এবছর হাইনান প্রদেশের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী । আজ এই অনুষ্ঠানে হাইনান প্রদেশ সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলা হবে । চীনের অন্যতম সংখ্যালঘু জাতি লি জাতি যুগ যুগ ধরে হাইনান দ্বীপে বসবাস করে আসছে । এই দ্বীপে জনসংখ্যা ১৩ লাখ । হাইনান প্রদেশের দক্ষিণ পূর্বাংশে অবস্থিত পাও তিং লি জাতি ও মিয়াও জাতি স্বায়ত্তশাসিত জেলা লি জাতির অন্যতম অধ্যুষিত এলাকা ।
হাইনান প্রদেশের রাজধানী হাইখৌ শহর থেকে পাও তিং জেলায় গাড়িতে চড়ে যেতে মাত্র ৪ ঘন্টা লাগে । এই জেলা সবুজ গাছপালায় আবৃত । জলবায়ু উষ্ণ । জেলার ১.৬ লাখ লোকের মধ্যে ১ লাখ লি জাতির । কাও ইউন লিয়াংয়ের বয়স ৭৬ বছর । তার পূর্বপুরুষরা বংশপরম্পরায় পাও তিং জেলার চিয়া মাও থানার থুংজা গ্রামে বসবাস করতেন । কাও ইউন লিয়াং স্থাপত্যের কাজে পারদর্শী । তিনি অল্পবয়স থেকেই লি জাতির ঐতিহ্যবাহী খড়ের ঘর নির্মাণ করে থাকতেন । এই ধরনের খড়ের ঘরকে উপুড় করে রাখা একটি নৌকা বলে মনে করা হতো । স্থাপত্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন , গত কয়েক হাজার বছর ধরে লি জাতি বাড়িঘর নির্মাণের জন্য যে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করতো , তার কারণ এই যে , ঘর নির্মাণের সামগ্রী হিসেবে খড় বাতাস ও বৃষ্টি নিবারণ করতে সক্ষম । লি জাতির বাড়ি সাধারনতঃ সামনে ও পেছনের দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় । খড়ের ঘরের মাঝখানের দিকে যে তিনটি উঁচু ও বিরাট রেলিং দাঁড়িয়ে আছে , লি জাতির ভাষায় তা পুরুষের প্রতীক । ঘরের দুই পাশে যে ছ'টি খাটো রেলিং আছে , তা মহিলাদের পরিচায়ক । এ থেকে বোঝা যায় ঘরোয়া সংস্কার পুরুষ ও মহিলা নিয়ে গঠিত । তাদের সন্তানরা বড় হলে বাবা মায়ের বাড়ির কাছে আরেকটি বাড়ি নির্মাণ করতো ।
কাও সাহেব ও তার পরিবার পরিজন এখন এমন বাড়িতে আর থাকেন না । তিনি ও তার স্ত্রী এবং সন্তানরা ৩ শো বর্গ মিটারেরও বেশি আয়তনের দু'তলা বিশিষ্ট একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়েছেন ।
তিনি যখন অল্পবয়সী ছিলেন , তখন তিনি ছিলেন একজন স্থাপত্য কারিগর । খড়ের ঘর নির্মাণের জন্য গ্রামবাসীদের সাহায্য করতেন তিনি । তিনি কংক্রীটের বাড়ি নির্মাণ করতে জানতেন না । তার এখন বয়স হয়েছে । কৃষি কাজ করতে পারছেন না । সন্তানরা সচ্ছল হয়ে উঠেছে । তারা নতুন পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন । এই ধরনের বাড়ি তার খুব ভাল লাগে । উজ্জ্বল , পরিপাটি এবং আরামদায়ক ।
এই নতুন ও বড় বাড়ি নির্মাণের জন্য কাও ইউন লিয়াংয়ের ছেলে কাও চিং ফুং ২ লাখ ইউয়ান খরচ করেছেন । ২০০০ সালে কাও চিং ফুং থানার খামারে গিয়ে ফলমূল ও সবজি চাষের কৌশল শিখেছেন । এর পর তিনি নিজের একটি খামার গড়ে তুলেছেন । ২০০৪ সাল থেকে খামারে ফল গাছে ফল ধরেছে । বছরের শেষ নাগাদ তিনি ৪০ হাজার ইউয়ানেরও বেশি আয় করেন । গ্রামে ফল গাছ লাগানোর কৌশল শেখার প্রথম কারিগর হিসেবে তিনি সত্যিই উপকৃত হয়েছেন ।
সে বলে , এই বড় বাড়ি খামারের আয়ের উপর নির্ভর করে নির্মাণ করা হয়েছে । সে ও তার পরিবার পরিজন সচ্ছল হয়ে উঠেছেন । এ বছরের প্রথম তিন মাসে তারা প্রায় ৮ হাজার ইউয়ান আয় করেছেন ।
গ্রামে কিও চিং ফুংয়ের একটি বিরাট পরিবার আছে । তার পরিবারের সদস্য প্রায় ২০ জন । তার তিন সন্তান । ছ'জন অনাথ । কাও চিং ফুংয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় । আগে কাও চিং ফুংয়ের ফল খামার গড়ে তোলা হয় নি । তিনি কৃষি কাজের আয়ের নির্ভর করে পরিবার পরিজনকে লালন পালন করতেন । তার স্ত্রী চি মেই লিয়াং হান জাতির কাছে পশু পালনের কৌশল শিখেছেন । ফলে পরিবারের আয় বেড়ে গেছে । সন্তানরা বড় হয়ে উঠেছে । তার পরিবারও সচ্ছল হয়ে উঠেছে ।
1 2
|