চীনের সিয়াংসি প্রদেশের পিংসিয়াং শহর চিয়াংসি প্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প শহর। শহরটি কয়লা , যন্ত্রাংশ তৈরী, ধাতুঢালাই, রসায়ন শিল্প, নির্মাণ উপাদান ও চীনা মাটি সমৃদ্ধ। এর মধ্যে কয়লার উন্নয়ন এ শহরের অবলম্বন শিল্প । কয়লা উত্পাদনের পরিমান গোটা প্রদেশের মোট উত্পাদনের পরিমানের ৪০ শতাংশ । অতীতে পিংসিয়াং শহরের জলবায়ু গুরুতরভাবে দুষিত ছিল । জনগণের জীবনযাপন ও আবসনের অবস্থা খুব খারাপ ছিল । জনগণের মনে শহরটি স্থলময়লা এবং বিশৃঙখলার শহর । কিন্তু গত ২ বছরে পিংসিয়াং শহরের গণ সরকার পুরানো বাড়ি ভেঙ্গে নতুন করে গড়ে তুলেছে বা স্থানান্তরিত করেছে, যে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেশি দুষিত পদার্থ নিঃসরণ করে সে সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের রূপান্তর এবং পরিবেশ রক্ষার পক্ষে সহায়ক ও জ্বালানী সম্পদসাশ্রয় হয় এমন শিল্প উন্নয়ন জোরদার করায় শহরটির আঙ্গিক দিক থেকে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে ।
" ইয়াংসি নদীর দক্ষিণাঞ্চলের কয়লার রাজধানী" নামে পিংসিয়াং পরিচিত । কয়লার উন্নয়ন স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । কিন্তু কয়লার উত্পাদন গুরুতরভাবে জলবায়ু এবং সড়কপথ দুষিত করেছে । পিংসিয়াং শহরের পার্টি কমিটির একজন কর্মকর্তা রেনপিন বলেছেন , আগে আবহাওয়া গুরুতর দুষিত থাকার কারণে রাতে চাঁদকেও স্পষ্ট দেখা যেতে না । তিনি বলেন , আগে আমাদের এখানকার মেয়েরা স্কার্ট পরে রাস্তায় বেড়াতে যেতো না । বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল । মাটির কাদা পানি সহজেই কাপড়ে লাগতো। এখন সাদা রঙয়ের কাপড় পরেও রাস্তায় যেতে সমস্যা হয় না । জ্বালানী সম্পদসাশ্রয় ও নিঃসরণ কমিয়ে দেয়া এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য পিংসিয়াং শহর যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে , পানীয় জলের উত্স রক্ষা করা, সিমেন্ট ও চীনামাটিসহ পরিবেশ দুষণ করে এমন শিল্পের রূপান্তর করা , অনাবাদি জমিতে গাছ লাগিয়ে দেয়া , শহরের সড়কপথ নির্মাণ ও মেরামতে দশ-বারোকোটি ইউয়ান বরাদ্দ করা । ব্যবস্থাগুলো নেয়ার ফলে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে ।
এক প্রাথমিক পরিসংখ্যানে জানা গেছে , ২০০৭ সালে পিংসিয়াং শহর দশ হাজার ইউয়ান মূল্যের পণ্যদ্রব্য উত্পাদন করে যে জ্বালানী সম্পদ ব্যয় করেছে তা এখন ৪.৪শতাংশ কমেছে । পরিস্কার জ্বালানী সম্পদ ব্যয়ের হার ৭০ শতাংশ । শহরাঞ্চলের জলবায়ুর গুণগতমান রাষ্ট্রের নির্ধারিত দ্বিতীয় শ্রেণীর মানদন্ডেদাঁড়িয়েছে । শ্রেষ্ঠ দিনের সংখ্যা ছিল ৩৪৮ ।
আনইউয়ান বিভাগের পা-ই এলাকা পিংসিয়াং শহরের সবচেয়ে পুরাতন এলাকা । তার অবস্থা পরিবর্তন করা সবচেয়ে কঠিন । এই এলাকার কর্মকর্তা লাইং পিং বলেছেন , মাত্র এক বছরের মধ্যে পিংসিয়াং শহরের সবচেয়ে পুরাতন এলাকার আঙ্গিকেরপরিবর্তন করা হয়েছে । তিনি বলেন , আমাদের এখানকার সব বড় রাস্তা ও গলি খুব পরিস্কার । আমরা পুরানো বাড়িগুলো নতুন করে সাজিয়ে দিয়েছি । ১৭৮০টি বাড়ি মেরামত করেছি । তাছাড়া আমরা খালি স্থানে ফুল গাছ লাগিয়েছে এবং ব্যায়ামের সাজসরঞ্জাম স্থাপন করেছে ।
সুং চেছিং পা-ই এলাকার একজ প্রবীন বাসিন্দা । তিনি প্রত্যেক দিন খাতায় প্রতিবেশীদের মতামত লিখে নেন এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে পাঠান । এ সম্পর্কে তিনি বলেন , শহরের অন্যান্য ক্ষেত্রের নির্মান কাজ চলেছে । তাই পরিবেশ উন্নয়নের নির্মাণকেও জোরদার করতে হবে । নইলে আমাদের আবাসন এলাকা এলোমেলো হবে । আমরা সক্রিয়ভাবে সরকারকে পরিবেশ রক্ষায়সমর্থন করব এবং আমাদের অবদান রাখব ।
শহরের নির্মাণ জোরদার এবং শহরের পরিবেশ উন্নত করার সাথেসাথে নাগরিকদের গুণগতমানেরও উন্নত হয়েছে । এখানে ওখানে ময়লা জিনিস ও থুথু ফেলা সহ খারাপ আচরণ অনেক কমেছে । পিংসিয়াং শহরের পরবর্তীকালের পরিকল্পনা সম্পর্কেমিঃ রেনপিং বলেছেন , প্রাদেশিক পর্যায়ের সভ্যতার শহরের ভিত্তিতে পিংসিয়াং শহর দেশের সভ্য শহর এবং স্বাস্থ্যকর শহরে পরিণত করার চেষ্টা চালাবে । --চুং শাওলি
|