বন্ধুরা, কুইকাং শহর হল দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একটি নতুন অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর এবং দক্ষিণ পশ্চিম চীনের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর। গত কয়েক বছরে কুইকাং শহরের অর্থনীতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার রিচার্ড জুস্ট লিনো এর জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে লিনো সম্পর্কে কিছু কথা জানাবো।
কুইকাং শহর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে অবস্থিত। কুইকাং শহরের সিচিয়াং নদী দক্ষিণ-পূর্ব চীনের তীরবর্তী অঞ্চলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কুইকাং শহরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল চীনের অর্থনীতি ক্ষেত্রে অগ্রনী কুয়াংতং প্রদেশ, হংকং ও ম্যাকাও'র সঙ্গে সংযুক্ত। পশ্চিমাঞ্চল পশ্চিম চীনের প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলের কাছাকাছি। কুইকাং শহর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত চীনের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ স্থল। কুইকাং শহরের ভৌগোলিক সুবিধা বেশি।
২০০৬ সালের মে মাসে কুইকাং শহরের সরকার ও ইন্দোনেশিয়ার পি.টি.একেআর কোম্পানি যৌথভাবে কুয়াংসির কুইকাংয়ে বৃহত্তম কোন্টেনার পোর্ট নির্মাণ করেছে। লিনো তখন থেকেই চীনে আছেন। তিনি এ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলেন,
(রে ১)
'আমি ২০০৫ সালের জুলাই মাসে চীনে আসি। প্রতি মাসেই আমি ইন্দোনেশিয়ায় যাই। তখন আমার প্রধান কাজ ছিলো কুইকাং বন্দর পুঁজিবিনিয়োগের সম্ভাবনা গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ করা।'
লিনো ছিলেন ইন্দোনিশিয়ার বন্দর নির্মাণের একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকে। এখন লিনো বেশির ভাগ সময় কুইকাং শহরে থাকেন। তিনি বলেন,
(রে ২)
'বর্তমানে আমি বেশির ভাগ সময় কুইকাং শহরে থাকি। বছরে মাত্র এক মাস ইন্দোনেয়ায় থাকি। কুইকাংয়ে আমার এখন কাজ রয়েছে।'
কুয়াংসিতে ইন্দোনেশিয়ার মত আবহাওয়া রয়েছে। এছাড়া, কুয়াংসি সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার যোগাযোগ বেশি। সেজন্য লিনো কুইকাং শহরের জীবন যাত্রার সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন,
(রে ৩)
'যদিও আমি হান ভাষা বলতে পারি না, তবুও কখনো আমার একাকী লাগে নি। এখানে চীনা মানুষরা খুব বন্ধুপ্রতীম। সেজন্য আমি সহজে এখানে থাকতে। আমি কুইকাংকে পছন্দ করি।'
লিনো কুইকাংয়ে তিন বছর ধরে আছেন। তিনি চীনের অর্থনীতির উন্নয়নের ওপর ঘনিষ্ঠভাবে সজাগ দৃষ্টি রাখেন। তিনি চীনের অর্থনীতির এত দ্রুত উন্নয়নের জন্য বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,
(রে ৪)
'আমি মনে করি, চীনের উন্নয়ন অনেক দ্রুত ও সুষ্ঠু। গত ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত চীনের মত বিশ্বের অর্থনীতির ওপর প্রভাব কেলতে পারে এমন দেশ ছিলো না। যেমন একজন বন্দর বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে গত শতাব্দীর ৮০ দশক থেকে কুয়াংচৌ ও সাংহাই বন্দরের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। সেজন্য আমি কুয়াংশি সম্পর্কে অনেক জানি। তখন ইন্দোনিশিয়ার জাকার্তা বন্দর কুয়াংচৌ ও সাংহাই বন্দরের চেয়ে অনেক আধুনিক। কিন্তু এখন চীনের কুয়াংচৌ ও সাংহাই বন্দর বিশ্বের প্রথম পর্যায়ে উঠেছে এবং জাকার্তা বন্দরের চেয়ে অনেক আধুনিক হয়েছে। চীনের স্থান এখন বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিনত হয়েছে।'
তিনি বলেন, চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন ইন্দোনেশিয়ার পি.টি.একেআর কোম্পানি কুইকাং বন্দরের বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করেছে। তিনি বলেন, কুইকাং বন্দরের ভৌগোলিক সুবিধা অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি বলেন,
(রে ৫)
'ইন্দোনিশিয়ার পি.টি.একেআর কোম্পানি চীনে ১০ বছর ধরে ব্যবসা করতে এসেছে। আমাদের লিউচৌতেও ব্যবসা রয়েছে। আমাদের কোম্পানি হল ইন্দোনেশিয়া বন্দর ও পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়া, কোম্পানিটি কুইকাং বন্দরের কৌশলগত অবস্থানের ওপর গুরুত্ব দেয়। কুইকাং শহর কুয়াংসির কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত। এটিই হল কোম্পানিটির কুইকাং বন্দরে পুঁজিবিনিয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।'
২০০০ সাল চীনের পশ্চিম চীনের মহা উন্নয়নের কৌশল শুরু থেকে দেশী ও বিদেশী পুঁজি, প্রযুক্তি ও কর্মক্ষম জনশক্তিকে আকর্ষণ করে। এর ফলে পশ্চিম চীনের লোকসংখ্যা, জ্বালানী সম্পদ, পরিবেশ, অর্থনীতি ও সমাজের সামন্ঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিম চীনে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদও রয়েছে। এটি হল পূর্ব চীনের অথনীতি উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ দিক। কুইকাং হল পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের সংযোগ। কুইকাং এ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লিনো বলেন, অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়নের সঙ্গে সংগতি রাখার জন্য কুইকাং একেআর কোন্টেইনার পোর্ট কোম্পানি এখানে আরো আগেই পরিকল্পনা করেছে। তিনি এ সম্পর্কে বলেন,
(রে ৬)
'আমরা কুইকাংয়ে বিনিয়োগের আগে কুইকাং শহরের সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, এ পরিকল্পনা পণ্য পরিবহনের চাহিদা মেটাবে না। সেজন্য আমরা নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। তারা এ পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বন্দরে মালামাল বোঝাই আর খালাস করা কন্টেইনারের সংখ্যা ২০লাখ হবে।'
লিনো কুইকাং বন্দর নির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। কুইকাং শহরের সরকারের একজন কর্মকর্তা ফাং চেথাও বলেন,
(রে ৭)
'লিনো একজন বন্ধুপ্রতীম ও দায়িত্বশীল মানুষ। তিনি কুইকাং বন্দর নির্মাণের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। বিশেষ করে, তিনি কুইকাং শহরের কাজ ও জীবন যাত্রার সঙ্গে মিশে গেছেন।'
লিনোর সচিব ছেন চৌ বলেন, লিনো কাজ করার সময় অনেক চিন্তাভাবনা করে কাজ করেন। কিন্তু কর্মচারীদের সঙ্গে বন্ধুর মত। তিনি বলেন,
(রে ৮)
'লিনো অনেক বিনরী। তিনি কর্মচারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান। তিনি অনেক বন্ধুপ্রতীম।'
কুইকাং শহরের পুঁজিবিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ এবং স্থানীয় সরকার ও চীনা মানুষের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমর্থন লিনোর মনে খুবই গভীরভাবে রেখাপাত করেছে। তিনি এ সম্পর্কে বলেন,
(রে ৯)
'স্থানীয় সরকার আমাদের পরিকল্পনা সমর্থন করে এবং সবসময় আমাদেরকে সহায়তা দেয়। আমাদের পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে চলছে। এছাড়া, আমি কর্মচারীদের সমর্থন পেয়েছি। সেজন্য আমি এ কাজকে পছন্দ করি।'
|