আফগানিস্তানের যোদ্ধাদের হাতে রাশিয়া সমর্থিত কমিউনিষ্ট শাসন পতনের ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এই অনুষ্ঠান তালেবান জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়। এখন শুনুন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিজস্ব সংবাদদাতা শি শাও ইয়েনের পাঠানো এ সংক্রান্তএকটি রিপোট শুনবেন ।
আফগানিস্তানের যোদ্ধাদের হাতে রাশিয়া সমর্থিত কমিউনিষ্ট শাসন পতনের ১৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২৭ এপ্রিল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট হামিদ কারাজাই সহ সরকারের উচ্চ পদস্থ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সময় ২৭ এপ্রিলসকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে যখন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ভাষণ দিতে প্রস্তুত তখন তালেবান জঙ্গিরা অনুষ্ঠানস্থলের ওপর বেশ কয়েকটি রকেট ছোঁড়ে এবং সরকারী বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় শুরু করে। এতে এক জন পার্লামেন্টসদস্য সহ চার জন নিহত ও সাত জন আহত হয়। প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই অল্পের জন্য রক্ষা পান। এর পর তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরকারি ভাষণ দেন । তিনি বলেন,
প্রিয় স্বদেশীগণ, আপনারা সবাই জানেন , আফগানিস্তানের শান্তি ও উন্নয়নের শক্ররা আজকের এই বিশেষ অনুষ্ঠানকে বানচালের অপচেষ্টা চালিয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে আফগানিস্তান সরকারি বাহিনী তাদেরকে ঘিরে ফেলেছে এবং বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে ।
এর পর নিহতদের শেষকৃত্যানুষ্ঠান হয়। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হাওয়ায়েদ এই সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত কাজের প্রক্রিয়া সম্পর্কেঅবহিত করেছেন । তিনি বলেন,
আমরা মনে করি, তিন জন তালেবান যোদ্ধা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে । বাকী কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । এখন প্রেসিডেন্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু হচ্ছে ।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিওল্লাহ মুজাহীদ বলেন তালেবানরা এ হামলার জন্য দায়িত্ব পালন করে । তিনি বলেন, ৬জন তালেবান জঙ্গির সদস্য বিস্ফোরক গায়ে বেঁধে এবং হাতে স্বংয়ক্রিয় রাইফেল নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে । ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েক জন সন্দেহভাজন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে ।
এ বছরের শুরু থেকেই আফগানিস্তানের পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে । বিভিন্ন হামলায় ৪৫০জন নিহত হয়েছে । গত ২৫ মার্চ তালেবান আফগানিস্তানের সরকারী ও বিদেশী বাহিনীর বিরুদ্ধে " বসন্ত আক্রমণ" চালানোর কথা ঘোষণা করে । ২০০১ সালের পর তালেবান জঙ্গী বেশ কয়েক বার " বসন্ত আক্রমণ" চালিয়েছে । ফলে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে উঠেছে। এ প্রসংগে চীনের সমাজ বিজ্ঞান একেডিমির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ই হাই লিন বলেন,
বাস্তবতা থেকে বোঁঝা যায়, বতর্মানে ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনী তালেবান জঙ্গিদেরকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে । এখন তালেবানরা আফগানিস্তানের মোট ভূভাগের অর্ধেকেরও বেশী অংশ দখল করে ফেলেছে । বিশেষ করে তারা দক্ষিণাংশের পুসতু জাতি অধ্যুষিত অঞ্চলটি পুরোপুরি দখল করে ফেলেছে । তা ছাড়া বিদেশে তালেবানের ঘাঁটিও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । কিন্তু ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের বসানো হামিদ কারাজাই সরকারকে উত্খাতের ক্ষমতা তাদের আপাতত নেই ।
|