শ্রোতা বন্ধুরা,এখন আমরা আপনাদের কিছু শ্রোতার প্রশ্নের উত্তর দেবো । পরিবেশন করছি আমি আপনাদের বন্ধু---- এবং আমি আপনাদের বন্ধু-----
যশোর জেলার শ্রোতা মামুন রহমান তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন , চীনের সবচেয়ে বড় পাহাড় কোনটি?
উত্তরে বলছি, চীনের স্থলভাগের দুই-তৃতীয়াংশের বেশী পাহাড়পবর্তে ঘেরা। চীনে বেশী কয়েকটি পবর্তশ্রেণী আছে । এর মধ্যে হিমালয় পবর্তমালা সবচেয়ে উঁচু । এই পবর্তমালা ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির দক্ষিণ প্রান্ত থেকে আকাশের দিকে উঠে গেছে । চীন-ভারত আর চীন-নেপাল সীমান্ত-বরাবর হিমালয় পর্বতমালার প্রধান অংশের বিস্তার। আড়াই হাজার কিলোটার দীর্ঘ এই পবর্তমালা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ৬০০০ মিটার উঁচু । এই পবর্তমালার প্রধান শৃঙ্গ ছোমোলাংমা । এটি পৃথিবীর সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গ । সুতরাং চীনের বড় পাহাড়ের কথা বলতে গেলে নিঃসন্দেহে হিমালয় পবর্তমালার নামই বলতে হবে।
বগুড়া জেলার শ্রোতা পলাশ মাহবুব তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনাদের বিয়ের অনুষ্ঠানের রীতিনীতি কি ?
উত্তরে বলছি ,চীন একটি জাতিবহুল দেশ । চীনে মোট ৫৬টি জাতি আছে । বিভিন্ন জাতির বিয়ের রীতিনীতি ভিন্ন । চীন একটি বিশাল দেশ । বিভিন্ন জায়গায় একই জাতির বিয়ের রীতিনীতিও আলাদা । কিন্তু বতর্মানে চীনের বিভিন্ন জাতির বিশেষ করে শহরাঞ্চলের তরুণ-তরুনীরা তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সহজ করে ফেলেছেন । সাধারণত বিয়ের দিনে বধূ ও বরের পরিবার ও আতীয়স্বজন , বন্ধু-বান্ধবরা এক সঙ্গে মিলে একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সাধারণত বধূ ও বর সবাইয়ের সামনে তাদের মধ্যকার প্রেম সম্পর্কে বণর্না করেন । দু'পক্ষের বাবা-মা বধূ ও বরের সুখ কামনা করেন। অবশ্যই এই বিশেষ উপলক্ষ্যে, অনুষ্ঠানে কেউ কেউ বধু ও বর নিয়ে নানা ধরনের হাস্য রসামক করেন । যেমন, বধূ ও বরকে চুমু খেতে অনুরোধ করা হয়। নিঃসন্দেহে বিয়ের অনুষ্ঠানে ভাল ভাল খাবার পরিবেশিত হয়। তবে, চীনের কোনো কোনো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নিজস্ব জাতির ঐতিহ্যবাহী বিয়ের রীতিনীতি প্রচলিত আছে।
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার শ্রোতা ইসলাম মোহাম্মেদ হিমু তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে কি বেকার আছে? থাকলে তাদের সংখ্যা কত?
উত্তরে বলছি, চীনে বেকার আছে । কিন্তু বেকারের সংখ্যা কত সঠিকভাবে বলা কঠিন । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সরকার বেকারত্ব দূর করার জন্য অনেক কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে । বেকারদের জন্য অনেক কমর্সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে । অবশ্যই এ ক্ষেত্রে চীন সরকার চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়েছে । চীনে জনসংখ্যা বেশী বলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর চাপ রয়েছে । চীন সরকার আরো বেশী কমর্সংস্থান সৃষ্টির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
পাবনা জেলার শ্রোতা অপূর্ব কুমার তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের সবচেয়ে নামকরা ছায়াছবির পরিচালক কে ? চীনে প্রতি বছর কতগুলো চলচ্চিত্র তৈরি হয় ?
উত্তরে বলছি , চীনে বেশ কয়েক জন নামকরা ছায়াছবির পরিচালক আছেন । কিন্তু যদি তাদের মধ্যে কে সবচেয়ে বিখ্যাত বলতে হয় তাহলে পরিচালক জেন ই মুর কথা বলতে হবে। তাকে চীনের সবচেয়ে নামকরা ছায়াছবির পরিচালক বলে বিবেচনা করা হয়। তার তৈরি কয়েকটি ছায়াছবি দেশ-বিদেশে পুরস্কার পেয়েছে । তিনি আসন্ন পেইচিং অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিচালনা করবেন । আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটু কঠিন । কারন এ সম্পর্কে আপাতত আমাদের হাতে সঠিক তথ্য নেই । পরে আমাদের হাতে তথ্য এলে দেবো বলে আশা রাখি। ।
শ্রোতা বন্ধুরা, এখন আপনাদের জন্য একজন গান শোনাবো ।
দিনাজপুর জেলার শ্রোতা মুজাহিদুর ইসলাম সেলিম তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের কোন কোন জায়গায় কয়লার মজুদ সবচেয়ে বেশী?
উত্তরে বলছি, চীনের কয়লা সম্পদের সিংহভাগই মজুদ রয়েছে উত্তর চীনের ভূগর্ভে। কয়লা সমৃদ্ধ শানসি প্রদেশের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চলে কয়লার অত্যন্ত পুরু স্তর রয়েছে। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় যে, চীনেই প্রথম কয়লা আবিস্কার হয়েছিল এবং ব্যবহার শুরু হয়েছিল। খৃষ্ট-পূর্ব দুশো সালে এখনকার চিয়াংসি প্রদেশের নানছাং শহরের আশেপাশে কয়লা পাওয়া গিয়েছিল বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায় । খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে চীনে ধাতু আকরিক ঢালাই কাজে কয়লার ব্যবহার চালু হয়েছিল। চীনে কয়েকটি কয়লা ঘাঁটি আছে । যেমন,হোপেই প্রদেশের থাংশান খাইলুয়ান , শানসি প্রদেশের ডাথোং , আনহুই প্রদেশের হুয়াইবেই। এ তিনটি জায়গা চীনের গুরুত্বপূর্ণ কয়লা উত্পাদন ঘাঁটি ।
ভারতের পশ্চিম বাংলার উত্তরপাড়ার শ্রোতা মলয় বসু এবং বাংলাদেশের রাজশাহীর জেলার শ্রোতা আতাউস সামাদ দু'জনই তাদের চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কি?
উত্তরে বলছি, চীনে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তবে এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয় ও ছিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় বলে আখ্যায়িত করা হয় । এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানী পেইচিংএ অবস্থিত । ১৮৯৮ সালে পেইচিং বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯১১ সালে ছিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এক শতাব্দীরও বেশী সময়ের উন্নয়নে এখন এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় চীনের দুটি বিখ্যাত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে । বিশ্ব শিক্ষাঙ্নে তাদের স্থান রয়েছে । চীনের অনেক বিজ্ঞানী ও নেতৃবৃন্দ এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক । তা ছাড়া , বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনিময় আছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশি বেশি বিদেশী শিক্ষার্থী এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসছেন। বতর্মানে এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের মতো ।
বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার শ্রোতা সেলিমা রহমান তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনে নারীদের সামাজিক অবস্থান কেমন?
উত্তরে বলছি, চীনে নারীরা পুরুষদের মতো সমান সামাজিক অবস্থান উপভোগ করতে পারেন । চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদান উল্লেখযোগ্য। চীনে নারীদেরকে " অর্ধের আকাশ" বলে মনে করা হয়। তারা চীনের সব ধরনের কাজে আত্মনিয়োজিত রয়েছেন । চীনের সংবিধানে নারী অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষিত । অবশ্য মাঝে মাঝে নারীদের ওপর পারিবারিক নিযার্তনের খবরও পাওয়া যায় । কিন্তু এখন এ ধরনের ঘটনা অনেক কমে গেছে ।
কুমিল্লা জেলার শ্রোতা পলাশ মাহবুব তার চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, চীনের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াবিদদের নাম কি ?
শ্রোতা বন্ধু, আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া একটু কঠিন । কেননা, চীনের অনেক ক্রীড়াবিদ অলিম্পিক গেমস বা বিশ্ব পযার্য়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চমত্কার কৃতি অজর্ন করেছেন । সাস্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকজন বিশ্ববিখ্যাত ক্রীড়াবিদ উঠে এসেছেন । যেমন, অলিম্পিক গেমসের চ্যাম্পিয়ন ও বিশ্ব প্রতিযোগিতার রেকর্ডধারী পুরুষদের ১১০ মিটার হাডর্লস দৌড়বিদ লিও শায়াং, যুক্তরাষ্ট্রের এন বি এর চীনা খেলোয়াড় ইয়াও মিংকে বতর্মানে চীনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়াবিদ বলে মনে করা হয়।
শ্রোতা বন্ধুরা, এতক্ষণ কয়েকজন শ্রোতার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি । এখন একটি গান শুনবেন ।
|