২৯ তম অলিম্পিক গেমস চলতি বছরের ৮ থেকে ২৪ আগষ্ট পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চল অলিম্পিক গেমসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি কাজও দৃষ্টি আকর্ষণীয়। সম্প্রতি থাইল্যান্ডে আমাদের বেতারের সংবদদাতা লু ইয়ং চিয়াং থাইল্যান্ডের অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব চারোক আরিরাচাকারানের একটি সাক্ষাত্কার নিয়েছেন।
এখন ৭৪ বছর বয়সী চারোক আরিরাচাকারান ২৫ বছর ধরে থাইল্যান্ডের অলিম্পিক কমিটির মহা সচিবের দায়িত্ব পালন করছে। সাক্ষাত্কালে তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে সমর্থন করার কথা বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, পেইচিং অলিম্পিক গেমস অবশ্যই এশিয়ার জন্য গৌরবের ব্যাপার। তিনি বলেন, আমি একজন থাই এবং এশিয়ান। পেইচিং অলিম্পিক গেমসের স্বাগতিকে পরিণত হওয়ায় আমি খুব আনন্দিত। কারণ আমরা এশিয়ায় রয়েছি। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও রীতিনীতি প্রায় একই। তা ছাড়া, থাইল্যান্ড এবং চীনের অলিম্পিক কমিটির মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক খুব সুদীর্ঘকালের। দু'দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আগেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের শুরু । আমি বিশ্বাস করি, চীনের বিশাল সুপ্ত শক্তি এশীয় অঞ্চলের জন্য সর্বোচ্চ গৌরব এনে দিবে। ইউরোপীয় দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পারবে যে, এশীয় দেশের উদ্যোগে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের গুণগত মান পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে একটু কম নয়।
থাইল্যান্ড অলিম্পিক কমিটির মহাসচিব হিসেবে চারোকবহুবার পেইচিংয়ে এসে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বিষয়ক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি পেইচিং অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি কাজের ওপর দৃষ্টি রেখে আসছেন। তিনি বলেন, চীন বহুবার শুটিং, দৌড় ও জাম্পিং ও সাঁতারসহ কিছু ইভেন্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের আয়োজন করেছে। ১১ তম এশিয়ান গেমস পেইচিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তখন চীন প্রথম বারের মতো এশিয়ান গেমস আয়োজন করেছিল। আমি তখন থাইল্যান্ডের ক্রীড়া প্রতিনিধি দলের প্রধানের দায়িত্বে ছিলাম। আমার মনে আছে, তখন আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের সাহায্য পেয়েছিলাম। উল্লেখ্য যে, আমাদের সঙ্গে চীনের সমন্বয়কারীদের প্রত্যেকেই সাবলীল থাইল্যান্ডের ভাষা বলতে পারতো। অন্য বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলগুলোও একই সেবা পেয়েছে। গেমসের সময় পুরোপুরিভাবে বিদেশী ভাষার প্রযুক্তিবিদের ভূমিকা পালন করা আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমি পেইচিংয়ে গিয়েছি। আমি মনে করি, পেইচিংয়ের বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে। এ পর্যন্ত পেইচিংয়ের বিভিন্ন অলিম্পিক স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা অলিম্পিক গেমসের সময় পেইচিংয়ের পরিবহন সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন রেখেছিলাম। এখন আমাদের কোন দুঃশ্চিন্তা নেই। কারণ আমরা জানি, তখন চীন পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নেবে।
তিনি থাইল্যান্ডের খেলোয়াড়দের পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার প্রস্তুতিমূলক কাজের ব্যাখ্যা করার সময় বলেন, বর্তমান থাইল্যান্ডের মোট ৪০ জনেরও বেশি খেলোয়াড় পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। থাইল্যান্ড ১২০ জনেরও বেশি সদস্য নিয়ে গঠিত ক্রীড়া প্রতিনিধি দল পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশ নেবে বলে অনুমাণ করা হচ্ছে। বর্তমান খেলোয়াড় মনোনয়নের কাজ শেষ হয়নি। আগেকার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী পেইচিং অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণকারী থাইল্যান্ডের খেলোয়াড়দের সংখ্যা ৬০ এর কম ছিল। প্রশিক্ষক, চিকিত্সক ও কর্মকর্তাসহ থাইল্যান্ডের ক্রীড়া প্রতিনিধি দলের মোট লোকসংখ্যা ১২০ -এর কাছাকাছি।
চার বছরের আগে গ্রীসের এথেন্স অলিম্পিক গেমসে থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দল মুষ্টিযুদ্ধ ইভেন্টে একটি স্বর্ণপদক এবং ভারোত্তোলন ইভেন্টে দুটি স্বর্ণপদক পেয়েছে। এ পর্যন্ত এটি হচ্ছে সবচেয়ে ভালো ফলাফল। আসন্ন পেইচিং অলিম্পিক গেমস প্রসঙ্গে চারোক বলেন, থাইল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের লক্ষ্য হলো কমপক্ষ দুটি স্বার্ণপদক অর্জন। (লিলি)
|