v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-19 12:13:38    
বিখ্যাত জিমন্যাস্ট আলিক্সান্দর দিতিয়াতিন

cri
    সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিখ্যাত জিমন্যাস্ট আলিক্সান্দর দিতিয়াতিন শুধু একটি অলিম্পিকেই মোট ৮টি পদক পেয়েছিলেন।

    "আমি দুই বার অলিম্পিক গেমসে অংশ নিয়েছিলাম। ১৯৭৬ সালের মন্ট্রিল অলিম্পিক আর ১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিক গেমসে। দুই অলিম্পিক মিলিয়ে মোট ৩টি স্বর্ণ, ৬টি রৌপ্য এবং ১ ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছি। এই হচ্ছে আমার অলিম্পিক সাফল্য।"

    একটি কথা আছে যে, ৩ মিনিটের প্রতিযোগিতার জন্য দরকার নিচে ১০ বছরের বিরতিহীন চর্চা। দিতিয়াতিনের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার নিরলস চেষ্টা আর সাধনা। ১৯৬৬ সালে মাত্র ৯ বছর বয়সে দিতিয়াতিন জিমনেস্টিক্স চর্চা শুরু করেন। সেই দিমগুলোর কথা স্মরণ করে দিয়াতিন বলেন:

    "তখন আমি অন্য অন্য ছেলে মেয়েদের মতো প্রতিদিন কমপক্ষে ২ ঘন্টা ধরে অনুশীলন করতাম। আস্তে আস্তে সময়টা বাড়িয়ে তিন ঘন্টা করেছি।"

    ৭ বছরের কঠোর চর্চার পর ১৬ বছর বয়সে দিতিয়াতিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন যুব জিমনেস্টিক্স প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। এরপর জিমনেস্টিক্স অঙ্গনে দিতিয়াতিন স্থায়ী আসন করে নেন। ১৯৭৫ সালে দিতিয়াতিন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জাতীয় জিমনেস্টিক্স দলে অন্তভুক্ত হন। ১৯৭৬ সালে কানাডার মন্ট্রিল অলিম্পিকে দিতিয়াতিন পুরুষদের দলীয় জিমনেস্টিক্স এবং রিংসয়ে পদক জেতেন। ঐ সময়ে দিতিয়াতিন তার জীবনের সোনালী সময়পর্বে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন:

    "তখন আমি মনে করতাম আমিই বিশ্ব সেরা। কিন্তু প্রতিযোগিতা তো মানুষের ইচ্ছা অণুযায়ী চলে না। বিস্ময় থাকে, বেদনাও থাকে।তাই আমি আরো চেষ্টা আরো পরিশ্রম করতে শুরু করি। অবশেষে মস্কোয় এলো সেই জাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত- বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের গৌরব।"

    ১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিক চলাকালে দিতিয়াতিন সাবেক সোভিয়েত সুইয়েট ইউনিয়নের সেরা জিমন্যাস্টের স্বীকৃতি পান। সেবার দলীয় জিমনেস্টিক্সে ও ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্বর্ণ পদক পান। এর পাশাপাশি ২৫ জুলাই এক দিনে তিনি ৬টি ব্যক্তিগত ইভেন্টে পদক জেতেন। একক একটি অলিম্পিক গেমসে ৮টি পদক পাওয়া ক্রীড়াবিদ তিনিই প্রথম। এর পাশাপাশি জাম্পিং ওভার ইভেন্টে তার নিখুঁত মুভমেন্টের কারণে তিনি অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম ১০ পয়েন্ট পাওয়া পুরুষ ক্রীড়াবিদের রেকর্ড গড়েন।

    দিতিয়াতিন মনে করেন ১৯৮০ সালের মস্কো অলিম্পিক ছিল খুব উঁচু মানের একটি অলিম্পিক গেমস। প্রতিযোগীরা সবাই ভাল ভাল রেকর্ড করেছিলেন। তিনি নিজের মাতৃভূমিতে খেলেছিলেন বলে হয়তো আরো ভাল ফল করতে পেরেছিলেন। এ নিয়ে তিনি বলেন:

    "প্রতিটি দেশ অথবা শহরের জন্য অলিম্পিক আয়োজন একটি গৌরবের ব্যাপার। মোস্কো অলিম্পিক চলাকালে আমরা সবাই খুবই গর্বিত বোধ করতাম। কাধে বাড়তি দায়িত্ব ছিল বলে ভাল রেকর্ডের জন্য আরো বেশি করে চেষ্টা করেছিলাম। যাতে আমাদের ওপরে যারা আস্থা রেখেছিলেন তারা হতাম না হন।"

    মস্কো অলিম্পিকের পর শরীর খুব ভাল না বলে দিতিয়াতিন আস্তে আস্তে প্রতিযোগিতা থেকে দূরে সরে যান। পেশাদার ক্রীড়াবিদ হিসেবে অবসর নেওয়ার পর তিনি মাতৃভূমি লেনিনগ্রাদে ফিরে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৮ সালের ৫ এপ্রিল পেইচিং অলিম্পিক মশাল সেইন্ট পিটার্সবুর্গে পৌঁছার পর তিনি আবার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এবারের পেইচিং অলিম্পিকের মশাল বাহক হিসেবে তার অনুভূতি সম্পর্কে তিনি বলেন:

    "গ্রীস থেকে চীনে পবিত্র মশাল শোভা যাত্রার একজন অংশীদার হতে পারায় আমি নিজকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। যদিও আমি এ লম্বা যাত্রার মধ্যে একজন সদস্য মাত্র তারপরও আমি খুব গর্ব বোধ করি।"

    রাশিয়ার সিনিয়র জিমন্যাস্ট হিসেবে দিতিয়াতিন বরাবরই রাশিয়া ও বিশ্বের জিমনেস্টিক্সের উন্নয়নের ওপরে দৃষ্টি রাখেন। তিনি মনে করেন পেইচিং অলিম্পিক চলাকালে বড় আকারে জিমনেস্টিক্স প্রতিযোগিতা হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি পেইচিং অলিম্পিকের জন্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন:

    "আমি আশা করি পেইচিং অলিম্পিক সফল হবে। খেলোয়াড়রা নতুন নতুন রেকর্ড গড়তে পারবেন। এবারের অলিম্পিক ইতিহাসের সর্বোচ্চ মানের অলিম্পিক হবে বলেও আমি আশা করি।"(ইয়াং ওয়েই মিং)