v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-29 21:01:48    
চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের তাইওয়ান প্রাদেশিক প্রতিনিধিরা দুপারের উন্নয়নে অবদান রাখছেন

cri
    চীনে জাতীয় গণ কংগ্রেসের এবং জাতীয় রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের বার্ষিক অধিবেশন কিছু দিন আগে শেষ হয়েছে । বার্ষিক অধিবেশন দুটি চলাকালে প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও তাইওয়ান প্রণালীর দু পারের সম্পর্ক উন্নয়ন সম্পর্কে যে ভাষণ দিয়েছেন তা দেশবিদেশে তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি করেছে । সবাই মনে করে, হু চিনথাওয়ের ভাষণে তাইওয়ানবাসীদের প্রতি মাতৃভূমির মূলভূভাগের আন্তরিকতাই প্রমাণিত হয়েছে ।

    বিগত কয়েক বছরে তাইওয়ানবাসীদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার জন্য মূলভূভাড় নানা সুবিধাজনক ব্যবস্থা নিয়েছে । এর গোটা প্রক্রিয়ায় জাতীয় গণ কংগ্রেসের তাইওয়ান প্রাদেশিক সদস্যরা নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ।

    ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিয়া ওয়েনচেন তাইওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে মাষ্টার ডিগ্রি পাশ করে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ডঃ ডিগ্রি করতে আসেন । গত আড়াই বছরের প্রত্যেক দিন তিনি সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করেন । এখন এখানকার সব কিছুর সাথে তিনি অভ্যস্ত হয়েছেন । কিন্তু মূলভূভাগে আসার আগে সিয়া ওয়েনচেন অনেক চিন্তাভাবনার পর মূলভাগের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার সিদ্ধান্ত নেন । সিদ্ধান্ত নিতে তার অসুবিধার দুটো কারণ ছিল । এক, তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ মূলভূভাগের একাডেমীক সনদপত্র স্বীকার করে না । দুই, স্কুল ফির সমস্যা । তখন স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় তাইওয়ান থেকে পড়তে আসা ছাত্রছাত্রীদের অনেক বেশী স্কুল ফি দিতে হতো । কিন্তু ২০০৫ সালের শরত্কালে চীন সরকার প্রাসঙ্গিক শিক্ষা নীতি চালু করে । যাতে মূলভূভাগের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা ইনস্টিটিউটে তাইওয়ান থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা স্থানীয় ছাত্রদের সমান সুবিধা উপভোগ করতে পারে । এইভাবে তাদের স্কুল ফি আগের চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ কম এবং আবাসনের ফি আগের এক-দশমাংশের চেয়েও কম । এ সম্পর্কে সিয়া ওয়েনচেন বলেন , পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয়ে মাষ্টার ডিগ্রি পড়তে এক বছরে প্রায় দশ হাজার ইউয়ান লাগে । এখন তাইওয়ানের প্রায় ৫০০০ ছাত্র মূলভূভাগে লেখাপড়া করছে । সিয়া ওয়েনচেন জানেন, মূলভূভাগের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সক্রিয় কর্মকান্ড ছাড়া জাতীয় গণ কংগ্রেসের তাইওয়ান প্রাদেশিক প্রতিনিধিদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তাইওয়ানের ছাত্রদের উপকৃত হওয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে ।

    ৬০ বছর বয়সী ওয়েই লিহুই তাইওয়ান প্রদেশের চাংহুয়া জেলার মানুষ । জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দীর্ঘকাল ধরে দুপারের সম্পর্ক উন্নয়নে নিজের অবদান রেখে আসছেন । যাতে তাইওয়ানবাসীদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষা করা যায় । তিনি বলেন , প্রতিটি বার্ষিক অধিবেশনের আগে আমি কিছু গবেষণা বা ব্যাপক মতামত সংগ্রহ করি । রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়নে আমাদের উত্থাপিত মতামত অনেক ভূমিকা পালন করেছে । তাইওয়ান সমস্যা সম্পর্কে আমরা যে মতামত পেশ করেছি গত দশ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার তার ওপর খুব গুরুত্ব দিয়েছে ।

    মুলভূভাগে তাইওয়ানের ছাত্রদের লেখাপড়া করার কথাই ধরা যাক। তাইওয়ানের আরও বেশি ছাত্রকে মূলভূভাগে পড়তে আসতে আকর্ষণ করার জন্য ওয়েই লিহুই পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব পেশ করেছিলেন । প্রস্তাবটি পেশ করার সঙ্গেসঙ্গে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তাইওয়ান বিষয়ক অফিস ও শিক্ষা দপ্তর তা গ্রহণ করে ।

    ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে মূলভূভাগের সংশ্লিষ্ট নীতি অনুযায়ী তাইওয়ানে মেডিক্যাল বিষয়ক একাডেমীক সনদপত্র পেয়েছে এমন ছাত্র মূলভূভাগের ডাক্তারের যোগ্যতা সম্পর্কিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে । খবরটা ওয়েই লিহুইর জন্য খুশির ব্যাপার । কারণ এ প্রস্তাব তিনিই পেশ করেছেন ।

    গত এক বছর মূলভূভাগ ডাক্তার সহ তাইওয়ানবাসীদের প্রতি মোট ১৫ ধরণের যোগ্যতার পরীক্ষার বিষয় অনুমোদন করেছে । ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মূলভূভাগ তাইওয়ানবাসীদের জন্য কর্মসংস্থান, চিকিত্সা , বিবাহ ও পর্যটনসহ মোট ৫৪টি সুবিধাজনক নীতি নিয়েছে ।

    অন্য একজন প্রতিনিধি ছেন ইউয়ুনইং তাইওয়ানবাসীদের অধিকার ও স্বার্থ নিশ্চিত সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করেছেন । তিনি মনে করেন , শুধু মাতৃভূমিতে বসবাসকারী তাইওয়ানবাসীদের নয়, মুলভূভাগের বাইরে বসবাসকারী তাইওয়ানবাসীদের অধিকার ও স্বার্থও নিশ্চিত করা উচিত । তিনি বলেন , তাইওয়ানবাসী আমাদের স্বদেশবাসী। তাই আমাদের তাদের অধিকার ও স্বার্থ নিশ্চিত করতে হবে । আমাদের মাতৃভূমি শক্তিশালী হয়েছে এবং তাদের রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে ।

    তাইওয়ানে মাদাম ছেন ইউয়ুনইংয়ের জন্ম এবং তিনি সেখানেই বড় হন । ৩০ বছর বয়সে তিনি মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন । একজন সত্যিকারের তাইপেই অধিবাসী হিসেবে তিনি মনে করেন, এ বছরের ৪ মার্চ দুপারের সম্পর্ক সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা সত্যিই তাইওয়ানী জনগণের মনের বাসনা । তিনি বলেন , আমার মনে হয়, প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও আন্তরিকভাবে তাইওয়ানী জনগণের যত্ন নেন । তিনি স্পষ্ট জানেন , ঐতিহাসিক কারণে প্রণালীর দুপার বর্তমান অবস্থায় রয়েছে । কী ভাবে তাইওয়ানবাসীদের জন্য আরও কিছু বেশি করা যায় তা নিয়ে তিনি বিবেচনা করেন । আমি ৩০ বছর বয়সে তাইওয়ান ত্যাগ করে মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছি । তাঁর কথায় আমি মুগ্ধ হয়েছি । আমি মনে করি , তিনি আমাদের উদ্দেশ্যেই এই কথা বলছিলেন ।

    প্রেসিডেন্ট হু চিনথাও বলেছিলেন ,যে কাজ তাইওয়ানবাসীদের , তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি রক্ষার অথবা মাতৃভূমির শান্তিপূর্ণ একীকরণ তরান্বিত করার পক্ষে সহায়ক হবে আমরা সর্বাধিকভাবে তা সম্পন্ন করার চেষ্টা চালাব । তাইওয়ানবাসীদের প্রতি আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আমরা আগাগোড়াভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করব । পরিস্থিতির ওঠানামা হোক বা অতি অল্প লোকের স্বেচ্ছায় বাধা সৃষ্টি করা হোক আমাদের নীতির পরিবর্তন হবে না ।