১২ মে চীনের সি ছুয়ান প্রদেশে এক আকস্মিক ভূমিকম্পে বহু মানুষ হতাহত এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিপর্যয়ের পর চীন সরকারের নেতৃত্বে চীনের জনগণ সাধ্যানুযায়ী প্রচেষ্টা চালিয়ে ত্রাণকাজ শুরু করেছেন। এর প্রতি জাতিসংঘ মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস ও সি এইচ এ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউ এইচ ও এবং জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক দুর্যোগ বিমোচন ইউএন আইএসডিআরসহ বিভিন্ন সংস্থা এর ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে। এখন শুনবেন সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় সিআরআই'র সংবাদদাতা তুয়ান সিউ চিয়ের পাঠানো একটি প্রতিবেদন।
ও সি এইচ এ'র মুখপাত্র এলিজাবেথ বিয়ারস চীনের বিপর্যয়ের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সি ছুয়ানের উপদ্রুত অঞ্চলে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ধ্বসে পড়া ভবনে আটকা পড়া অবস্থার কথা বলার সময় তিনি বলেন, চীন সরকার ত্রাণকাজ সাধ্যানুযায়ী প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি বলেন,
(রি-১)
আমার মনে হয়, চীন সরকার সাধ্যানুযায়ী প্রচেষ্টা চালিয়ে বেঁচে থাকা দূর্গতদেরকে বিভিন্ন ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, ত্রাণকাজ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশি আটকা পড়া মানুষকে উদ্বার করা সম্ভব হবে।
সি ছুয়ানে ভূমিকম্পের পর, চীন সরকার দ্রুত ও জরুরিভাবে তা মোকাবিলা করেছে এবং 'সময় হচ্ছে জীবন' এই স্লোগান নিয়ে ত্রাণকাজে অংশ নেয়ার জন্য সমাজের সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ওয়েন চিয়া পাও ঘটনাস্থলে গিয়ে ত্রাণকাজ পরিচালনা করছেন এবং তিনি দুর্গতদেরকে প্রতি তার সমবেদনা জানান। এ সব কাজ ইউএন আইএসডিআর সচিবালয়ের পরিচালক সালভানো ব্রিসেনোর মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তিনি বলেন,
(রি-২)
বিপর্যয়ের প্রতি চীন সরকারের মোকাবিলার গতি খুব দ্রুত। টেলিভিশনে আমি দেখেছি ভূমিকম্পের ৪ঘটার মধ্যে উদ্ধারকারীদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে চীন সরকার ভালো কাজ করেছে। যা আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছে।
যদিও চীন সক্রিয়ভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তারপরও দূর্যোগপূর্ণ আহ্বাওয়া ও সড়ক ব্যবস্থা ধংস হয়ে যাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ এখনো বহু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। চীনের ত্রাণকাজের প্রত্যয়ের প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ফাদেলা ছাইব বলেন,
(রি-৩)
চীন এখন একটি বড় দেশ এবং তার অনেক ত্রাণের অভিজ্ঞতা আছে। এই ক্ষেত্রে চীনের অনেক বিশেষজ্ঞও আছে। আমার মনে হয় চীন ভালোভাবে ত্রাণকাজে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
ভূমিকম্পের পর অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা চীনকে সমর্থন ও সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এ জন্য চীন সরকার তাদেরকে ধন্যবাদ ও স্বাগত জানায়। তবে বর্তমানে সংশ্লিষ্ট সুযোগ না থাকার কারণে চীন এখনও বাইরের সাহায্য গ্রহণ করে নি। জাতিসংঘের এ কয়েকটি সংস্থা সংবাদদাতাকে বলেছে, তারা যে কোনো সময়ে চীনকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
দশ-বারো হাজার মানুষ এবারের ভূমিকম্পে নিহত হয়েছে। দুর্গত অঞ্চলের অবস্থা খুবই খারাপ। এতো গুরুতর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি? সংবাদদাতার এ প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘ দুর্যোগ বিমোচন বিষয়ক কার্যাক্রয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে ব্রিসেনো বলেছেন, ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে বর্তমানে মানব সমাজ অসহায়। তিনি বলেন,
(রি-৫)
ভূমিকম্পের সতর্কবাণী দেয়া খুব কঠিন। কারণ সব সময় তা হঠাত করেই ঘটে। যদিও চীনের মতো কিছু দেশে উন্নততর উপায় আছে। এ ক্ষেত্রে ভূমিকম্পের কয়েক মিনিট আগে সতর্ক করা যায়। তবে এই কয়েক মিনিটের সতর্কবাণীর দ্বারা তেমন কোনো ভুমিকা পালন করা যায় না।
পাশাপাশি তিনি বলেন, ভূমিকম্প সম্পর্কে সতর্ক করতে না পারা মানে এর প্রতি মানবজাতি কিছু করতে পারে না তা নয়। এ ক্ষেত্রের কাজ প্রধানত স্থাপত্য নির্মাণে ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তিনি বলেন, চীনের একটি উদাহরণ থেকে শেখা যায়, সেটা হচ্ছে গত শতাব্দীর ৭০ দশকের গুরুতর থাং শান ভূমিকম্প। তিনি বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধ ক্ষেত্রে চীন সরকার অনেক কাজ করেছে। যেমন থাং শানের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর পুনর্গঠন স্থাপত্যে ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুব ভালো। এ ক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা চীনের বিভিন্ন শহরে কাজে লাগানো যায়।
|