চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের আমন্ত্রণে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশাররফ ১০ এপ্রিল থেকে তাঁর ছ'দিনব্যাপী চীন সফর শুরু করবেন । এর আগে মুশাররফ ৮ এপ্রিল রাজধানী ইসলামাবাদে চীনা সাংবাদিকদের যৌথ সাক্ষাত্কার দিয়েছেন ।
১০ এপ্রিল মুশাররফ চীনের হাই নান প্রদেশের সান ইয়া শহর পৌঁছবেন । এর পর তিনি পো ও'র এশিয় ফোরামের ২০০৮ সালের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট হু চিন থাওয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন । চীন সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন :
এবারের সফরের উদ্দেশ্য হল পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ককে আরো দৃঢ় এবং দু'দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে যোগাযোগ জোরদার করা । এ ছাড়াও , আমরা প্রতিরক্ষা , সমাজ ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা নিয়ে সংলাপ করবো । আমি আশা করি , নির্মাণাধীন ও নির্মিত হবে এমন কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক প্রকল্প নিয়ে চীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপ করবো ।
সাক্ষাত্কালে মুশাররফ পাকিস্তান ও চীনের ঐতিহ্যিক মৈত্রীর প্রশংসা করেছেন এবং দু'দেশের মৈত্রী ও সহযোগিতামূলক সম্পর্কের আরো উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন । তিনি বলেন :
পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ক ইতিহাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে । সব সম্পর্কেরই ব্যাপক ভিত্তি রয়েছে । রাজনীতি ও কূটনীতি ক্ষেত্রে দু'দেশের সুষ্ঠু সম্পর্ক বিদ্যমান এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সমস্যায় দু'পক্ষের অবস্থানও প্রায় অভিন্ন । দু'দেশের ঘনিষ্ঠ আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব গুরত্বপূর্ণ ।
দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হচ্ছে বলে পাকিস্তানে পুঁজি বিনিয়োগকারী চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও আরো বেড়েছে । এ সম্পর্কে মুশাররফ বলেন , পাকিস্তান বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানায় এবং বৈদেশিক পুঁজির জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । তিনি বলেন , পাকিস্তান চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং চীনের পুঁজি বিনিয়োগকারীদের সুবিধা প্রদান অব্যাহত রেখেছে । তিনি বলেন :
পাকিস্তান বিশেষ করে চীনের পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । গুয়াদার ও লাহোরে আমরা বিশেষ করে শিল্প এলাকা নির্মাণ করেছি । চীনের পুঁজি বিনিয়োগকারীরা পাকিস্তানের স্বাগত পেয়েছে । তাদের জন্য অনেক সুবিধাজনক নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে ।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছাড়াও মুশাররফ মনে করেন সন্ত্রাস দমনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সহযোগিতা ভবিষ্যত্-এ আরো জোরদার করা হবে । তিনি বলেন :
সন্ত্রাস দমন ও উগ্রবাদ দূর করার কার্যকর পদ্ধতি হল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক সংকট সমাধান করা । চীন এ ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকা পালনে সক্ষম । তা ছাড়া দারিদ্র্যতা , অজ্ঞতাও সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের কারণ । তাই শিক্ষার উন্নয়ন , দারিদ্র্য বিমোচন এবং সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের চীনের সমর্থন ও সহায়তা প্রয়োজন । তিনি বলেন , সন্ত্রাস দমন ক্ষেত্রে দু'পক্ষের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে । পাকিস্তান চীনের পূর্বাঞ্চলীয় তুর্কীস্তানপন্থীদের দমনকেও সমর্থন করে ।
দু'দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্পর্কে মুশাররফ বলেন , পাকিস্তান ও চীনের মৈত্রীর সুগভীর ভিত্তি রয়েছে । তিনি মনে করেন , তা শুধু দু'দেশের সরকারের ঘনিষ্ঠ বিনিময়ের কারণে নয় , তার আরেকটি কারণ হল দু'দেশের জনগণের আন্তরিক মৈত্রী । তিনি বলেন :
সরকার ছাড়াও পাকিস্তানী জনগণ চীনকে অনেক বেশি ভালোবাসেন । পাকিস্তানের জনগণ চীনাদের ভালো বন্ধু হিসেবে মনে করে । পাকিস্তান সবসময় চীনের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক বজায় রাখবে ।
|