v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-05 19:41:13    
পেইচিং তোমাকে স্বাগত জানায়(ছবি)

cri

 ৩০ এপ্রিল ২৯তম অলিম্পিক গেমস আয়োজনের আরো ১০০ দিন বাকি আছে। এ উপলক্ষ্যে আজ আমি আপনাদের জন্য একটি বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবো।

 সাত বছর আগে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট জুয়ান অ্যান্টোনিও সামারাঞ্চ ঘোষণা করলেন, ২০০৮ সালের ২৯তম অলিম্পিক গেমসের আয়োজক শহর হচ্ছে পেইচিং। এ কথা শোনার সাথে সাথে সারা চীন জুড়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতির মানুষের মতো চীনাদেরও অলিম্পিক গেমসের প্রতি গভীর আবেগ আর অনুভূতি আছে। আমরা দীর্ঘকাল ধরে এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম।

 অলিম্পিক গেমস খ্রীষ্ট পূর্ব নবম থেকে অষ্টম শতাব্দীতে প্রাচীন গ্রীসে শুরু হয়। তত্কালীন গ্রীসের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ ও সংঘর্ষ লেগেই থাকতো। লড়াই মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন রাজ্য সক্রিয়ভাবে সৈনিকদের প্রশিক্ষণ দিতো। আর এ যুদ্ধ গ্রীসের ক্রীড়া উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেছে। যুদ্ধ অবসানের পর সামরিক প্রশিক্ষণ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ধাপে ধাপে শান্তি ও মৈত্রীর গেমসে পরিণত হয়েছে। এখন অলিম্পিক গেমস আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত একটি বিশ্বব্যাপী সার্বিক গেমসে পরিণত হয়েছে। প্রতি চার বছর পর একবার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়াটার কিউব

 অলিম্পিক গেমস এখন একটি দীর্ঘ ইতিহাসসম্পন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ধারায় বিশ্বের শান্তি ও মৈত্রীর প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন দেশের জনগণের স্বাগত ও মনোযোগ আকর্ষণী ক্রীড়ায় নিজেকে মেনে ধরছে। গত সাত বছরে পেইচিং সবসময়ই অলিম্পিক গেমস সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতিমুলক কাজ সম্পন্ন করে চলছে। আসন্ন অলিম্পিক গেমসের এ সময় আমরা এক সাথে অলিম্পিক গেমসের একটি অভ্যর্থনার গান শুনি।

 এখন আপনারা বেঙাচি ব্যান্ডের গাওয়া 'ক্রীড়া সারা বিশ্বের' গানটি শুনছেন। বেঙাচি ব্যান্ড আধুনিক সুরে তাঁদের সেরা কন্ঠে অলিম্পিক গেমসের প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের ভালোবাসা ও প্রত্যাশাকে ফুটিয়ে তুলেছেন। গানের কথা এমন, 'ক্রীড়া সারা বিশ্বের। দিন রাত আনন্দে ভরা। ক্রীড়া সারা বিশ্বের। তুমি, আমি , সে একসাথে অলিম্পিকের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবো। বর্ণময় পাঁচ রিং-এর পতাকা প্রতিটি শহরের প্রতিটি রাস্তায় সগর্বে আন্দোলিত হবে। ভালোবাসা দেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে যাবে। সকলের মন আনন্দের সাথে দুলে উঠবে।

 পেইচিং অলিম্পিক গেমসের আগমনী দিন ঘনিষ্ঠ হয়ে আসার পাশাপাশি চীনা জাতির শত বছরের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। গত সাত বছর চীন সরকার ও জনগণ বিশ্বের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে আসছে। ২০০৫ সালের ২৬ জুন চীন বিশ্বের কাছে অলিম্পিক স্লোগান তুলে ধরে। তা হচ্ছে 'এক পৃথিবী এক স্বপ্ন'। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের সভ্যতার সফলতা উপভোগ করা আর হাতে হাত মিলিয়ে ভবিষ্যত সৃষ্টির শুভ কামনা প্রকাশ পেয়েছে। অলিম্পিক স্লোগান প্রচারের পর এ সম্পর্কিত অনেক গান রচিত হয়েছে। এই গানগুলো পেইচিং অলিম্পিকের ভাবমূর্তি স্থাপন, পেইচিং অলিম্পিক গেমসের চিন্তাধারা প্রচার এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আগ্রহ বাড়ানোও উত্সাহিত করে তোলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

 এখন আপনারা অলিম্পিক স্লোগানের একই নামের গান শুনছেন। চীনের গায়ক কুয়ান চেন 'এক পৃথিবী এক স্বপ্ন' গানটি গেয়েছেন। গানে চীনা জনগণের অলিম্পিক গেমসের প্রত্যাশা ও শান্তি অন্বেষণের ইচ্ছার কথাই প্রকাশিত হয়েছে। গানের কথা এমনঃ 'শুকতারা আমাকে দিক অন্বেষণে সাহায্য করে। ভাবনাগুলো আমার পাখা হিসেবে আমার স্বপ্নকে নিয়ে উড়ে বেড়ায়। অন্তর দিয়ে দেখো, সব দিকে টাটকা ও মুক্তির প্রশান্ত ভাব। গৌরব ও স্বপ্ন সব এখানেই বাস্তবায়িত হবে।'

বার্ড নেস্ট

 অলিম্পিক গেমস আয়োজনের অধিকার পাওয়ার পর পেইচিংয়ের বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নির্মিত এক একটি স্টেডিয়াম চীনাদের গর্বের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে অলিম্পিক গেমসের প্রধান স্টেডিয়াম --- 'বার্ড নেস্ট' নামক জাতীয় স্টেডিয়াম ও 'ওয়াটার কিউব' নামক সাঁতার প্রতিযোগিতার স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু ছিল। প্রতি দিন অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটক এ দু'টি স্টেডিয়াম দেখার জন্য আসেন। তা ছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের হাসি সেবা, 'সৌভাগ্যের পেইচিং' নামে প্রতিযোগিতার সুষ্ঠু আয়োজনসহ নানা কাজের মধ্য দিয়ে চীনা জাতির বুদ্ধি, পরিশ্রম ও আন্তরিকতাই প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এক শত দিনের পর পেইচিং আরো সুন্দর হবে। চীনা জনগণ বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের সঙ্গে অলিম্পিকের চেতনা অনুভব এবং অলিম্পিকের আনন্দ ও গৌরবকে উপভোগ করবেন।

 এখন আপনারা 'we are ready' গান শুনছেন। হংকংয়ের নামকরা সুরকার চিন পেই দা ও চেন শাও ছি অলিম্পিক গেমসের জন্য বিশেষ করে এই গান লিখেছেন। চীনের মূলভূভাগ, হংকং, ম্যাকাও ও তাইওয়ানের এক শরও বেশি কন্ঠ শিল্পী এই গান গেয়েছেন। গানের কথা এমনঃ 'দিন দিনের অপেক্ষার পর এই মহা যুগে আমরা আগ্রহ নিয়ে আরো বিরাট মঞ্চ সৃষ্টি করবো। এই মাটি এখন প্রস্তুত হয়েছে। সারা বিশ্বের দৃষ্টি আমাদের দিকে ঝুকে পরবে। we are ready. আমাদের মন এক সঙ্গে আছে। আকাশ ও মাটি সংযুক্ত হয়েছে। আমরা নিজেকে অতিক্রম করে একটি গৌরবময় বিজয় লাভ করবো।'

 

 ফুওয়া

    ফুওয়া হচ্ছে পেইচিং ২০০৮ সালে ২৯তম অলিম্পিক গেমসের মাস্কট। এর রং ও অনুপ্রেরণা হচ্ছে অলিম্পিকের পাঁচ রিং, চীনের বিস্তীর্ণ পাহাড় , ভূমি ও নদনদী এবং মানুষের প্রিয় প্রাণী। ফুওয়া বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের শিশুদের কাছে মৈত্রী, শান্তি ও অগ্রগতির প্রতীক এবং মানুষ ও প্রকৃতির সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাসের শুভ কামনা পৌঁছে দিয়েছে। ফুওয়া হচ্ছে শিশুদের ঘনিষ্ঠ অংশীদার।

 অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে এসে শুনুন পেইচিং অলিম্পিক গেমসের ১০০ দিন বাকি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের টাইটল গান 'পেইচিং তোমাকে স্বাগত'। এটা হচ্ছে বিশ্ব জনগণের কাছে চীনা জনগণের আমন্ত্রণ।

 গানের কথা এমনঃ 'আমার বাসার দরজা তোমার জন্য খোলা রয়েছে। তুমি এখানে আসলে তা ভালোবাসায় ভরে উঠবে। দূরের বন্ধু হোক, কাছের বন্ধু হোক, আমরা তোমাদের স্বাগত জানাই। পেইচিং তোমাকে স্বাগত জানায়। সূর্যের নিচে আমরা শ্বাস নিই। হলুদ মাটিতে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। পেইচিং তোমাকে স্বাগত জানায়। সাহস থাকলেই শুধু বিস্ময় সৃষ্টি করা যায়।'

 বন্ধুরা, অলিম্পিক মশাল হস্তান্তর এখন চীনে চলছে। মশাল হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় আপনারা চীনা জাতির দৃঢ়তা ও সংহতি দেখতে পেরেছেন। আমাদের বিশ্বাস, আন্তরিকতার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে মশাল হস্তান্তর হবে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)

জুয়ান আন্টোনিও সামারাঞ্চ খ্রীষ্ট পূর্ব একটি নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হওয়া