v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-29 16:44:18    
ইরানের দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি সংক্রান্ত কূটনৈতিক নীতি

cri
    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদি নেজাদ ২৮ এপ্রিল পাকিস্তানে পৌঁছে তার দক্ষিণ এশিয়া সফর শুরু করেছেন। এবারের সফরে পাকিস্তান ছাড়াও তিনি শ্রীলংকা ও ভারত সফর করবেন। জানা গেছে, নেজাদের এবারের সফরের প্রধান লক্ষ্য হল ইরান-পাকিস্তান-ভারত প্রাকৃতিক গ্যাস লাইনের সহযোগিতা ত্বরান্বিত করা। সফরের আগে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আলি হোসেনি এবারের সফরে 'প্রাকৃতিক গ্যাস লাইন সহযোগিতায় মতৈক্য' অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

    ইরান-পাকিস্তান-ভারত প্রাকৃতিক গ্যাস লাইন নির্মান প্রকল্প বিংশ শতাব্দীর নববই'য়ের দশকে শুরু হয়। ৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৩ সালে গ্যাস সরবরাহ চালু হওয়ার কথা। এই প্রকল্পটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে এ লাইনটিকে "শান্তি ও অগ্রগতি'র পাইপ লাইন" বলা হয়। প্রকল্প চালু হওয়ার প্রথম দিকে লাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন ৬ কোটি কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা   হবে। পাকিস্তান ও ভারত এই গ্যাস সমানভাবে ভাগ করে নেবে। এরপর গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ ১৫কোটি কিউবিক মিটারে উন্নীত হবে। তিনটি দেশ এই প্রকল্প নিয়ে বহু বার আলোচনা করেছে, কিন্তু তেমন কোন অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। ২০০৭ সলের জুলাই মাসে পাইপ লাইন সীমান্ত এলাকায় প্রবেশের ব্যয় নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মতভেদের কারণে আলোচনা স্থগিত ছিল। ২৫ এপ্রিল এ বিষয় দু'পক্ষ একমত হয়েছে বলে আগামী বছর এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তা সত্ত্বেও পাইপ লাইন সংক্রান্ত তিন পক্ষের চূড়ান্ত আলোচনায় অংশ নিতে ভারত অস্বীকার করেছে এবং তেহরানে অনুষ্ঠিত তিন পক্ষের প্রস্তুতিমূলক সম্মেলনে অংশ নেয়নি। এ জন্য নেজাদ দক্ষিণ এশিয়া সফরের সিদ্ধান্ত নেন।

    ২৮ এপ্রিল নেজাদ ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ এবং প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানির সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেছেন। বৈঠককালে পাইপ লাইন নির্মাণ, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে মুশাররফ ও নেজাদ বলেন, দু'পক্ষ পাইপ লাইন সংক্রান্ত সকল সমস্যার নিষ্পত্তি করেছে। দু'পক্ষ এই প্রকল্পের ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছে। পাকিস্তান সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে, মুশাররফের তেহরানে পৌঁছার পর এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। পাকিস্তান সংবাদ মাধ্যমগুলো প্রায় একই মত পোষণ করে যে, প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ পাকিস্তানের বর্ধিত জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারবে।

    ইরান-পাকিস্তান-ভারত প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্প তার কৌশলগত ভূমিকার কারণে বিভিন্ন দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর চাপ দেওয়ার কারণে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছে। এর পাশাপাশি ভারতে আরেকটি পাইপ লাইন নির্মাণ এবং বেসামরিক পারমাণবিক প্রযুক্তি সাহায্য দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এ কারণে চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট হয়নি।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন নেজাদের এবারের সফরের প্রধান ধাপ হলো ভারত। ৫ বছরের মধ্যে ইরানী কোনো নেতা প্রথম বারের মত ভারত সফর করছেন। এতে ইরানের কৌশলগত পরিবর্তন এবং ভারতের ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

    ভারত ও ইরানের সম্পর্ক সুষ্ঠু অবস্থায় ছিল, বিশেষ করে সামরিক ও জ্বালানি ক্ষেত্রের সহযোগিতা। কিন্তু নেজাদ নিযুক্ত হওয়ার পর ইরান ও পশ্চিমা দেশের সম্পর্ক আগের চেয়ে দূরত্ব অনেক বেড়েছে, ভারতের সঙ্গেও। ভারত তখন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশের সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে তার পারমাণবিক দায়িত্বের ভূমিকার প্রশ্নে অভিযোগ করেছিল।

    তিন বছরের পার্থক্য থাকার পর ইরান ও ভারত উভয় দু'দেশের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে। ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা চালালে ইরানের জ্বালানির জন্য আরেক বাজার খুলবে। এর সঙ্গে সঙ্গে কৌশলগত লক্ষ্য পূর্ব দিকে স্থানান্তরিত করার লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ভারতের পক্ষে অর্থনীতি দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা আরো বাড়বে। এই চাহিদা মেটানোর জন্য ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা চালানো ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। (ইয়াং ওয়েই মিং)