v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-05-01 19:31:43    
চিয়াং সি চিংকাংশান বিপ্লব যাদুঘরকে দেখা

cri

শ্রোতাবন্ধুরা, মধ্য চীনের চিয়াং সি প্রদেশের চিংকাংশানে উঁচু উঁচু পাহাড় ও ঘন গাছ আছে। ৮০ বছর আগে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের গ্রামীণ বিপ্লবের প্রথম মূল ঘাঁটি গড়ে তোলেন সেখানে। এ জন্য চিংকাংশান চীনের বিপ্লবের জন্মস্থল বলে পরিচিত। ২০০৭ সালে সেখানকার ছিপিং নগরে সে সময়ের বিপ্লবী ইতিহাসের স্মৃতি হিসেবে চিংকাংশান বিপ্লব জাদুঘর নির্মিত হয়। ২০০৭ সালের ২৭ অক্টোবর জাদুঘর চালু হওয়ার পর বহু পর্যটক এখানে এসেছেন। পর্যটকরা জাদুঘরের নকশাবিদের নৈপুণ্যের কারণে বিপ্লবের সময়কার পরিবেশ অনুভব করতে পারেন। এখন আমরা আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সেই জাদুঘরটিতে চীনের সে সময়ের ইতিহাস ঘুরে ঘুরে দেখবো।

চিংকাংশান বিপ্লব জাদুঘরের নির্মিত স্থাপত্যের মোট আয়তন ২০ সহস্রাধিক বর্গমিটার। প্রধান স্থাপত্যটিতে ৪টি তলা আছে। প্রথম তলা হচ্ছে গাড়ি পার্কিং ও রিপোর্টিং হল। দ্বিতীয় তলায় পুরাকীর্তি নিদর্শনের গুদাম ও অফিস। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় প্রদর্শনী হল। দুটি তলার মোট ৬টি প্রদর্শনী হলে ৮শ'রও বেশি পুরাকীর্তি নিদর্শন এবং ২ হাজারেরও বেশি । ঐতিহাসিক ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রদর্শনী হলের মোট আয়তন ৮ হাজার ৪শ' ৩৬ বর্গমিটার। এছাড়া এখানে অনেক ঐতিহাসিক নথিপত্র আছে। জাদুঘরের আকার ইংরেজী ইউ অক্ষরের মতো এবং ছাদের রঙ লাল। জাদুঘরের সামনে ৬টি বড় স্তম্ভ আছে। পুরো জাদুঘর দেখতে খুব মহিমাময়।

জাদুঘরের প্রথমহলে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়ে একটি তেলের প্রদীপের ভাস্কর্য। ভাস্কর্যের পটভূমি হচ্ছে সবুজ ও ঢেউ খেলানো পাহাড় চিংকাংশান। চীনের অধিকাংশ জাদুঘরের প্রথম হলে প্রদর্শনীর প্রধান বিষয়বস্তু মানুষ। কিন্তু চিংকাংশান জাদুঘর এখানে ব্যতিক্রমী তেলের প্রদীপ ও পাহাড়ই প্রধান। 'চিয়াং সি পিকচার্স' ম্যাগাজিনের প্রধান কুও চিয়া শেং এ বিষয়ে বলেন,

এখানে দাঁড়ালে আমরা অতীত দেখতে পাই এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা পাই। এমনকি লাল ও সবুজ রং অনুভব করতে পারি, যা অভিনব ও সমারোহময়। বিগত দিনগুলোতে আমরা এই তেলের প্রদীপ দেখেছি। এটি বিপ্লবে বিজয়ের নিদর্শন। চেয়ারম্যান মাও সেতুংয়ের ব্যবহৃত প্রদীপের আলো চীনের বিপ্লবী বিজয়ের ভবিষ্যতকে আলোকিত করেছে।

৮০ বছর আগে মাও সেতুংয়ের নেতৃত্বে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা এখানে 'শ্রমিক ও কৃষকের সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে প্রথম গ্রামীণ বিপ্লবের মূল ঘাঁটি গড়ে তুলেছিলেন। এর মধ্য দিয়ে গ্রাম থেকে শহর ঘেরা ও সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের পথ সুগম করার পাশাপাশি এটি ছিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে প্রথম বারের মতো লক্ষ্যের দিকে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া এবং চিংকাংশান চেতনাকে ধারণ করার ঘটনা।

চিংকাংশান বিপ্লবের মূল ঘাঁটির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে গৌরবদায়ক ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে নতুন এই জাদুঘরটি চিংকাংশানে নির্মিত হয়েছে। চিংকাংশানের '১ নম্বর প্রকল্প'-এর এই চিংকাংশান বিপ্লব জাদুঘরটি একটি দেশপ্রেমিক শিক্ষা জাদুঘর।

জাদুঘরে অনেক বড় আকারের প্রদর্শনী আছে। বিপুল শব্দ, আলো ও বিদ্যুতসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে '১ আগস্টের নান ছাং বিদ্রোহ', 'বিপ্লবীদের চিংকাংশান মিলন' ও 'লালফৌজের লং মার্চ'সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা এখানে দেখানো হয়। এ সব ঐতিহাসিক ঘটনা, শিল্পকর্ম ও ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন শিল্পের অপূর্ব সমন্বয়ে দর্শনার্থীরা বিপ্লবের দিনগুলোর আবহ অনুভব করতে পারেন।

জাদুঘরের সবচেয়ে মহত্ শিল্পকর্ম হচ্ছে বৃহদাকার ভাস্কর্য 'বিজয়ের সূচনা বিন্দু'। চীনের লু স্যুন চিত্রকলা কলেজ ভাস্কর্যটি তৈরি করেছে। এতে চু তে ও মাওসেতুংয়ের একত্রীত হওয়ার ঘটনাটি উপস্থাপিত হয়েছে। ভাস্কর্যটি দেখতে ইংরেজী অক্ষর 'ভি'য়ের মতো এবং অনেকটা উড়ন্ত ঈগলের মতো। ভাস্কর্যের মাঝখানে মাওসেতুং ও চু তে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। মাওসেতুং'য়ের মুষ্টিবদ্ধ হাত যেন শক্তির প্রতীক। চু তে'র ডান হাত কোমরে পিস্তলের বাটে রাখা। দেখলে মনে হবে, যে কোন সময় যুদ্ধ করার জন্য তিনি প্রস্তুত। পুরো ভাস্কর্যে লাল ফৌজের সৈন্য সংখ্যা মোট ১শ' ৮। তাদের অধিকাংশকে আলিঙ্গনাবদ্ধ অথবা হাতের ইশারায় অন্য কাউকে সমর্থনরত কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলা অবস্থায় দেখা যায়। সবা'র মুখে বিজয়ী মহামিলনের আনন্দ। পুরো ভাস্কর্যটি ৮মিটার উঁচু, যা চিংকাংশান বিপ্লবের মূল ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকীর প্রতীক। ভাস্কর্যটির চওড়া ১৯.২৭ মিটার, যা ১৯২৭ সালে চিংকাংশান বিপ্লবী মূলঘাঁটি প্রতিষ্ঠার সময়টি স্মরণ করিয়ে দেয়। ২শ' ৮০টিরও বেশি গ্র্যানাইট পাথর দিয়ে নির্মিত ভাস্কর্যটির ওজন ৫শতাধিক টন!

1 2