v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-04-02 16:38:34    
লন্ডনের হিথরো বিমান বন্দরের বিশৃঙ্খল অব্যাহতভাবে চলছে

cri
সম্প্রতি ব্রিটেনের লন্ডনের হিথরো বিমান বন্দরের নতুন অর্থাত্ ৫ নম্বর টার্মিনালের স্যুটকেস ডেলিভারি ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। টানা এক সপ্তাহ ধরে এই সমস্যা চলতে থাকে। এ জন্য বাধ্য হয়ে ২শ'রও বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। ধারণা করা হচ্ছে চলতি পুরো সপ্তাহে জুড়ে পর্যটকদেরকে বাতিল কিংবা স্থগিত ফ্লাইট সমস্যায় ভূগতে হবে। নতুন টার্মিনালে স্তূপীকৃত ২০ হাজারেরও বেশি স্যুটকেস ছাড় করতে আরো কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে।

লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি। এখানে গড়ে প্রতি ৩ মিনিটে একটি বিমান ওঠে কিংবা নামে। ৫ নম্বর টার্মিনালের নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ৮শ' ৬০ কোটি মার্কিন ডলার। এই বিমান বন্দরে বছরে যাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি পার্সন টাইমস। নতুন টার্মিনালের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা খুব জাঁকজমকপূর্ণ এবং একে একবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেনের প্রবেশদ্বার' এবং 'হিথরো বিমানবন্দরকে নতুন যুগে নিয়ে যাওয়ার স্থাপত্য' কর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। নতুন টার্মিনালের সবচেয়ে বড় অহংকার হচ্ছে এর স্যুটকেস ডেলিভারি ব্যবস্থা। নকশার দাবি অনুযায়ী, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এই টার্মিনাল প্রতি ঘন্টায় ১২ হাজার স্যুটকেস ডেলিভারি দিতে পারে। বিমান বন্দর আশা করেছিল, এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে স্যুটকেস ছাড়করণে হিথ্রোর বহুদিনের দুর্নাম ঘুচে যাবে। কিন্তু ২৭ মার্চ নতুন টার্মিনাল আনুষ্ঠানিভাবে চালু হওয়ার দিনেই এই ব্যবস্থায় গোলমাল দেখা দেয়। ফলে সারা হিথরো বিমানবন্দরে অরাজকতার সৃষ্টি হয়। তাত্ক্ষনিকভাবে কমপক্ষে ৩৪টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয় এবং কয়েকশ' যাত্রী শুধু তাদের স্যুটকেসের জন্য দীর্ঘ ২ ঘন্টা অপেক্ষা করেন। কিছু যাত্রী বাধ্য হয়ে তাদের স্যুটকেস ফেলে রেখেই বিমান বন্দর ত্যাগ করেন। কিছু যাত্রী বিমান বন্দরেই রাত কাটান এবং ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। নতুন টার্মিনাল ভবনটি চালু হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে এখনও সব ব্যবস্থা এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় নি। বিমানবন্দরে এখনও হাজার হাজার স্যুটকেস স্তূপ হয়ে আছে। এ পর্যন্ত কমপক্ষে আড়াইশ'রও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং যাত্রীরা তাদের অভিযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

হিথরো বিমান বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫ নম্বর টার্মিনালের যাত্রা শুরু হয়েছে বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে। সকালেই তারা আবিষ্কার করেন যে, বিমান বন্দরে গাড়ী পার্কিংয়ের জন্য যথেষ্ট জায়গা নেই। পাশাপাশি কর্মকর্তারা নতুন জায়গা ঠিক মতো না চেনে থাকায় নিজেদের অফিস খুঁজে বের করতে পারেন নি। এ ছাড়া বিমান বন্দরের কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে অনেক কর্মকর্তা সময়মতো নিজ নিজ অফিসে পৌঁছতে পারেন নি। অনেক কর্মকর্তার কর্মস্থলে পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যায়। এ ছাড়া কর্মকর্তারা যথেষ্ট প্রশিক্ষণ পান নি। কিছু কিছু কর্মকর্তা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে পরিষ্কার ছিলেন না, এমনকি নতুন পরিচালনা ব্যবস্থার সঙ্গেও তারা পরিচিত ছিলেন না। ব্রিটিশ তথ্য মাধ্যম জানিয়েছে, নতুন টার্মিনাল শুরু হওয়ার প্রথম দিনে মাত্র কয়েক শ' কর্মচারী সুটকেস ডেলিভারির কাজ করেন। যেখানে পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ডেলিভারি দিতে কয়েক হাজার কর্মচারীর দরকার পড়তো।

নতুন টার্মিনাল ব্যবহারের একমাত্র অধিকারভোগী ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সিইও উয়িলি ওয়ালশ তথ্য মাধ্যমকে জানিয়েছেন, নতুন টার্মিনালের স্যুটকেস ডেলিভারি ব্যবস্থা এখন সুষ্ঠুভাবে চলছে। তবে এ সপ্তাহেও অনেক ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হবে। যদিও ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের ৪শ' কর্মকর্তা যাত্রীদের স্যুটকেস ছাড় করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তবুও ২০ হাজারেরও বেশি স্যুটকেস ছাড় করা সহজ ব্যাপার নয়। ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজ বলেছে, তারা এক্সপ্রেস কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দিয়ে ব্রিটিশ যাত্রীদের স্যুটকেস পাঠিয়ে দেবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য তারা আগামী ফ্লাইটেই বা নৌ-পরিবহণের মাধ্যমে স্যুটকেস পাঠানোর জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা চালাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে কোনো কোনো যাত্রী এক সপ্তাহের আগে তাদের স্যুটকেস পাবেন না।

নতুন টার্মিনালের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে যাত্রীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তেমনি ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের সুনামও নষ্ট হয়েছে। সোমবার ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের শেয়ারের দাম পড়ে গেছে। তাছাড়া ব্রিটেনের টাইমস পত্রিকার খবরে জানা গেছে, ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজ ইইউ'র সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী কয়েকশ' যাত্রীকে ঠিকমতো ক্ষতিপূরণের তথ্য সরবরাহ করে নি বলে তাদেরকে বড় অংকের জরিমানা গুণতে হবে।

(খোং চিয়া চিয়া)