছে। বোঝা যায় মেদভেদেভ এখন দু'দেশের সম্পর্কের আরো উন্নয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। (ইয়াং ওয়েই মিং)