v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-22 18:43:53    
সি ছুয়ান দুর্গত অঞ্চলে মানসিক সহায়তার কাজ চলছে

cri
    সি ছুয়ান প্রদেশের ওয়েন ছুয়ানের ভয়াবহ ভূমিকম্পে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । নিহত পরিবার পরিজনের কথা স্মরণ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত বসতবাড়ি দেখে দুর্গতদের মন দুঃখ ভারাক্রান্ত । দুর্গতদের উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ করার পাশাপাশি চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ , স্থানীয় সরকার ও অনেক বেসরকারী সংস্থার কর্মীরা ভূমিকম্প দুর্গতদের মানসিক সহায়তাও করে যাচ্ছেন । যাতে তাদের মানসিক অবস্থা অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাভাবিক হয়ে যায় ।

    বর্তমানে ভূমিকম্পে পেই ছুয়ান জেলা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এ জেলার দুর্গতদেরএকটি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে সি আর আইয়ের সংবাদদাতা পেইছুয়ান মাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র লিউ খাইকে দেখেছেন । ছেলেটি স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে নতুন আসা দুর্গতদের সাহায্য করছে । দেখতে শান্ত শিষ্ট । তবে প্রথম দিকে তার মানসিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল । এ বসতির স্বেচ্ছাসেবক সুন ছিয়ান বলেন , প্রথম দিকে লিউ খাইয়ের মন খুব খারাপ ছিল । ঘুমোতে পারতো না , মুখে কোনো কোনো আশার আলো নেই , শুধু বোকার মতো বসে থাকে । এ কেন্দ্রের মানসিক উপদেষ্টা লিউ খাইয়ের সঙ্গে আলাপ করেন এবং তাকে ভূমিকম্পে তার দুঃখজনক অভিজ্ঞতার কথা বলতে অনুরোধ করেন । লিউ খাইয়ের অভিজ্ঞতার কথা শুনে মানসিক উপদেষ্টা তাকে সান্ত্বনা দেন এবং স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে নিজের সাধ্যমত কিছু করতে উত্সাহ দেন । উপদেষ্টার উত্সাহে লিউ খাইয়ের মন ধীরে ধীরে ভালো হতে শুরু করে । তিনি বলেন, আমি মনের কষ্ট ও দুঃখ মানসিক উপদেষ্টাকে বলার পর কিছুটা সুস্থ বলে অনুভব করি , আমার মানসিক চাপ কমেছে ।

    জানা গেছে , ওয়েন ছুয়ান ভূমিকম্পের পর উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালানোর পাশাপাশি মানসিক সহায়তার কাজও শুরু হয় । স্বাস্থ্য বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ত্রাণ দলে পেশাদার মানসিক সাহায্য কর্মী ছিল । তারা জীবিত মানুষদের চিকিত্সা করার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গতদের সান্তনা দিচ্ছেন ।

    চীনের গণ মুক্তি ফৌজের তৃতীয় নম্বর সামরিক মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক বিদ্যার বিশেষজ্ঞ ফোং চে চি ভূমিকম্পের পর দিনই দুর্গত অঞ্চলে চলে যান । তিনি বলেন , আসলে আমাদের মানসিক সহায়তার কাজ ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত মানুষকে উদ্ধার করার সময় থেকেই শুরু হয় । প্রথম দিকে আমরা আহতদের উদ্ধারকারীর জন্য অপেক্ষা করতে উত্সাহ দিই এবং তাদের আশ্বাস দিই যে উদ্ধারকারীরা অবশ্যই তাদের বাঁচাতে আসবে । উদ্ধার পাওয়ার পরও দুর্গতদের মানসিক চাপ কমে নি । আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করি এবং নিজের মনের ভয় ও আশংকার কথা বলতে উত্সাহিত করি । একবার আমরা দশ বারোজন দুর্গতের সঙ্গে আলাপ করেছি । নিজের অভিজ্ঞতা বলার পর তারা হালকা মনে করেন । প্রথম দিকে তারা মনে করেন নিজেই সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছেন । আলাপের পর তারা বুঝতে পেরেছেন যে ভয়াবহ ভূমিকম্পে সবাই মনে অনাকাঙ্খিত আঘাত পেয়েছে । ধীরে ধীরে তাদের মানসিক চাপ কমতে শুরু করে ।

    একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , কমপক্ষে ৫০টি মানসিক সাহায্য গ্রুপ দুর্গত অঞ্চলে তত্পর রয়েছে । দুর্গতদের মানসিক সাহায্য দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ মানসিক সাহায্যের হট লাইন স্থাপন করে এবং বেতার কেন্দ্র মানসিক সাহায্য সম্পর্কিত অনুষ্ঠান প্রচার করে । দুর্গতদের পরিবার পরিজন , জীবিত মানুষ ও শিশু ছাড়া স্বেচ্ছাসেবকসহ দুর্গত অঞ্চলের সব মানুষকে মানসিক সাহায্য করা দরকার । পেইচিং শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর উও চিয়েন চুং একটি মানসিক সাহায্য দল নিয়ে দুর্গত অঞ্চলে যাচ্ছেন । তিনি বলেন , দুর্গত অঞ্চলের অধিবাসী ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক , সেনাবাহিনীর সদস্য , চিকিত্সা কর্মী ও সাংবাদিকদেরও মানসিক সাহায্য দেয়া প্রয়োজন , তাদের মানসিক চাপও অনেক বেশি । বিশেষজ্ঞরা বলেন , দুর্যোগ হওয়ার প্রথম সপ্তাহ হলো প্রথম পর্যায় , এ সময় আকস্মিক দুর্যোগ সম্পর্কে দুর্গতরাবেশি চিন্তা-ভাবনার সময় পায় না , তবে সপ্তম দিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত তারা দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি ও পরিণাম সম্পর্কে অনেক কিছু চিন্তা করবে এবং পরম নিরাশায় পড়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে পারে । তাই এ সময়ে মানসিক সাহায্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । বর্তমানে দুর্গত অঞ্চলে আরো বেশি মানসিক উপদেষ্টা ও স্বেচ্ছাসেবকের প্রয়োজন রয়েছে ।