v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-19 17:53:10    
ইরাকের জাতীয় সমঝোতা প্রক্রিয়া এখনও কঠিন

cri
ইরাক যুদ্ধের পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে ১৮ মার্চ ইরাকের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ৩শ' ৫০জন নেতা ইরাকের রাজধানী বাগদাদে দু'দিনব্যাপী একটি সম্মেলনে দলগত মতভেদ দূর করা এবং জাতীয় সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে ইরাকের সুন্নি সম্প্রদায়ের 'অ্যাকর্ডেন্স ফ্রন্ট' ও শিয়া সম্প্রদায়ের 'আল-সাদর'স মুভমেন্ট'সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সম্মেলনটি বর্জন করে। এ থেকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরাকের সমঝোতা প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া অত্যন্ত কঠিন কাজ।

১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত এই জাতীয় সংহতি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি, স্পীকার মাহমুদ মাশহাদানি প্রমুখ ইরাকী শীর্ষ নেতা এবং শিয়া, সুন্নি সম্প্রদায় ও কুর্দিশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। সম্মেলনটির লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা, দেশ পুনর্গঠন ও সার্বভৌমত্বের অখন্ডতা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সমঝোতার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মালিকি বলেন, ইরাকের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, গৃহ-যুদ্ধের হুমকি শেষ হয়ে গেছে। সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি বাস্তবায়িত হয়েছে।

মালিকি বিভিন্ন পক্ষের প্রতি জাতীয় সমঝোতা এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতীয় সমঝোতা কোনো দলের স্বার্থহীন করবে না বরং ইরাককে নিরাপত্তা এনে দেবে। জাতীয় সমঝোতা শুরুই একটি রাজনৈতিক স্লোগান নয়, বরং ইরাক পুনর্গঠনের জন্য এক ধরনের কৌশলগত ধারণা। তিনি বিভিন্ন দলকে জাতীয় সমঝোতা সম্পর্কে সন্দেহের দৃষ্টিভঙ্গী বাদ দেওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, বিভিন্ন দলের পার্লামেন্ট সদস্যদের ভিন্ন ভিন্ন মতকে রাজনৈতিক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। পাশাপাশি কিছু কিছু ব্যক্তি সমঝোতা প্রক্রিয়া ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে মালিকি তাদের সমালোচনা করেছেন।

সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের একাংশের দু'টি রাজনৈতিক দল সম্মেলন বয়কট করে। সুন্নি সম্প্রদায়ের 'অ্যাকর্ডেন্স ফ্রন্ট'-এর মুখপাত্র সালীম আব্দুল্লাহ সম্মেলন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এর আগের বহু চুক্তি কার্যকরী হয় নি বলে কি করে নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করা যাবে। যতদিন পর্যন্ত ইরাকের পার্লামেন্ট 'অ্যাকর্ডেন্স ফ্রন্ট'-এর রাজনৈতিক শর্ত না মানবে ততদিন পর্যন্ত তারা সম্মেলনে অংশ নেবেন না। এর আগে, 'অ্যাকর্ডেন্স ফ্রন্ট' অভিযোগ করে যে, মালিকির নেতৃত্বাধীন শিয়া সম্প্রদায়ের সরকার যাদের অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হয় নি তাদেরকেও মুক্তি দেয় নি, শিয়া সম্প্রদায়ের মিলিশিয়া-বাহিনী ভেঙে দেয় নি এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের পার্লামেন্ট সদস্যদেরকে নিরাপত্তা সমস্যা সংক্রান্ত নীতি নির্ধারনী প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভূক্ত করে নি। 'সাদর মুভমেন্ট'-এর নেতা নাসের আল রুবায়ে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও, কিছু ক্ষণ পরই তিনি চলে যান এবং সম্মেলনটি স্রেফ সরকারের প্রচার বলে গণ্য করেন।

লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে এবারের সম্মেলন মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি এবং রিপাবলিকান পার্টির মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জন ম্যাককেইনের ইরাক সফরের সময় অনুষ্ঠিত হয়। এটা মোটেও কাকতালীয় ঘটনা নয়। কারণ মার্কিন রাজনৈতিক মহল ও সামরিক বাহিনী সব সময় বিভিন্ন ধরনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের এমন মৌলিক অবস্থান প্রকাশ করতে চায় যে, গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় জাতীয় সমঝোতা ত্বরান্বিত করার এটা গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তবে সুন্নি সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এখনো সরকারে ফিরে যায় নি এবং ইরাকের মন্ত্রিসভায় প্রায় অর্ধেক মন্ত্রী পদ খালি পড়ে আছে। মালিকি সরকার এ রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত হতে না পারলে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ যত প্রবল হোক না কেন ইরাকের জাতীয় সমঝোতা প্রক্রিয়ার বাস্তব অগ্রগিত হওয়া বেশ কঠিন।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, আগামী কয়েক মাসে ইরাকের সামনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা আছে। যেমন, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকারের আয়ের অনুপাত, 'তেল আইন' প্রণয়ন শাসনতন্ত্র সংশোধন ও স্থানীয় নির্বাচন করা। ইরাক সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে এসে রাজনৈতিক সমঝোতা ত্বরান্বিত এবং জনগণের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন না করলে, ইরাকের নিরাপত্তা পরিস্থিতির মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না এবং সে ক্ষেত্রে জাতীয় সমঝোতা প্রক্রিয়াও দুরুহ হয়ে পড়বে।