পূর্ব চীনের চিয়াং সু প্রদেশের ছাং চৌ শহরে রয়েছে একটি সুবিখ্যাত উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত শিক্ষা এলাকা - ছাং চৌ বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগর। এ নগরে বহু পেশাগত বিদ্যালয় রয়েছে। ছাং চৌ বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগর শিক্ষা, গবেষণা এবং শিল্প উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। যাতে অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ প্রতিভাদের চাহিদা মেটানো যায়।
ছাং চৌ চীনের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঞ্চল ইয়াংসি নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত। শহরটি শাংহাই,নানচিং ও সুচৌসহ বিভিন্ন উন্নত নগরের কাছাকাছি। ২০০২ সাল থেকে চিয়াং সু প্রদেশের উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত শিক্ষার উন্নয়ন ও সংস্কারের একটি পরীক্ষামূলক অঞ্চল হিসেবে ছাং চৌ বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগর প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। বর্তমানে পাঁচটি উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত বিদ্যালয় এই বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগরে প্রবেশ করেছে। এ নগরে তথ্য প্রযুক্তি,বস্ত্রবয়ন এবং যন্ত্র ও বিদ্যুত্সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর শিক্ষামূলক বিভাগ রয়েছে। এ নগর মোটামুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তিগত প্রতিভার চাহিদা মেটাতে পারে। বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগরের উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত শিক্ষা অঞ্চলের পরিচালনা কমিটির অফিসের পরিচালক লু চিন লিন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, পাঁচ বছরে বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগরের আয়তন প্রায় ২০ লাখ বর্গমিটারে দাঁড়িয়েছে। সারা দেশের বেশির ভাগ প্রদেশের ছাত্র -ছাত্রীদের ভর্তি হওয়ায় নগরের দ্রুত উন্নয়নের প্রবণতা বজায় রয়েছে। তিনি বলেছেন, (১)
ছাং চৌ উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত শিক্ষা অঞ্চলের পাঁচটি বিদ্যালয় চীনের ১৪টি প্রদেশের ছাত্র -ছাত্রীদের ভর্তি করে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রীর সংখ্যা ৭৬ হাজার। বিভিন্ন স্থাপনা ও আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম শিক্ষা অঞ্চলের প্রতিটি বিদ্যালয়েই রয়েছে।
লু চিন লিন বলেন, ছাং চৌ উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত শিক্ষা অঞ্চল এবং সাধারণ পেশাগত বিদ্যালয় ভিন্ন প্রকৃতির। অঞ্চলের পাঁচটি বিদ্যালয় সম্পদকে কাজে লাগিয়ে যৌথভাবে স্থাপনা ও প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ব্যবহার করে থাকে। এতে কেবল ভূমি সম্পদ সাশ্রয় করা হয়েছে তাই নয়, বরং সাজ-সরঞ্জাম ব্যবহারের হারও আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, (২)
আধুনিক শিল্প কেন্দ্র চিয়াং সু প্রদেশ ও ছাং চৌ শহরের যৌথ উদ্যোগে এ বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগরে ১৩টি আধুনিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। আরো ২৩টি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রতি বছর প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এসব ঘাঁটিতে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ পাবে।
সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের পদ্ধতির তুলনায় পেশাগত বিদ্যালয় চর্চা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সামর্থ্য উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দেয়। (৩)
আমাদের সাংবাদিক ছাং চৌ বিজ্ঞান ও শিক্ষা নগরে ঝাইল দেয়া ও পরীক্ষা প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দেখেছেন যে, প্রশস্ত কর্মশালায় ছাত্র-ছাত্রীরা সুশৃংখলভাবে চর্চা করছে। ছাং চৌ ইঞ্জিনিয়ারীং পেশাগত বিদ্যালয়ের ঝাইল দেয়া বিভাগের একজন ছাত্র শি চিং আমাদের সংবাদদাতাকে বলেছে, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার দ্বিতীয় বর্ষ থেকে সে এখানে বাস্তব প্রশিক্ষণ করতে শুরু করে। এসব প্রশিক্ষণের পরবর্তী কর্মের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এটি তাদের কর্মসংস্থানের জন্য কল্যাণকর।সে বলেছে,(৪)
আমি চিয়াং সু প্রদেশের হুয়াই আন থেকে এসেছি। আমি ঝাইল দেয়া বিভাগ বাছাই করেছি। বর্তমানে আমি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছি। শিগগিরই আমি স্নাতক হবো। গত কাল আমি একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। আমি এই কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের অর্থনীতি উন্নয়নের দ্রুত অগ্রগতির কারণে প্রতিভা যন্ত্রপাতি শিল্প ও পরিসেবা ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায়ের প্রযুক্তি প্রতিভার চাহিদা বাড়ছে। তবে চীনের পেশাগত শিক্ষা উন্নয়নের মান তেমন ভালো নয়। এখনো সমাজের চাহিদা মোটানো যাচ্ছে না। যেমন চীনের উচ্চ পর্যায়ের কারিগর শ্রমিকের মোট সংখ্যার মাত্র ৩.৫ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোর চেয়ে এ ক্ষেত্রে বিরাট ব্যবধান বিদ্যমান। এ কারণে উচ্চ পর্যায়ের পেশাগত বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর জন্য উন্নয়নের ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ছাং চৌ যন্ত্র ও বিদ্যুত্ সম্পর্কিত পেশাগত প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের মোটর ইঞ্জিনিয়ারীং বিভাগের ছাত্র লি হাও তাদের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যত্ সম্ভাবনা সম্পর্কে খুবই আশাবাদী। সে বলেছে,(৫)
আমি মনে করি, বর্তমানে চীনের গাড়ি শিল্প এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ভবিষ্যতে আরো এর উন্নতি হবে। আমি গাড়ি মেরামত ও পরীক্ষা বিভাগে লেখাপড়া করি। আমি এখানকার একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছি।
ছাং চৌ প্রযুক্তি ও শিক্ষা নগরের পরিচালনা কমিটির অফিসের পরিচালক লু চিন লিন বলেছেন, (৬)
চার বছর ধরে আমাদের স্নাতক হওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সকলেই চাকরি পেয়েছে। সব সময় প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা কোম্পানির সঙ্গে চাকরি পাওয়ার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। সুতরাং আমাদের স্নাতক ছাত্র-ছাত্রীদের চাহিদা এখনো অনেক বেশি।
|