v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-08 15:10:18    
ভারত-আফ্রিকা সহযোগিতার নতুন যাত্রা শুরু

cri

    ভারত-আফ্রিকা ফোরামের প্রথম শীর্ষ সম্মেলন ৮ এপ্রিল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে শুরু হয়েছে। জনমত মনে করে, পরস্পরকে অবহেলার ২০ বছর পর আয়োজিত এবারের সম্মেলনে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভারত ও আফ্রিকার সহযোগিতার নতুন যাত্রা শুরু হলো। এবারের সম্মেলন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সুদূরপ্রসারী উন্নয়নে সহায়ক হবে।

    ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দশ জন রাষ্ট্র প্রধান বা সরকার প্রধানসহ আফ্রিকার ১৪টি দেশের নেতারা এবারের দু'দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। ভারত ও আফ্রিকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা, বিশেষ করে আফ্রিকার তেল ও হীরাসহ নানা খনিজ সম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সহযোগিতা জোরদার করা হচ্ছে এবারের সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়। এ ছাড়াও রয়েছে কৃষি ও বুনিয়াদী ব্যবস্থা ক্ষেত্রের সহযোগিতার বিষয়।

    ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ভারত-আফ্রিকা ফোরামের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রণব মুখার্জি জানান, শীর্ষ সম্মেলনে দু'পক্ষের নেতারা 'দিল্লী ঘোষণা' ও 'ভারত-আফ্রিকা সহযোগিতার কাঠামো চুক্তি' অনুমোদন করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, 'দিল্লী ঘোষণা' হচ্ছে ভারত ও আফ্রিকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে ভারত ও আফ্রিকার সহযোগিতা সংক্রান্ত নীতিমূলক দলিল। এর বিষয়বস্তুর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জাতিসংঘের সংস্কার, জলবায়ুর পরিবর্তন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা আলোচনা এবং যৌথভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়। 'ভারত-আফ্রিকা সহযোগিতার কাঠামো চুক্তি'তে ভারত ও আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতার ক্ষেত্র নির্ধারিত হয়েছে। এই ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জনশক্তি সম্পদ, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি গবেষণা, খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্প ও বাণিজ্যের বিকাশ, চিকিত্সা ও স্বাস্থ্য এবং বুনিয়াদী ব্যবস্থার নির্মাণ সহ আইন ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়।

    সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত ও আফ্রিকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের মূল্য দ্রুত বেড়েছে। ২০০১ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ভারত ও আফ্রিকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মূল্য কেবল ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০০৬ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক মুল্য ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য ফেডারেশন ৭ এপ্রিল প্রকাশিত এক জরীপ রিপোর্টে জানিয়েছে, বর্তমান উন্নয়নের প্রবণতায় ২০১০ সালের আগেই ভারত ও আফ্রিকার বাণিজ্যিক মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দু'পক্ষের উচিত দু'দেশের বাণিজ্যের সহজিকরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করেছেন, ভারত সরকার এবারের শীর্ষ সম্মেলনে কর কমানোর নীতি ও আফ্রিকার উন্নয়নে সাহায্যদানের পরিকল্পনার কথা ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। যাতে ভারত ও আফ্রিকার 'বৈশিষ্ট্য' ও 'সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ' অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বাস্তবতার আলোকে সামনে এগিয়ে নেয়া যায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারত আফ্রিকার ৫৪টি দেশের মধ্যে ২৯টি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভারত দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার অভিন্ন বাজারের সঙ্গে যৌথ কর্ম গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সার্বিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছে। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার উন্নয়নের অভিন্ন কমিউনিটির মধ্যকার বিশেষ সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনাও চলছে।

    বিশ্লেষকরা মনে করেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলন ভারত ও আফ্রিকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক পক্ষে, আফ্রিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নে জরুরীভাবে প্রযুক্তিগত সাহায্য দরকার। তারা ভারত সরকার ও ব্যক্তিগত শিল্প প্রতিষ্ঠানের পুঁজি বিনিয়োগের প্রত্যাশা করে, যাতে আফ্রিকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বুনিয়াদী ব্যবস্থার নির্মাণ কাজে সহায়ক ভূমিকা রাখা যায়। অন্য দিকে, ভারত আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হতে চায়। ভারত আশা করে, আফ্রিকার সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ ভবিষ্যতে ভারতের সম্পদ ও জ্বালানি নিরাপত্তার প্রয়োজন মেটাতে পারবে। (ইয়ু কুয়াং ইউয়ে)