v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-06 13:36:19    
৮ বছর ধরে চীনে বসবাস করা জাপানী কবোরি শোগোর গল্প

cri
    প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই ভালো আছেন ? আমি কবোরি শোগোর । আজ আমি খুব খুশি । সবাইকে ধন্যবাদ ।

    ৬০ বছর বয়স্ক কবোরি সংবাদদাতার মুখোমুখি হবার সঙ্গে সঙ্গে চীনা ভাষায় শ্রোতাবন্ধুদের হ্যালো বলেন । যদিও তাঁর উচ্চারণ অনেক ভালো নয়,তবে আপনারা অবশ্যই তাঁর মজা ও বন্ধুত্বকে উপভোগ করতে পারবেন ।

    ৬০ বছর চীনে পুরুষদের অবসর সময় । তবে লিটল জায়ান্ট মেশিন টুল কোম্পানির উপ-মহা ব্যবস্থাপক হিসেবে কবোরি খুবই প্রাণচঞ্চল । তাঁর কোম্পানি পশ্চিম চীনের নিংসিয়া হুই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী ইনছুয়ান শহরে অবস্থিত । জাপানের ইয়ামাজাকি মাজাক কোম্পানির পুঁজি বিনিয়োগে চীনে প্রতিষ্ঠিত একটি পেশাগত ডিজিটল নিয়ন্ত্রিত মেশিন কারাখানা । ৮ বছর আগে কবোরি চীনে এসে লিটল জায়ান্ট মেশিন টুল কোম্পানি স্থাপনের প্রস্তুতিমূলক প্রকল্পে অংশ নিয়েছেন । তিনি বলেন ,

    আমি এ কোম্পানিতে উপ-মহা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করি । চীনের কোম্পানিতে আসার আগে জাপানে আমার প্রধান দাঁয়িত্ব ছিল আর্থিক ক্ষেত্রের কাজছাড়াও বহু ধরনের কাজ । প্রযুক্তি প্রশাসন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে মাজাক কোম্পানিতে আমার কাজ করার সময় সবচেয়ে বেশি কাজ করা এবং কোম্পানির সব তথ্য আমি ভালভাবে বুঝতে পারতাম ।

    জাপানের ইয়ামাজাকি মাজাক কোম্পানি হলো বিশ্বে বিখ্যাত মেশিন নির্মাণকারী । ৮ বছর আগে চীনের প্রযুক্তি ও উন্নয়নের পরিবেশ আস্থাবান থাকার কারণে কোম্পানি চীনের নিংসিয়ায় পুঁজি বিনিয়োগ করে কারখানা নির্মাণ করতে আগ্রহী হয় । তিনি বলেন, জাপানে কোম্পানির সদরদপ্তর চীনের অন্যান্য অঞ্চলে তাদের পুঁজি বিনিয়োগ করবে । তিনি বলেন, ২০০৫,২০০৬,২০০৭ সালে লিটল জায়ান্ট কোম্পানি ধীরে ধীরে পুঁজি বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করছে । এসব পুঁজি বিনিয়োগ সম্পন্ন করার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী আরও বেশি পুঁজি এখানে বিনিয়োগ করবে ।

    তিনি মনে করেন, মাজাক কোম্পানিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির চীনে পুঁজি বিনিয়োগ বাড়ানোর মূল কারণ হলো চীনের অর্থনীতির অব্যাহত বৃদ্ধিতে তারা আস্থাবান । প্রতিবারই তিনি জাপান থেকে চীনে ফিরে আসার সময় আনা উপহারগুলোর অধিকাংশতেই চীনের তৈরী অক্ষর দেখা যায় । তা থেকে বোঝা যায়,চীনের উত্পাদিত দ্রব্যের প্রভাব কত শক্তিশালী । তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীনে পুঁজি বিনিয়োগ আরও বাড়বে এবং চীনের বাজারের চাহিদা আরও বেশি হবে । বিশ্বের যে কোনো দেশের মধ্যে শুধু চীন এ ধরনের উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে সক্ষম । আমি বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে চীন আরও সুউজ্জ্বল হবে ।

    চীনে ৮ বছর বসবাস করার পর তিনি আরও গভীরভাবে চীনের অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়ন উপভোগ করেছেন । চীনা সহকর্মীদের জীবনযাপন থেকে তিনি চীনাদের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন দেখেছেন । আমাদের কোম্পানির চীনা কর্মীর জীবনযাত্রার পদ্ধতি দেখে আমি জানি তাদের অর্থনৈতিক সামর্থ্য অনেক বেড়েছে । যেমন তারা বিয়ে করলে এখন অধিকাংশ লোকই নিজেদের বাড়িঘর কিনতে পারেন । আমাদের কোম্পানির দ্রুত্ উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কর্মীদের আয়ও অনেক বেড়েছে ।

    ৮ বছর ধরে কবোরি চীনের জীবনযাপনের সঙ্গে অভ্যস্থ হয়েছেন । কাজ শেষে তিনি চীনা জনগণের মতো নিজের বাড়িতে রান্না করেন এবং ঘরদোর পরিস্কার করেন । ছুটিতে শপিং করেন এবং বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে বাড়ান । তিনি বলেন , জাপানের এবং ইনছুয়ানের জীবনযাপন প্রায় একই ধরনের । জাপানে পরিবারের সদস্যরা আমাকে যত্ন নেন । চীনে আমি সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রেখেছি । তারাও পরিবারের সদস্যদের মতো আমার যত্ন নেন ।

    সাক্ষাত্কার দেয়ার সময় তিনি সবসময় প্রাচীনকালের একটি বাক্য বলেন । তা হল পানি খাওয়ার সময় কূপ তৈরীকারীকে ভুলে যাবে না । এর অর্থ হলো নিজের উন্নয়নে সাহায্য করা সে লোককে মনে রাখা । তিনি বলেন, চীনারা সবসময় বলে, পানি খাওয়ার সময় কূপ তৈরীকারীকে তারা ভুলে যাবে না । এ কথা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে । আমি মনে করি, চীনাদের কাজ করার পদ্ধতি এ কথার মত একই ।

    বর্তমানে তিনি চীনের জীবনযাপন ও কাজের ব্যাপারে সন্তুষ্ট । তবে তিনি সংবাদদাতাকে তাঁর দু'টি আশার কথা বলেছেন । প্রথম আশা, একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক হিসেবে তিনি আশা করেন, তাঁর কোম্পানির উন্নয়ন আরও ভালোভাবে হবে । আমাদের কোম্পানি ২০০০ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত চমত্কার সাফল্য অর্জন করেছে । বর্তমানে আমাদের কোম্পানি মাজাক গোষ্ঠীর বিদেশে প্রতিষ্ঠিত শাখা কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়ন কোম্পানির অন্যতম । আমি আশা করি, চীনের ইনছুয়ান শহরের কারাখানায় বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মেশিন তৈরী করা যাবে ।

    এছাড়া তিনি আশা করেন, চীন ও জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময় আরও বেশি ও অবাধ হবে এবং ভিসা দেয়ার বিষয়টি আরও উন্মুক্ত হবে । আমি মনে করি, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের সময় ভিসার প্রশ্ন ভালভাবে সমাধান করা হবে । ২০০৬ সালে জাপানীদের চীনে আসার সময় ভিসা করতে হতো । তবে ২০০৭ সালে কয়েকটি শহরের সঙ্গে নীতি শিথিল হয়েছে এবং শাংহাই ,কুয়াংচৌসহ কিছু অঞ্চলে আসার জন্য ভিসার প্রয়োজন নেই । আমি বিশ্বাস করি, অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ও জাপানের বিনিময় আরও সুষ্ঠু হবে ।