দু'দিন ব্যাপী আরব লীগের ২০তম শীর্ষ সম্মেলন ৩০ মার্চ সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে শেষ হল। সম্মেলনে আরব দেশগুলোর ঐক্য বজায় রাখাকে প্রধান কাজ হিসেবে নির্ধারণ করে "দামাস্কাস ঘোষণা" গৃহীত হয়েছে।
"দামাস্কাস ঘোষণায়" বলা হয়েছে, আরব দেশগুলো একবল হয়ে সদস্য দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আলোচনার মাধ্যমে আরব দেশগুলোর মধ্যে মতভেদ দূর করা এবং বাইরের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার আগে আরব দেশগুলোর অভিন্ন অবস্থানের ওপরে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন:
"এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো আরব দেশগুলোর অভিন্ন পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করা। সংলাপ হলো এই অভিন্ন পদক্ষেপের ভিত্তি। আমি বিশ্বাস করি অভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের এই চালু হলে তা আরব দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থা হবে।"
আরব লীগের মহাসচিব আমর মুসা এবং সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ আল-মালিম পরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে ফলাফল অর্জিত হয়েছে। মুসা বলেন:
"আরব দেশগুলোর মধ্যে নীতিগত মতভেদ নেই, শুধু কিছু খুঁটিনাটি বিষয়ে ভিন্ন মত আছে। মতভেদগুলোর মধ্যে কিছু কিছু তত্ক্ষনিকভাবে সমাধানযোগ্য, বাকিগুলো সমাধানে কিছুটা সময় লাগবে।আরব দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নত হওয়ায় আমি আশাবাদী।"
ওয়ালিদ আল-মালিম মুসার মত একই মত পোষণ করেন। তিনি বলেন:
"আরব দেশগুলোর উচিত একই অবস্থানে থাকা এবং অভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া। আরব দেশগুলোর পরিস্থিতির উন্নতি চাইলে তাদের বাস্তব ব্যবস্থা নেয়া উচিত।"
লেবাননের ব্যাপারে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ২৯ মার্চ অন্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন:
"লেবানন সমস্যা সমাধানে লেবাননী জনগণের নিজেরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। তাদের নিজের সংবিধান আছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থা নিজের ভূমিকা পালন করতে পারে। এ ব্যাপারে অন্য দেশ শুধু সাহায্য করতে পারে, লেবাননীদের হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।"
ঘোষণায় ফিলিস্তিন সমস্যায় গাজা অঞ্চলে ইসরাইলের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নিন্দা করা হয়। ইসরাইলের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি শান্তি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে ফিলিস্তিনকে সাহায্য দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঘোষণায় ফিলিস্তিনের দুটি প্রধান সম্প্রদায় ফাতাহ ও হামাসের মধ্যে শান্তি আলোচনা ত্বরান্বিত করার ব্যাপারে আরব দেশগুলোর ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। মুসা বলেন:
"আমি বিশ্বাস করি যে কোনো আরব দেশ ফিলিস্তিনের বিছিন্নতা মেনে নিতে পারে না। ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ মতভেদ তাদের সমস্যা সমাধানে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।"
ঘোষণায় ইরাকের সার্বভৌমত্ব ও ভূভাগীয় অখন্ডতা রক্ষার স্বীকৃতি দেয়া হয়। ইরাকের উচিত সার্বিক শান্তি বাস্তবায়ন করা, নিজ দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা।
এছাড়া ঘোষণায় ইসরাইলের প্রতি গোলান মালভূমি অঞ্চল থেকে বাহিনী সরিয়ে নিয়ে তা ফিলিস্তিনকে ফেরত দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ওয়ালিদ আল-মালিম বলেন:
"সিরিয়া সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা অর্জনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে এই অঞ্চলে আর যুদ্ধ না হয়।"(ইয়াং ওয়েই মিং)
|