v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-26 11:10:37    
মার্কিন বাহিনী তালিবানদের সামরিক অভিযানের মুখোমুখি

cri
    ২৫ মার্চ আফগানিস্তানের তালিবান সশস্ত্র সংস্থা ঘোষণা করেছে, আফগানিস্তান বাহিনী এবং আফগানিস্তানে বিদেশী বাহিনীর ওপর বসন্তকালের শুরু থেকে তারা আঘাত হানবে । এর অর্থ হলো আফগানিস্তানে খুব সম্ভবত নতুন দফায় হিংসাত্মক ঘটনার সূত্রপাত হতে যাচ্ছে । যার ফলে আফগানিস্তানের উত্তেজনাময় পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিতে পারে ।

    তালিবানদের বিবৃতিতে বলা হয়, তারা 'ক্লাস নেয়া' শিরোনামে বসন্তকালের শুরু থেকে এ সামরিক অভিযান চালাবে । এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে মোতায়েন বিদেশী বাহিনীর মোকাবিলা করবে এবং তাদের আফগানিস্তান থেকে বহিষ্কার করবে । ২০০১ সাল থেকে তালিবান সশস্ত্র জঙ্গীরা বসন্তকালেই বহুবার হামলা চালিয়েছে এবং আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে অবনতি শীল করে তুলেছে । বিশেষ করে ২০০৭ সালে আফগানিস্তানে বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৮ হাজারেরও বেশি, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বাধিক । এর মূল কারণ হলো তালিবান সশস্ত্র জঙ্গীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ।

    চলতি বছর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে , সড়ক বোমা বিস্ফোরণ এবং নানা ধরনের আত্মঘাতী হামলাসহ বিভিন্ন হিংসাত্মক ঘটনা বারবার ঘটেছে এবং এতে ২৫০জনেরও বেশি নিহত হয়েছে । মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মহা-পরিচালক মাইক ম্যাককোনেল গত মাসে স্বীকার করেন , ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল রাখতে পারে নি বরং তার আরও অবনতি হয়েছে । তালিবানরা তাদের অভিযানের আওতা আগের শান্তিপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলে ও রাজধানী কাবুলের কাছাকাছি এলাকায় সম্প্রসারণ করেছে । বৃটেনের জেন তথ্য গ্রুপ ২৫ মার্চ এক রিপোর্টে বলেছে, আফগানিস্তান বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় অস্থিতিশীল দেশে পরিণত হয়েছে ।

   তালিবান সশস্ত্র জঙ্গীদের উন্নয়ন এবং আফগান পরিস্থিতির অবনতি যুক্তরাষ্ট্রের অচলাবস্থার প্রতিফলন। সম্প্রতি আফগানিস্তানে সৈন্য বাড়ানো নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর মাথা ব্যথার ঝামেলায় পরিণত হয়েছে । বর্তমানে ন্যাটোর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর মোট ৬০ হাজারেরও বেশি বিদেশী সৈন্য আফগানিস্তানে শান্তি রক্ষা, পুনর্গঠন ও সন্ত্রাস দমনের দায়িত্ব পালন করছে । তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার । গত কয়েক মাসে তালিবান সশস্ত্র জঙ্গীদের হামলা গুরুতর হওয়ার পাশাপাশি মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রবার্ট গেটস চলতি বছরের প্রথম দিকে ন্যাটোর ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের কাছে প্রেরিত চিঠির মাধ্যমে আফগানিস্তানে সৈন্য ও সাজ সরঞ্জাম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন । মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ২০ মার্চ আফগানিস্তান সফরকালে ন্যাটোকে সৈন্য বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন । যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য বাড়ানো প্রস্তাব সম্পর্কে ন্যাটোর মিত্রদেশগুলো কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নি বলে এ সমস্যায় দু'পক্ষের মতভেদ এখন অনেক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ।

    ইউরোপের কয়েকটি দেশ মনে করে, আফগানিস্তানের সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র মাত্রাতিরিক্ত সামরিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে এবং অর্থনৈতিক পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন মূল সমস্যাগুলো উপেক্ষা করেছে । যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ  অংশীদার জার্মানী, ফ্রান্স এবং ইটালিসহ ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশ নিজেদের দেশে যুদ্ধ বিরোধিতার দৃঢ় মনোভাব এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশে শান্তি রক্ষা তত্পরতায় বহু সংখ্যক সৈন্য পাঠানোর কারণে তাদের পক্ষে আফগানিস্তানে আরও বেশি সৈন্য পাঠানো কঠিন কাজ হবে ।

    আফগানিস্তানে মার্কিন নীতি নিন্দা ও সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার কারণে তা বুশ সরকারের আরেকটি মাথা ব্যথায় পরিণত হয়েছে । সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর বাহিনী আফগানিস্তানে ধারাবাহিক সামরিক অভিযান চালিয়েছে ,তবে তালিবানদের ওপর কার্যকর আঘাত না হানার পাশাপাশি এ অভিযানে ব্যাপক নিরীহ লোক হতাহত হয়েছে । এর ফলে মার্কিন বাহিনী এবং যৌথ বাহিনীর দখলে থাকা আফগানিস্তানের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া পিছিয়ে পড়েছে এবং সাধারণ লোকদের মৌলিক জীবনযাপন ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন সমস্যার  সমাধান সম্ভব হয় নি ।

    এছাড়া, ২৫ মার্চ আফগানিস্তান সহায়তা ও সমন্বয় সংস্থার রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্য দেশগুলোর সমালোচনা করা হয়েছে । রিপোর্টে বলা হয়,২০০১ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আফগানিস্তানে দেয়া আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । তবে এ পর্যন্ত মার্কিন সরকার আরও ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য দেয় নি ।

    তা থেকে বোঝা যায়, বর্তমানে আফগানিস্তান সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে । এ প্রেক্ষাপটে তালিবানদের বসন্তকালের সামরিক অভিযান আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর ওপর আরও বেশি ছাপ সৃষ্টি করবে ।

    (ছাও ইয়ান হুয়া)