![]( /mmsource/images/2005/10/12/laba.gif) চার দিনব্যাপী ২৬তম প্যারিস ভাষা মেলা সম্প্রতি প্যারিসের ভারসাইলিসে শুরু হয়েছে। ফ্রান্স ও ইউরোপের চীনা ভাষা শিক্ষা কর্মসূচীর দ্রুত উন্নয়নের চাহিদা মেটানোর জন্য ফ্রান্সের ভাষা মেলার আমন্ত্রণে চীন প্রধান অতিথিদেশ হিসেবে মেলায় যোগ দিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে চীনের রাষ্ট্র দূত চাও জিন জুন তার ভাষণে বলেছেন,
ভাষা মেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। চীন অলিম্পিক গেমস স্বাগত জানায়। চলতি বছর হলো চীনের সুযোগের বছর এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া উত্সব। বিভিন্ন দেশ পেইচিং অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে চীন সম্পর্কে জানার ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। এবার হলো চীনা ভাষা প্রদর্শনের একটি ভালো সুযোগ। এর আগে ফরাসী ভাষাভাষী দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সংস্থার মহাসচিব ,সেনেগালের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদু ডিউফ পেইচিং অলিম্পিক গেমস সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আমি মনে করি, তিনি বিশ্ব জনগণের মনের কথা ব্যক্ত করেছেন। এর মূল কথা হচ্ছে চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো অলিম্পিক গেমস আয়োজন করতে পারা। চীনা ভাষা, চীন এবং চীনের সংস্কৃতি এবার অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এবারের মেলায় চীনা ভাষা অর্থাত্ হান ভাষা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনপ্রিয় করা সংক্রান্ত চীনের জাতীয় নেতৃস্থানীয় কার্যালয় "অলিম্পিক গেমসকে স্বাগতম,চীনা ভাষা শিখুন" নামক প্রসঙ্গ অনুযায়ী, হান ভাষা ও চীনের সংস্কৃতি সংক্রান্ত দশটিরও বেশি চমত্কার বিনিময় কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। ২৩০ বর্গমিটারের চীনা প্রদর্শনী এলাকায় শিক্ষাদান সম্পর্কিত সম্পদ প্রদর্শন অঞ্চল, ফ্রান্সের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রদর্শন অঞ্চল, মাল্টিমিডিয়া পরীক্ষামূলক প্রদর্শন অঞ্চল এবং আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নেয়ার অঞ্চলসহ চারটি অংশ রয়েছে। তাছাড়া চীনের প্রদর্শনী এলাকায় বক্তৃতা দেয়ার পাঁচটি হল বিশেষভাবে খোলা হয়েছে। এ পাঁচটি হলগুলোর নাম পেইচিং অলিম্পিক গেমসের পাঁচটি কল্যাণমূলক বস্তুর নামে নামকরণ করা হয়েছে।
চীনা ভাষা শেখা এবং অলিম্পিক গেমসকে স্বাগত জানানোর বিষয়টি কেন সমন্বিত করা হয়েছে? চীনা ভাষাকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনপ্রিয় করা সংক্রান্ত চীনের রাষ্ট্রীয় নেতৃস্থানীয় কার্যালয়ের পরিচালক স্যু লিন বলেছেন,
বহু লোক চীনে আসেন নি। অলিম্পিক গেমস চীনে অনুষ্ঠিত হবে। বহু লোক চীনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। আমরা আশা করি, অলিম্পিক গেমসের মাধ্যমে বিশ্বে চীনা ভাষাকে জনপ্রিয় করা হবে। বিদেশী বন্ধুরা চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে চীনে আসবেন এবং আরো ভালোভাবে চীনকে জানতে ও বুঝতে পারবেন।
চীনের শিক্ষা সম্পদ প্রদর্শন অঞ্চলে চীনের বহু প্রকাশনালয় চীনের সর্বশেষ প্রকাশিত বই পুম্তক,সংস্কৃতি,অডিও ও ভিডিও দ্রব্য এবং মাল্টিমিডিয়াসহ বিভিন্ন চীনা ভাষা শিক্ষাদানকারী দ্রব্য প্রদর্শিত হয়। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট প্রদর্শন অঞ্চলে ফ্রান্সের সাতটি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের উন্নয়ন ও প্রকল্প পরিচালনার অবস্থা তুলে ধরা হয়। এর পাশাপাশি চীনা ভাষার হস্তলিপি, ছবি আকাঁ এবং চীনা ভাষা প্রদর্শনীতে শিক্ষাসহ বিভিন্ন মজার মজার তত্পরতার মাধ্যমে আগ্রহীদের কাছে চীনা ভাষা এবং কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের অবস্থানও তুলে ধরা হয়।
বক্তৃতা দেয়ার হলে চীনা ভাষা শিক্ষা সংক্রান্ত সাতটি বিশেষ কোর্স চালু হয়েছে। বক্তাদের মধ্যে ফ্রান্সের ভাষা শিক্ষা ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং কিছু সুবিখ্যাত আন্তর্জাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও রয়েছেন। তাঁরা চীনা ভাষা ও ওয়েবসাইট এবং চীনা ভাষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গের ওপর অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বিনিময় করেছেন। তাছাড়া হস্তলিপি, কুং ফু ,ড্রাগণ নাচ ও সিংহ নাচ সহ চীনের বিভিন্ন বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও পরিবেশিত হয়েছে। যাতে অংশগ্রহণকারীরা চীনের সংস্কৃতির আকর্ষনীয় দিকগুলোকে অনুভব করতে পারেন।
স্যু লিন মনে করেন, এবারের মেলার বৈশিষ্ট্য হলো প্রদর্শনীর বিষয়বস্তু ও পদ্ধতি। তিনি বলেছেন,
এবারের মেলায় কেবল চীনা ভাষা শিক্ষার বই রয়েছে তাই নয়, বরং চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কিত বহু বইও রয়েছে। তাছাড়া এবার চীনা - ফরাসী ভাষায় পাঠ্য বই প্রথমবার প্রদর্শিত হয়েছে। মাল্টিমিডিয়া শিক্ষাদানের মাধ্যমে চীনা ভাষা ওয়েবসাইটেও শিখতে পারা যায়।
জানা গেছে, ফ্রান্সে আরো বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে চীনা ভাষার কোর্স চালু হয়েছে। কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট নির্মাণেও লক্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। মেলা আয়োজনের পর চীনা ভাষা শিক্ষার ওয়েবসাইট অব্যাহতভাবে সম্প্রসারিত হবে। বৈচিত্র্যময় শিক্ষাদানের পদ্ধতি এবং সমৃদ্ধ শিক্ষা সম্পদের মাধ্যমে লোকজনের চীনা ভাষা শেখার দিকটি আরো সহজ হবে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ফ্রান্সের মিরেইলি গুইলিয়ানো চীনের প্রদর্শনী অঞ্চলে বেশি সময় কাটিয়েছেন। তিনি সর্বশেষ ফরাসী-চীনা ভাষার পাঠ্য বই দেখেছেন। তিনি বলেছেন,
আমি চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে খুব আগ্রহী। এ সংস্কৃতিকে গভীরভাবে বুঝতে চাইলে আগে সে দেশের ভাষাকে জানতে ও বুঝতে হবে। আমি মনে করি, চীনা ভাষা হলো ভবিষ্যতের ভাষা।
|