২০০৮ সালের ২২ এপ্রিল ৩৯তম 'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস'।
'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস'-এর যাত্রা শুরু আমেরিকা থেকে। ১৯৭০ সালের ২২ এপ্রিল 'ধরিত্রী দিবস'-এ আমেরিকায় বড় ধরনের কর্মসূচী পালিত হয়। কয়েক লাখ মানুষ সেখানে সমাবেশ করে একটি পরিচ্ছন্ন, সহজ ও শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানায়।
আধুনিক পরিবেশ সংরক্ষণ কর্মসূচীর সূচনা হিসেবে 'ধরিত্রী দিসব' বেশ কয়েকটি দেশে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন ত্বরান্বিত করেছে। ১৯৯০ সালের ২২ এপ্রিল বিশ্বের ১শ' ৪০টিরও বেশি দেশের ২০ কোটি মানুষ একই সময় বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ সংরক্ষণ প্রচারভাযিনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর পরিবেশকে উন্নত করার আহ্বান জানায়। এই কর্মসূচী জাতিসংঘের স্বীকৃতিও পেয়েছে। এরপর থেকে প্রতি বছরের ২২ এপ্রিল 'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস' পালিত হয়ে আসছে।
বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ সমস্যা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। পানি ও মাটির ক্ষয়, মরুকরণ ও মিঠা পানি সম্পদের দূষণসহ বিভিন্ন সমস্যা মানবজাতির জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলছে। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রাতিরিক্ত নির্গমনের কারণে বায়ুমন্ডলে বিষাক্ত গ্রীনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব অব্যাহতভাবে বাড়ছে। ফলে বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এ থেকে সৃষ্ট বিশ্ব জলবায়ু'র অস্বাভাবিক পরিবর্তন মানবজাতির জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে।
'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস' কর্মসূচীর লক্ষ্য হচ্ছে মানবজাতির প্রতি পৃথিবী ও নিজের আবাসের সুরক্ষা এবং সম্পদ ও পরিবেশ সংরক্ষণের সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানানো। যদিও প্রতি বছরের 'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস'-এর নির্দিষ্ট কোনো শ্লোগান নেই, তবুও 'একমাত্র পৃথিবী'ই হচ্ছে এর প্রতিপাদ্য। আরো ভালোভাবে পৃথিবীকে রক্ষার জন্য ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬০তম অধিবেশনে এক প্রস্তাবে ২০০৮ সালকে 'আন্তর্জাতিক ধরিত্রী বর্ষ' হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বিংশ শতাব্দীর ৯০-এর দশক থেকে প্রতি বছরের ২২ এপ্রিল চীনে 'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস' পালিত হয় এবং সে বছরের অবস্থা অনুযায়ী শ্লোগান নির্ধারিত হয়। এ বছর চীনের 'বিশ্ব ধরিত্রী দিবস'-এর শ্লোগান হচ্ছে 'পৃথিবীকে চিনুন, সম্প্রীতিময় উন্নয়ন করুন'। এর লক্ষ্য হচ্ছে জনসাধারণের ভূ-বিজ্ঞান সচেতনতা বাড়ানো এবং সমগ্র সমাজকে ভূ-বিজ্ঞান সচেতন করে এর ব্যবহারিক বিষয় জোরদার করা ও সম্পদের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে জনগণের চেতনা উন্নত এবং মানুষ ও প্রকৃতির সম্প্রীতিময় উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা।
(খোং)
|