v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-03 16:58:33    
পাকিস্তানের গালিচা নির্মাণকারী --আবদুল লতিফ খান

cri

    আবদুল লতিফ খান ২০০৫ সালে চীনের ছিংহাই প্রদেশের তিব্বতী ছাগল গালিচা গোষ্ঠী লিমিটেড কোম্পানির আমন্ত্রণে চীনে কাজ করতে এসেছেন । ২০০৭ সালে চীনের গালিচা নির্মাণ শিল্পের প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য তিনি চমত্কার অবদান রেখেছেন বলে চীনের জাতীয় মৈত্রী এ পুরস্কার লাভ করেছেন । এ পুরস্কার হলোচীনে কাজ করা বিদেশী বিশেষজ্ঞদের দেয়া চীন সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার । প্রতি বছর ১ অক্টোবর চীনের জাতীয় দিবসে পুরস্কার বিজয়ীরা পেইচিংয়ে এসে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং চীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন । পুরস্কার লাভ করা সম্পর্কে আবদুল লতিফ খান আনন্দের সঙ্গে বলেন,

    আমার পরিবার ও জন্মস্থানের আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুরা আমার এ পুরস্কার লাভের আনন্দ প্রকাশ করেছে। পাকিস্তান এবং চীন হল ঘনিষ্ট বন্ধু এবং দু'দেশের মধ্যে গভীর মৈত্রী রয়েছে । আমি মনে করি, এ পুরস্কার আমার নিজের গর্ব নয় , তা আমাদের সবার । বিশেষ করে আমার সহকর্মীরা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে । আমার পুরস্কার হল সবার পুরস্কার ।

    লতিফের চীনা সহকর্মীরা তার পরিশ্রমের প্রশংসা করেন । তাঁর সহকর্মী ও বন্ধু সিং খেরোং বলেন, কোম্পানি নতুন পন্য নিয়ে গবেষণা করার সময় আবদুল লতিফ খান প্রতিটি প্রযুক্তির ওপর নিজে গবেষণা করেন এবং তাঁর প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা অন্য সহকর্মীদের শেখান ।সিং খে রোং বলেন, তিনি খুবই পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল । নির্মাণের প্রতিটি প্রযুক্তি আমাদেরকে শেখান । তাঁর সকল প্রযুক্তি আমাদের জানাতে তিনি আগ্রহী । আমাদের যে কোন সমস্যার মোকাবিলায় তিনি অনেক অবদান রেখেছেন ।

     লতিফের পরিচালনায় এ পর্যন্ত ছিংহাই তিব্বত ছাগল গালিচা গোষ্ঠী লিমিটেড কোম্পানি গালিচা নির্মাণের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পরপর ৬টি চীনের জাতীয় পেটেন্ট লাভ করেছে । এর মধ্যে একটি চীনের জাতীয় পেটেন্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন পুরস্কারের প্রথম শ্রেণীর পুরস্কার এবং চীনের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাফল্য পুরস্কারের দ্বিতীয় শ্রেণীর পুরস্কার ।

     চীনের জীবনযাপন সম্পর্কে লতিফ খান বলেন, ছিংহাই প্রদেশ একটি মালভূমিসমৃদ্ধ প্রদেশ । তিনি প্রথম আসার সময় একটু অসুস্থ্য হয়ে যান । তবে কম সময়ের মধ্যে তিনি এখানকার জীবনযাপনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন এবং ছিংহাইকে ভালবাসতে শুরু করেছেন । তিনি বলেন,আমি কম সময়ের মধ্যে এখানকার জীবনযাপনের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়েছি । বলতে গেলে এসময় মাত্র ২ সপ্তাহ। প্রথম আসার পর আমার মাথা ব্যথা হতো। কারণ ছিংহাই মালভূমিতে অবস্থিত এবং আমার জন্মস্থান সমুদ্র সমতলের প্রায় সমান । দুই সপ্তাহ পর আমি সুস্থ হয়ে যাই । এ পর্যন্ত আমি ছিংহাইয়ে ৩ বছর ধরে জীবনযাপন করছি । এখানকার আবহাওয়া আমি পছন্দ করি ।

    লতিফ খান আরও বলেন, ছিংহাইয়ে তিনি ছিংহাই হ্রদসহ বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর স্থানে গিয়েছেন ।তিনি এসব পর্যটন স্থান পছন্দ করেন । তবে সুন্দর দৃশ্যের চেয়ে তিনি চীনা বন্ধুদের আরও বেশি পছন্দ করেন । তিনি বলেন, চীনে এসে কাজ করা হলো তাঁর জীবনের সবচেয়ে বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত ।

    আমি ৭টি দেশে গিয়েছিলাম । সবশেষে আমি চীনে এসেছি । কারণ চীনা জনগণ খুব আন্তরিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং তারা অন্যকে সাহায্য করতে পছন্দ করেন । চীনে জীবনযাপন করা আমার জন্মস্থানের মতো । বিশেষ করে আমি যখন শপিং করি এবং রেস্টুরেন্টে খাবার খাই, তখন তারা বন্ধুত্বপূর্ণভাবে আমার সঙ্গে কথা বলে ।

    চীনে আসা ৩ বছরের মধ্যে তিনি নিজেই চীনের দ্রুত উন্নয়ন দেখেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০০৫ সালে আমার আসার সময় সিনিং বিমান বন্দর খুবই ছোট ছিল । লিফ্টও ছিল না । বিমান বন্দরের রাস্তা থেকে বান ওয়ে পর্যন্ত আমাকে হাঁটতে হতো । এখন সিনিং বিমান বন্দরের অনেক পরিবর্তন হয়েছে । খুবই সুন্দর হয়েছে । ৩ বছর আগের চেয়ে ছিংহাই প্রদেশেরও অনেক পরিবর্তন ঘটেছে । এর পাশাপাশি ছিংহাই প্রদেশের লোকজনের চিন্তাভাবনারও অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং তারা আরও উন্মুক্ত হয়েছে ।

    তবে চীনে কাজ করা অধিকাংশ বিদেশীদের মতো আবদুল লতিফ খানও একাকীত্বের সম্মুখীন হন । যদিও চীনের জীবনযাপন অনেক আরামদায়ক এবং চীনা বন্ধুও আন্তরিক,তবুও তাঁর মনে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের কথা মনে পড়ে । খান বলেন, তাঁর স্ত্রী খুবই সুন্দর এবং তাঁর চার সন্তানও দারুণ মার্ট । ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে তিনি মৈত্রী পুরস্কার লাভের সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা চীনে এসে তাঁর সঙ্গে কিছু দিন ছিলেন।

    আমার বাবার বয়স এখন ১০২ বছর । তিনি পাকিস্তানে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে জীবনযাপন করেন । আমি আমার বাবাকে মিস করি এবং আমার স্ত্রী ও সন্তানদেরও মিস করি । তবে চীনে আমার কাজকেও আমি অনেক পছন্দ করি । ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের চীনে নিয়ে আসবো এবং একসাথে জীবনযাপন করবো ।