v চীন আন্তর্জাতিক বেতারv বাংলা বিভাগv চীনের বিশ্ব কোষ
China Radio International Friday Apr 11th   2025 
পর্যটনসংস্কৃতিবিজ্ঞানখেলাধুলাকৃষিসমাজঅর্থ-বাণিজ্যশিক্ষার আলো
চীনা সংবাদ
বিশ্ব সংবাদ
চীনের কণ্ঠ
সংবাদ ব্যক্তিত্ব
সংবাদের প্রেক্ষাপট
নানা দেশ
কুইজ
আবহাওয়া

মহা মিলন ২০০৮ পেইচিং অলিম্পিক গেমস

ভয়াবহ ভূমিকম্প দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে আঘাত হেনেছে

লাসায় ১৪ মার্চ যা ঘটেছিল

ইয়ুন নান প্রদেশ

দক্ষিণ এশিয়া

তৃতীয় নয়ন
আরো>>
(GMT+08:00) 2008-03-24 16:55:48    
বিখ্যাত বেহালা বাদক লিন জাও লিয়াং

cri

    সম্প্রতি চীনের বিখ্যাত বেহালা বাদক লিন জাও লিয়াং পেইচিংয়ে বেহালা পরিবেশন করেছেন। তার বেহালা পরিবেশন দেখে দর্শকরা সবাই মুগ্ধ হয়েছেন। আজকের অনুষ্ঠানে বেহালা বাদক লিন জাও লিয়াংয়ের কথা আপনাদের জানাচ্ছি।

    ১৯৬০ সালে লিন জাও লিয়াং চীনের তাইওয়ানে জন্মগ্রহণ করেন। ৫ বছর বয়স থেকে তিনি বেহালা শিখতে শুরু করেন। ছোটবেলায় বেহালা শেখার স্মৃতিচারণ করে লিন জাও লিয়াং বলেন:

    "আমি তাইওয়ানের একটি ছোট শহর সিন জু'তে বড় হয়েছি। ৫ বছর বয়সে আমার প্রতিবেশী'র বাচ্চা বেহালা শিখতো। তাকে দেখে আমার খুব মজা লাগাতো। তাই আমিও একটি খেলনা বেহালা বাজাতে শুরু করি। বাবা মা মনে করে আমি বেহালা শিখতে খুব আগ্রহী তাই আমার জন্য একটি বেহালা কিনে দেন। তারপর বেহালা বাজানোর জন্য ক্লাসে ভর্তি হই। ৫ বছর বয়স থেকে সেই যে বাজানো শুরু হলো আর থামি নি।"

    বেহালায় লিন জাও লিয়াংয়ের প্রতিভা আছে। তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করতেন বলেই ১০ বছর বয়সে তিনি তাইওয়ানে বেহালা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন। বড় হওয়ার পর তিনি অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কনসার্ভেটরি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। ১৭ বছর বয়সে বিশ্ব পর্যায়ের বেহালা বাদকদের মধ্যে তিনি স্থান করে নেন। লিন জাও লিয়াং বলেন:

    "তখন আমার বয়স ১৭ বছর, মাত্র হাই-স্কুলের লেখাপড়া শেষ করেছি। স্পেনের রানী সোফিয়অ আন্তর্জাতিক বেহালা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছি। সেটি ছিল আমার জীবনের একটি মাইলস্টোন। তখন থেকে স্পেনে আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বেহালা বাজাতে শুরু করি। এ সময়টা ছিল আমার জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করে আমি অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করি। কারণ স্কুলে নিজে নিজে বেহালা অনুশীলন করা আর মঞ্চে দর্শকদের জন্য বাজানো একই অনুভূতি নয়। মঞ্চে আমি খুব উত্তেজনা অনুভব করি ও অনেক মজা পাই।"

    লিন জাও লিয়াং বলেন বেহালা শেখার সময় কষ্ট যেমন পেয়েছেন তেমনি আনন্দও পেয়েছেন। একবার এরকমই একটা ঘটনা ঘটলো। একজন বেহালা মাস্টার লিন জাও লিয়াংয়ের বেহালা দিয়ে একটি গান বাজালেন। লিন পাশে বসে শোনেন। লিনের প্রথম ৫ মিনিটে নিজের বেহালা বলে মনে হলো কিন্তু তারপরই বেহালার আওয়াজ পুরোপুরিভাবে ওই বেহালা মাস্টারের বেহালায় পরিণত হলো। লিন জাও লিয়াং খুব বিস্মিত হয়েছিলেন। নিজের কানে না শুনলে তিনি কোনো মতেই বিশ্বাস করতে পারতেন না। তিনি মনে করেন বেহালার এক রকম যাদু আছে। এখন লিন জাও লিয়াংয়ের বেহালা সব সময় তার পাশে থাকে। তিনি বলেন:

    "আমি একজন আশাবাদী মানুষ। সঙ্গীত আমার জীবনের ভালোবাসা। বেহালা বাজিয়ে আমি অপার আনন্দ পাই। আমি জানি অনেক সঙ্গীত শিল্পীর পক্ষে একটি পর্যায়ে পৌঁছনোর পর উন্নতি করা খুব কঠিন। পরবর্তী পথ কোন দিকে যাবে কেউ কেউ নিজেই বলতে পারে না। আমি মনে করি, এ অবস্থা থেকে বের হতে চাইলে অব্যাহতভাবে সঙ্গীতের প্রেরণা খোঁজার চেষ্টা করতে হবে। এই প্রেরণা সারা জীবনই খুঁজে বেড়াতে হয়। কোনো সঙ্গীত শিল্পী অনুপ্রেরণা খোঁজার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাহলে তার অবসর নেওয়া উচিত।"

    লিন জাও লিয়াং মঞ্চে পরিবেশন করার সময় মুখে একরকম উষ্ণ হাসি থাকে, যা দর্শকদেরকে মুগ্ধ করে। তিনি মনে করেন বাদক দর্শকের যতো কাছে যেতে পারে ততই ভাল । তিনি আশা করেন তার সঙ্গীত শুনে দর্শকদের ভাল লাগবে। তিনি বলেন:

    "আমি বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত পছন্দ করি। যেমন বারোক, ক্লাসিক্যাল আর রোম্যান্টিক সঙ্গীত। আমি আশা করি বিভিন্ন ধরনের বাদনের সময় আমি নিজের অনুভূতিকে সঙ্গীতের সঙ্গে একাকার করে দিতে পারি। প্রত্যেক শিল্পীই সঙ্গীত বাজানোর সময় নিজের অনুভূতি বাদনের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। তাই একই সঙ্গীত ভিন্ন শিল্পী বাজালে দর্শকদের ভিন্ন অনুভূতি হয়।"

    বিশ বছর ধরে লিন জাও লিয়াং বিশ্বের সেরা বেহালা বাদকদের মধ্যে অন্যতম। নিজের পরিবেশনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিন জাও লিয়াং বলেন:

    "বালনশৈলী খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাদনশৈলী ভাল আয়ত্ত করতে না পারলে বেহালা বাজানো সুন্দর হবে না। কিন্তু তার চেয়েও সঙ্গীত বোধ ও অনুপ্রেরণা আরো গুরুত্বপূর্ণ। বাদনশৈলী হলো গোটা প্রক্রিয়ার একটি অংশ। শিল্পীর লক্ষ্য হলো বাদনশৈলীর টেকনিকের মাধ্যমে নিজের আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ করা।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China