এ বছর হলো চীন-জাপান শান্তি ও মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরের ৩০তম বার্ষিকী এবং দু'দেশের যুব বিনিময়ের বছর । চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাও জাপানে সরকারী সফর করছেন । দু' শ' সদস্যবিশিষ্ট চীনের একটি যুব প্রতিনিধি দলও জাপান সফর করছে । দু' দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নে যুব সম্প্রদায় বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে । দু'টি দেশই মনে করে যুব সম্প্রদায়ের বিনিময় ও সমঝোতা বাড়ানো একটিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
জাপান সরকারের আমন্ত্রণে চীনের যুব প্রতিনিধি দল ৪ থেকে ১০ মে পর্যন্ত জাপান সফর করছে । এ প্রতিনিধ দলের জাপান সফরের কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে চীন-জাপান যুব বিনিময় বর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া এবং শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ও জাপানের যুবক-যুবতীর বিনিময় ইত্যাদি । চীনের যুব প্রতিনিধি দলের জাপান সফরের আগে জাপানের যুব প্রতিনিধি দল মার্চ মাসে চীন সফর করেছে । এ প্রতিনিধি দলের সদস্য সংখ্যা ছিল এক হাজার । সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সঙ্গে এ প্রতিনিধ দলের কিছু সদস্য সাক্ষাত করেন ।
অনেকের ধারণা , চীন- জাপান সম্পর্কের মতো দু' দেশের যুব সম্প্রদায়ের বিনিময়ও উষ্ণ বসন্তকালে প্রবেশ করেছে । এক সময় দু দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে এ ধরনের উষ্ণ সময় ছিল । ১৯৮৪ সালে চীন সরকারের আমন্ত্রণে জাপানের তিন হাজার যুবক-যুবতী চীন সফর করেন । সেই বছর চীনে দু' দেশের যুবক-যুবতীদের মহা সম্মিলনীরআয়োজন করা হয়েছিল । ১৯৮৫ সালে জাপান সরকারের আমন্ত্রণে চীনের যুব প্রতিনিধি দল জাপান সফর করে । হু চিন থাও এই প্রতিনিধি দলের নেতা ছিলেন । এ দু'টি প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় গত শতাব্দীতে চীন ও জাপানের মৈত্রীর জোয়ার সৃষ্টি করেছিল ।
জাপান-চীন সমিতির চেয়ারম্যান শিরানিশি শিনিছিরো ১৯৮৪ সালে চীন সফর করেছেন । সেই সময়কার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন , ১৯৮৪ সালে আমরা চীনের বিমানে করে পেইচিং , সাংহাই , নানচিং ও উ হান শহর সফর করেছি এবং আন্তরিক অভর্থনা পেয়েছি । চীনের আন্তরিকতায় আমরা সবাই মুগ্ধ হয়েছি । এ বিনিময় কর্মসূচী দু' দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বীজ বপন করেছে ।
এ বছর চীনের যুব প্রতিনিধি দলের মধ্যে ৫০জন প্রতিনিধি ১৯৮৫ সালে জাপান সফর করেছিলেন । কণ্ঠশিল্পী চিন মান তাদের মধ্যে একজন । তিনি সাংবাদিকদের বলেন , ২৩ বছর আগে আমি জাপানে উঁচু উঁচু দালান ও জাপানের মানুষের আধুনিক জীবন দেখেছি এবং তাদের আন্তরিকতাকে অনুভব করেছি । আবার জাপান সফরের সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই খুব খুশি । তিনি বলেন , এবার আমি জাপানের শিক্ষা , সংস্কৃতি ও উন্নয়নকে দেখবো । বিশেষ করে চীনাদের সম্পর্কে জাপানীদের ধারণা সম্পর্কেআমি জানতে আগ্রহী ।
নানচিং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাও চিয়া ইং এই প্রথমবারের জাপান সফর করছেন । জাপান সম্পর্কিত সব তথ্য তিনি টেলিভিশন , পত্রিকা ও ইন্টারনেট থেকে পেয়েছেন । তিনি সাংবাদিকদের বলেন , সফরকালে আমি প্রশ্নের মাধ্যমে জাপানী যুবক-যুবতীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করবো । একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমি চীন-জাপান সম্পর্কঅন্বেষণ করবো। সফরের মাধ্যমে আমি চীন ও জাপানের প্রাধান্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।
চীনের জাতীয় যুব লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিনিময় বিভাগের প্রধান নিসিয়েন চীনের যুব প্রতিনিধি দলের উপনেতা । তিনি বলেন , চীনের যুব প্রতিনিধি দলের জাপান সফরের প্রধান প্রতিপাদ্য হলো নতুন জাপানকে জানা । তিনি বলেন , বর্তমান জাপান সফরের প্রধান তাত্পর্য হলো জাপানের সমাজ ও যুব সম্প্রদায় জেনে নেয়া এবং জাপানের যুব সম্প্রদায়কে চীনের যুব সম্প্রদায় সম্পর্কে জানার সুযোগ দেয়া । সমঝোতা বাড়ার ভিত্তিতেই বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা সম্ভব । এটাই চীন -জাপান মৈত্রীর ভিত্তি ।
|