v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-20 13:36:36    
শেনইয়াং ঠিক আমার বাসা

cri
মোছিজুকি হিদেয়াকি হলেন জাপানের আনশিতাই ওষুধ তৈরী গ্রুপের চীন শাখা কোম্পানির ডেবুটি ম্যানেজার। তিনি শেনইয়াংয়ে দু'বছর ধরে আছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে মোছিজুকি হিদেয়াকি সম্পর্কে কিছু কথা জানাবো।

আনশিতাই চীন শাখা কোম্পানির যোগাযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা সং লি হুয়া তাঁর বস সম্পর্কে বলেন, 'তিনি অনেক হাসি-খুশি। তিনি আমাদের কোম্পানির সবগুলো অনুষ্ঠানে অংশ নেন। প্রতি বছর তিনি সপরিবারে নববর্ষ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। কর্মচারীদের সঙ্গে খেলেন। আমরা সবাই তাঁকে পছন্দ করি।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেয়ার পর ওষুধ শিল্পে কাজ শুরু করেন। এখন পর্যন্ত এ কাজে তার ২৩ বছর কেটে গেছে। শেনইয়াংয়ে আসার আগে তিনি আনশিতাই যুক্তরাষ্ট্র শাখা কারখানায় ৬ বছর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বলেন, ৬ বছর বিদেশে বসবাসের জন্য শেনইয়াংয়ে তাঁর কোনো অসুবিধা হয় নি। তিনি এ সম্পর্কে বলেন, 'প্রথম শেনইয়াংয়ে আসার পর আমি বিমান বন্দর হাইওয়েতে কোনো স্থাপত্য দেখনি নি। আমি মনে করি, এটি আমার আগের আমার কল্পনার মতই ছিল। কিন্তু শহরে প্রবেশ করে আমি অনুভব করি শেনইয়াং একটি আধুনিক শহর।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, তিনি দ্রুত শেনইয়াংয়ে তার কাজের সঙ্গে ও জীবনের সঙ্গে সংগতিকে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন এবং শেনইয়াংকে পছন্দ করেছেন। তিনি বলেন, 'শেনইয়াংয়ের জীবন সুন্দর। আমার জীবন ধারার বিন্যাসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।'

আনশিতাই কোম্পানি একটি ওষুধ গবেষণা ও তৈরী শিল্প-প্রতিষ্ঠান। দু'বছরের মধ্যে মোছিজুকি হিদেয়াকির নেতৃত্বে কোম্পানি দ্রুত উন্নতি করছে। দু'বছর আগে প্রতি বছর কোম্পানিটির বিক্রীর পরিমাণ ছিল মাত্র ২০ কোটি ইউয়ান রেনমিনপি। কিন্তু এখন প্রতি বছর ৬০ কোটি ইউয়ান রেনমিনপিতে দাঁড়িয়েছে। যদিও কোম্পানি এখন লাভ জন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, তুবও মোছিজুকি হিদেয়াকি মনে করেন বিক্রীর পরিমাণ বাড়ানোই কোম্পানিটির একমাত্র লক্ষ্য নয়। একটি ওষুধ তৈরী শিল্প-প্রতিষ্ঠানের একজন প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে তিনি পরিবেশ সুরক্ষার ওপর গুরুত্ব দেন। কোম্পানিটি বহু বার শেনইয়াংয়ের পরিবেশ সুরক্ষার উত্কৃষ্ট শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করেছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আনশিতাই চীন শাখা কোম্পানির শেনইয়াংয়ে কারখানা নির্মাণের ১০ বছরে কোনো পরিবেশ দুষণের ঘটনা ঘটেনি।'

জানা গেছে, আনশিতাই ১ লাখেরও বেশি ইউয়ান রেনমিনপি ব্যয়ে বৃক্ষরোপন করেছে। ওষুধ তৈরীর মাধ্যমে বিশাক্ত গ্যাসও পানি পরিশোধন করবে। কোম্পানিটি সব পানি পুনর্ব্যবহার করবে। এরমাধ্যমে প্রতি বছরে ২০ হাজার টন পানি সাশ্রয় করা যাবে। এ সম্পর্কে মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, 'আমি আশা করি নিজেদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রমাণ করি, পরিবেশ সুরক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি আরো বেশি মানুষ পরিবেশ সুরক্ষার তত্পরতায় অংশ নেবে। আমরা যৌথভাবে পৃথীবি সুরক্ষা করবো।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, নিজের উন্নয়ন ত্বরান্বিতের পাশাপাশি আনশিতাই শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়িত্বও কম নয়। ২০০৩ সালে সার্স রোগের প্রকোপের সময় আনশিতাই চীন শাখা কোম্পানি শেনইয়াংয়ের মধ্য ও প্রাথমিক স্কুলগুলোর জন্য জীবাণূমক্ত থাকার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ২০০৬ সালে লিয়াওনিং প্রদেশের 'গ্রামের নতুন সহযোগিতা চিকিত্সা ব্যবস্থা ও শহরের কোমিউনিটি হাসপাতাল নির্মাণের' তত্পরতা সমর্থনের জন্য আনশিতাই চীন শাখা কোম্পানি শেনইয়াং রেড ক্রস সোসাইটিকে ৪লাখেরও বেশি ইউয়ান রেনমিপি দিয়েছে। গত কয়েক বছরে আনশিতাই দূর্যোগ কবলিত ও দারিদ্র অঞ্চলগুলোয় মোট ২০ লাখেরও বেশি ইউয়ান রেনমিনপি অনুদান দিয়েছে। মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, তিনি আশা করেন, জাপানের আনশিতাই আরো বেশি ওষুধের ওপর গবেষণা করবে ও ওষুধ তৈরী করবে। তিনি এসব ওষুধ চীনে ব্যবহার করবেন। তিনি বলেন, 'আমি শেনইয়াংয়ে কারখানার সম্প্রসারণ দ্রুততর করবো। আমার আরো বেশি লক্ষ্য ও মনোভাব রয়েছে। আমি আরো বেশি চ্যালেন্ঞ্জে সম্মখীন হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, তিনি বেশির ভাগ সময় কোম্পানিতে আছেন। চীনা কর্মচারীদের সক্রিয় মনোভাব মোছিজুকি হিদেয়াকির মনে খুবই গভীর চিহ্ন অংকিত হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমি কর্মচারীদের জন্য উচ্চ পর্যায়ের লক্ষ্য প্রণয়ন করি। কিন্তু সব কর্মচারীই নিজের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে পারেন। তাঁরা কাজ ছাড়া সবসময় বিভিন্ন প্রশীক্ষণে অংশ নেন। কিন্তু কখনো নিজের দায়িত্ব পালনে আহেলা করেননা। আমি অনেক মুগ্ধ হই।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি চীনা কর্মচারীদেরকে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, বিশেষভাবে শেনইয়াং নাগরিকরা অনেক বন্ধুপ্রতীম ও হাসি-খুশি। তিনি বলেন, শেনইয়াংয় ঠিক তার নিজের বাড়ির মত। তিনি আরো বলেন, 'কাজের সময় ছাড়াও আমরা সবাই সব সময় একসাথে খাই। আমরা অনেক ঐক্যবদ্ধ।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি বলেন, শেনইয়াং একটি শিল্প কেন্দ্র। প্রথমে শেনইয়াংয়ের আবহাওয়ার সঙ্গে তিনি সংগিত মেলাতে পারেননি। কিন্তু এখন অনেক ভাল হয়েছে। তিনি বলেন, দু'বছর ধরে তিনি মনে করেন, শেনইয়াংয়ের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আরো সুন্দর ও আধুনিক হয়েছে শহরটি। তিনি বলেন, 'শেনইয়াংয়ের উন্নয়নের আমি অনেক বিস্মিত। আমার জাপানের বন্ধু বলেন, শেনইয়াং প্রতি সেকেন্ডে উন্নত হচ্ছে। শেনইয়াং প্রাণশক্তিতে ভরপুর একটি শহর।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি চীনের অন্যান্য শহরও ভ্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, চীনের নানা স্থান প্রাণশক্তিতে ভরপুর। তিনি আরো বলেন, 'জাপান স্থিতিশীল উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে এবং আরো দ্রুত উন্নয়নের সুযোগ নেই। কিন্তু চীনের আরো বিরাট উন্নয়নের অবকাশ রয়েছে। চীন অব্যাহতভাবে দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে উন্নত হবে।'

মোছিজুকি হিদেয়াকি আশা করেন, তাঁর তিন শিশু শেনইয়াংয়ে আসবে। তিনি বলেন, সময় পেলে তিনি তাঁর শিশুদেরকে নিয়ে শেনইয়াংসহ চীনের নানা স্থানে ভ্রমণ করবেন। তিনি চীন ও জাপানের জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ যোগাযোগের জন্য অবদান রাখতে চেষ্টা করে যাবেন।