দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার স্বরযন্ত্রঃ পবিত্র বৌদ্ধ এসব দেখলে অবশ্যই তাকে নরকে রাখবেন ।
আজেনটিনার শ্রোতা রিকারডো হুয়েরটা দু'বার চীনে এসছিলেন । গত ২২ মার্চ তিনি সি আর আইয়ের আর্জেনটিনা ওয়েইবসাইটে এই মন্তব্য করেছেন যে , আপনারা সত্যি এবং সময় অনুযায়ী লাসার সহিংস ঘটনা সম্পর্কিত রিপোর্ট করেছেন । স্বাধীন তিব্বতীদের বিচ্ছিন্ন আচরণ আমার কাছে বিষ্ময়কর মনে হয় এবং তা অন্যায্য । বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া থেকে বুঝা যায় , আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকারী সহিংস ঘটনার উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই ব্যর্থ হবে ।
রিকারডো বলেন , দু'বার চীন সফরে যে বাস্তব অবস্থা দেখেছি , তা থেকে বোঝা যায় , তিব্বত সমস্যা সম্পর্কে দেয়া চীনের বর্তমান পরিস্থিতির বিবরণ বিকৃত এবং একদম ভুল ।
ব্রাজিলের শ্রোতা রুবেনস পেড্রোসো তাঁর চিঠিতে বলেছেন , আমি সবসময় সি আর আইয়ের পর্তুগীজ ওয়েইবসাইটের মাধ্যমে তিব্বতের সহিংস ঘটনার ওপর দৃষ্টি রাখছি । এ সম্পর্কিত ভিডিও দেখার পর আমি বিশ্বাস করতে পারি নি যে , দালাই সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট এবং নিরিহ মানুষকে হত্যার এমন সহিংস তত্পরতা চালিয়েছ । এর আগে আমি ভাবতাম যে তারা খুব পুণ্যবান এবং ন্যায়বাদী। এ সহিংস ঘটনার কারণে আমার আগের মনেবৃত্তির পরিবর্তন হয়েছে। আমার মনে হয় , এ ঘটনা মোকাবেলায় চীন সরকারের নেয়া ব্যবস্থা সঠিক এবং কার্যকর । আমি আশা করি এবারের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের অবস্থা তাড়াতাড়ি ভালো হবে। আমি আরো আশা করি দালাই নিজের ভুল এবং এ ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে ।
কলম্বিয়ার শ্রোতা জন ফ্রেডী ক্যাস্টিরলোন গত ২৩ মার্চ তাঁর চিঠিতে বলেছেন , আমি লাসায় ঘটনার সহিংস ঘটনা এবং এ ঘটনায় চীনের ব্যাপক ক্ষতির জন্য দুঃখ পেয়েছি। আমি আশা করি চীন কখনোই বিচ্ছিন্ন হবে না ।
উরুগুয়ের শ্রোতা আলবার্তো মাছাদো ১৮ মার্চ চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধি সম্মেলনের সমাপনী উপলক্ষ্যে একটি ইমেইল পাঠিয়েছেন। ইমেইলে কতিপয় বিচ্ছিন্নতাবাদীর তিব্বতে সংঘটিত ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চীনের ওপর গুরুত্ব দেয়া "সি.আর.আই"-এর একজন নিয়মিত শ্রোতা হিসেবে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মিথ্যা কথা আমরা বিশ্বাস করি না। তিব্বত চীনের ভূ-ভাগের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তিব্বতের স্বাধীনতার আগে সেখানকার অধিবাসীদের জীবন কীভাবে কেটেছে সেই সব বিষয় আমাদের মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না। আমরা জানি যে, দাস ব্যবস্থার মাধ্যমে তত্কালীন প্রশাসকরা নিম্ন পর্যায়ের অধিবাসী হিসেবে তাদের মৌলিক অস্তিত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ছিল। তখন তিব্বতের অর্থনীতি এবং সংস্কৃতি অনেক পিছিয়ে ছিল । সাধারণ জনগণের জীবন যাত্রাও ছিল অনেক কষ্টকর। এখন জাতীয় আঞ্চলিক স্বশাসন ব্যবস্থা, চীন সরকারের যত্ন এবং সকল চীনা জনগণের সহায়তায় তিব্বতী অধিবাসীরা নিজেরাই নিজেদের প্রশাসন চালাতে সক্ষম। তারা পশুপালন, কৃষি এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন শিল্পের উন্নয়ন করছে। তাদের ধর্ম বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং রীতিনীতি সর্বাধিক মাত্রায় সম্মান পেয়েছে। তাদের ছেলেমেয়েরাও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে পারছে। আমরা দেখেছি যে, চীনের জাতীয় গণ কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের মধ্যে তিব্বতী প্রতিনিধি অন্যান্য সংখ্যালঘুজাতির প্রতিনিধিদের মতোই খোলাখুলি নিজেদের মতামত দাখিল করতে পারেন। অতীতের তুলনায় এটা নিশ্চয়ই শুভ পরিবর্তন । আমি তিব্বতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ শুভকামনা করি।
তিনি আরো বলেন, দালাই গোষ্ঠী তিব্বতে সহিংসতার মাধ্যমে স্থানীয় অধিবাসীদের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এতে বেশ কয়েক জন নিরিহ নাগরিক নিহত , দোকান পাট ধ্বংস এমন কি চিকিত্সকেরাও হামলার শিকার হয়েছে। এটি জঘন্য অপরাধ । তিব্বত চিরদিন চীনের ভূ-ভাগের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমি চীন সরকারকে এবারের সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ এবং তিব্বতকে রক্ষার চেষ্টা চালানোর জন্য শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত অধিবাসীদের প্রতি সমবেদনা জানাছি।
নিকারাগুয়ার শ্রোতা গেরার্দো ২৭ মার্চ তার ইমেইলে দালাইলামার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। ইমেইলে তিনি বলেন, বুদ্ধ এ সব দেখলে নিঃসন্দেহ তাকে নরকে ছিড়ে খাবে। এ নিষ্ঠুর আচরণ গুরুতরভাবে ' ভালবাসা ও শান্তি' নীতির পরিপন্থী। লাসায় ১৪ মার্চের ঘটনার অপচেষ্টা হলো তিব্বতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি করদ রাজ্যে পরিণত করা। আমার দেশ নিকারাসুয়ায় এ ঘটনার রিপোর্টকে বিকৃতি করা হয়েছে , যা সত্যের অপলাপ মাত্র। বিশ্বে এমন ধরণের মানুষও আছে ,যারা দেশের সমৃদ্ধির জন্য চেষ্টা করবে না, বরং এর স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে। তারা এ ঘটনার মাধ্যমে পেইচিং অলিম্পিক গেমসকে প্রতিরোধের অপচেষ্টা করছে।
ব্রাজিলের শ্রোতা রিকার্ডো সান্টোস বলেন, ১৪ মার্চ তিব্বতের ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ ঘটনায় আমি অনেক দুঃখ পেয়েছি এবং নিজের ভেতর এক ধরণের ক্ষুদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। আমি মনে করি, দালাইলামা ঠিক সন্ত্রাসীর মতো। তারা উগ্র পহ্নার মাধ্যমে তাদের তথাকথিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এবারের সহিংসতায় অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। সমাজকে বিশৃঙ্খল অবস্থায় ফেলতে চেয়েছে। এ থেকে বুঝা যায়ে যে, দালাইলামার লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা চাওয়া। তবে আমি বিশ্বাস করি, এসব দুর্ঘটনার অবসান অবিলম্বেই হবে। চীন সরকার নিশ্চিতভাবে এ সমস্যার সমাধান করবে। আগষ্ট মাসের পেইচিং অলিম্পিক গেমস সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রাজিলের আরেকজন শ্রোতা এদোয়ার্দো কায়তানো বলেন, লাসায় ১৪ মার্চের ঘটনা হচ্ছে দালাইলামার চীনকে বিছিন্নকরণ অপচেষ্টার রূপায়ন । এ সমস্যার সমাধানে আমি চীন সরকারের অবস্থানকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। প্রাচীনকাল থেকে তিব্বত হচ্ছে চীনের ভূ-ভাগের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ সত্য কোনদিই পরিবর্তন হবে না।
1 2 3 4 5
|