ডায়াবেটিস হচ্ছে মানবদেহের ইনসুলিন অভাবের কারণে রক্তে চিনির পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া একটি ক্রনিক রোগ। বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা ৫০ কোটিরও বেশি। ডায়াবেটিস সারা বিশ্বে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে ২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ গৃহীত একটি প্রস্তাবে প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখকে " বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস"কে "জাতিসংঘ ডায়াবেটিস মেলিশাস রোগ দিবস" পরিণত করার কথা জানানো হয়। এতে পুরোপুরিভাবে প্রতিফলিত হয় যে , জাতিসংঘ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ রোগ প্রতিরোধের ওপর বিভিন্ন দেশের সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও আস্থাবান । জাতিসংঘ ডায়াবেটিস মেলিশাস দিবস উপলক্ষ্যে চীনে ব্যাপক প্রচার ও শিক্ষামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়।

    গত ১৪ নভেম্বর ছিলো জাতিসংঘের প্রথম ডায়াবেটিস দিবস। সেদিন পেইচিংয়ে যথাযোগ মর্যাদার সঙ্গে নানা ধরণের কর্মসূচীও তত্পরতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বের ডায়াবেটিস বিষয়ক তহবিলের চেয়ারম্যান আনিল কাপুর তার ভাষণে বলেছেন, ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি এবং এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার দিন দিন বাড়তে থাকায় ডায়াবেটিস রোগ এর মধ্যেই নিছক একটি স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এ রোগের ফলে সংঘটিত অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যার ওপর গুরুত্ব আরোপ করাও এখন বেশ জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন:"ডায়াবেটিস যেমন আমাদের শরীরের জন্য বিপর্যয় এনে দিয়েছে , তেমনি আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকিও পোহাতে হচ্ছে। চীনের উদাহরণ দিয়ে দেখা যায় যে, এখন ডায়াবেটিস নিবারণ ও নিয়ন্ত্রণে প্রতিবছর চীনের বরাদ্দ প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পাশাপাশি এ সব রোগী স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না বলে সংঘটিত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।"

    জাতিসংঘের প্রথম ডায়াবেটিস দিবসের প্রধান প্রতিপাদ্য হচ্ছে "ডায়াবেটিস রোগ ও শিশু"। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রোগ নিবারণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক খোং লিং জি বলেন, প্রতিবছর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়লেও খুবই কম মানুষ মনে করেন যে শিশুদের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। চীন হচ্ছে ৩০ কোটিরও বেশি শিশু অধ্যূষিত একটি বড় দেশ। এখন চীনের শহরের শিশুদের মোটা হবার হার ক্রমাগত বাড়চ্ছে । এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের জন্য জাতিসংঘের এবারের প্রধান প্রতিপাদ্যের আরো বেশি গভীর তাত্পর্য রয়েছে। তিনি বলেন: " শিশু ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা অনেক উদ্বিগ্ন। চীনে শহুরে শিশুদের মোটা হয়ে যাবার হার ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । মোটার সঙ্গে ডায়াবেটিসের খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। "